ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

নতুন কলেজে আর অনার্স নয়: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

নতুন কলেজে আর অনার্স নয়: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

ছবি: সংগৃহীত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২২ | ১২:৪৫ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ | ১২:৪৫

নতুন করে অনার্সের পরিসর আর বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। 

শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আপতত অনার্সের পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। নতুন কলেজ অন্তর্ভুক্তিতে আমরা যেতেই চাই না। গত দুই বছরে আমরা কোনও অনার্স দেইনি। যদি শুধুমাত্র যুগোপযোগী, যুৎসই প্রয়োজনীয় বিষয় বোধ করি, তাহলে ভবিষ্যতে নতুন বিষয় খুলবো। তবে যেসব কলেজে অনার্স চালু আছে, যাচাই-বাছাই করে সেখানে পড়ানো যাবে কিনা, নিশ্চিত হয়ে নতুন করে বিষয় অধিভুক্তি দেওয়া হবে। গত দুই বছরে একটি কলেজেও অনার্সের অন্তর্ভুক্তি পায়নি।’

উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, ‘ডিগ্রি পর্যায়ে প্রায় চার লাখ আসন কমিয়ে দিয়েছি। এরপর প্রশ্ন হলো— অনার্সে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন আমরা ৫ জনে আনতে পারি, কিন্তু এমন কোনও পলিসি গ্রহণ করবো কি-না যে, কম খরচে যেখানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ন্যূনতম সুযোগ পায়, তাকে আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঠেলে দেবো কিনা? আসন কমিয়ে ৫টি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া এক দিনের বিষয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা এমন কোনও বিকল্প গড়ে তুলেছি, আমরা কারিগরি বা অন্য কোনও ব্যবস্থা তৈরি করতে পেরছি যে, উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হতে পারবে?’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনার্স বা ডিগ্রিতে না নিয়ে আমরা ধীরে ধীরে ডিপ্লোমা ও সর্ট কোর্সগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেতে চাচ্ছি। সেটাও রাতারাতি সম্ভব হবে না। ডিগ্রি, অনার্স ও মাস্টার্সে সর্ট কোর্সগুলোকে এমবেডেড করবো। আইসিটি, ল্যাংগুয়েজ, এন্ট্রাপ্রেনারশিপ কম্পলসারি করবো। আমরা একসপ্তাহের মধ্যেই করতে পারি, কিন্তু শিক্ষক কই? তাই এখনই কলেজে কলেজে দিচ্ছি না। কেন্দ্রীয়ভাবে শুরু করবো।’

দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে কেন শিক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যাবে না, এমন প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। একই সঙ্গে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে মাদ্রাসার বেলায় যতটা ইনক্লুসিভ (অন্তর্ভুক্তিমূলক), ইংরেজি মাধ্যমের বেলায় ততটা নই বলেও মনে করেন তিনি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প কী তৈরি করেছি? আমাদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে। লাখ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক পাস করে, তাদের জন্য বিকল্প কী তৈরি করতে পেরেছি? আমরা কারিগরি শিক্ষার কথা বহুদিন থেকে শুনি। আসলে এসব শিক্ষার্থীদের জন্য কারিগরিতে সেই ব্যবস্থা তৈরি করতে পেরেছি? আমরা বেসরকারি বিশ্বদ্যিালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে না, তখন এই শিক্ষার্থীদের জন্য একমাত্র বিকল্প প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রশ্ন করেন, ‘ইংরেজি মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপশন তৈরি করছি, নাকি দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য বাধ্য করছি? আমার শিক্ষা ব্যবস্থায় সেই পরিকল্পনা কই? যেখানে শহরের মধ্যবিত্ত যেসব শিক্ষার্থী ইংরেজি মাধ্যমে পড়ে, তারা কি আমাদের সমাজের শিক্ষার্থী না? আমরা মাদ্রাসার বেলায় যতটা, ইংরেজি মাধ্যমের বেলায় ততটা কি ইনক্লুসিভ? তা নাহলে আমাদের পলিসিতে ভুল আছে। আমরা কি সেই প্রশ্ন করি? কেনও আমরা এতোগুলো ভর্তি পরীক্ষা নেই? বরং বলা হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কেনও ভর্তি পরীক্ষা কেনও আগে নেয়?’

ভর্তি বাতিল করে কোনও শিক্ষার্থী অন্য প্রতিষ্ঠানে যেতে চাইলে কোনোভাবেই তাকে আটকানো যাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান।

আরও পড়ুন

×