শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে নিয়ে নতুন গুঞ্জন

রেড নোটিসে জিসান আহমেদ
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০১৯ | ২৩:৫৬
নতুন গুঞ্জন শুরু হয়েছে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদকে নিয়ে। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে তাকে গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করেছিল পুলিশ সদর দপ্তর। তবে একাধিক সূত্রের দাবি ছিল, গ্রেফতার ব্যক্তি জিসান নয়। এবার শোনা যাচ্ছে, জিসান সন্দেহে গ্রেফতার ওই ব্যক্তির অপরাধ-সম্পৃক্ততা নিশ্চিত না হওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। আর 'আসল' জিসান রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা সমকালকে বলেন, 'শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে গ্রেফতারের খবর বাংলাদেশকে জানায় দুবাইয়ের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। তারা নানারকম তথ্য-উপাত্ত নিয়ে যাচাই-বাছাই করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে। এ পর্যন্ত সব তথ্য পুলিশের কাছে রয়েছে। এরপর আর কিছু ঘটেছে কি না তা জানা নেই।'
ঢাকার মালিবাগে ডিবির দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যাসহ অসংখ্য অপরাধে অভিযুক্ত জিসানকে গ্রেফতারের খবর ২ অক্টোবর বাংলাদেশকে জানায় দুবাই এনসিবি। আরও কিছু যাচাইয়ের পর ৩ অক্টোবর বাংলাদেশ পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। পরদিন আনুষ্ঠানিকভাবে তা গণমাধ্যমকে জানায় পুলিশ সদর দপ্তর।
এদিকে জিসানকে গ্রেফতার নিয়ে বিভ্রান্তির তথ্যও ছড়ায় একইসঙ্গে। একাধিক সূত্রের ভাষ্য, গ্রেফতার ব্যক্তি জিসান নয়, তার ভাই শামীম। পুলিশি তৎপরতার ব্যাপারে জানতে পেরে জিসান আগেই আত্মগোপনে চলে যায়। অবশ্য গ্রেফতার ব্যক্তি যে শামীম তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতারের দুই মাস আগে থেকেই দুবাই পুলিশের নজরদারিতে ছিল জিসান। এ সময়ে দুই দেশের পুলিশ নানারকম হালনাগাদ তথ্য ও ছবি আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার পরই গ্রেফতার করা হয় তাকে।
জিসানকে গ্রেফতারের তথ্য গণমাধ্যমে আসার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আর পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, বহিঃসমর্পণ চুক্তি না থাকায় জিসানকে দুবাই থেকে ফেরাতে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হবে। সমঝোতামূলক আইনি চুক্তির মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে আধিপত্য ধরে রাখতে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, ঠিকাদার জি কে শামীমসহ তিনজনকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল জিসান। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী অস্ত্রও সরবরাহ করা হয় তার সহযোগীদের। তবে হত্যার আগেই জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে খিলগাঁও থেকে গ্রেফতার করা হয় তাদের। তারা হলো খান মোহাম্মদ ফয়সাল, জিয়াউল আবেদীন ওরফে জুয়েল ও তার ভাই জাহেদ আল আবেদীন ওরফে রুবেল। এ সময় তাদের কাছে পাওয়া যায় একটি এ কে-২২ রাইফেল, চারটি পিস্তল, একটি রিভলবার ও ৪৭ রাউন্ড গুলি। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জিসানের নির্দেশে তিনজনকে হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। পরে জুয়েল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এর সূত্র ধরে ডিবিসহ অন্যান্য সংস্থা তদন্ত করে গুরুত্বপূর্ণ আরও তথ্য পায়।