নির্বিঘ্নে মাদক কারবার চালাতে কনস্টেবল বাদলকে হত্যা: র্যাব

সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। ছবি - সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৩ | ১৫:১৮ | আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ | ১৫:২৭
রাজধানীর মতিঝিলে ১০ বছর আগে পুলিশ কনস্টেবল বাদল মিয়া হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি রিপন নাথ ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। র্যাব বলছে, নির্বিঘ্নে মাদক কারবার চালাতে ওই পুলিশ সদস্যকে খুন করে রিপন ও তার সহোযাগীরা।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মতিঝিলের টিএন্ডটি কলোনি এলাকা থেকে এক যুবকের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে জানা যায়, তিনি পুলিশ কনস্টেবল বাদল মিয়া। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা মামলা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল রিপনকে প্রধান অভিযুক্ত করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। আদালত এ মামলায় রিপনসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
রিপনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর মতিঝিলের এজিবি কলোনি এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় রিপনের অন্যতম সহযোগী তার মাসতুতো (খালাতো) ভাই গোপাল চন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর কিছুদিন পর রিপন ও তার এক সহযোগী মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়। দুই মাস পর কারাগার থেকে বেরিয়ে তারা জানতে পারে, অভিযানকারী দলটির সদস্য কনস্টেবল বাদল মতিঝিল এলাকায় বাস করেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তাদের গ্রেপ্তারের পেছনে এই পুলিশ সদস্যের ভূমিকা আছে বলে তারা সন্দেহ করে। এ কারণে মাদক কারবার নির্বিঘ্নে চালাতে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে রিপন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সে ২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে রেন্ট-এ-কার থেকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া নেয়। নিজে গাড়ি চালিয়ে সহযোগীদের নিয়ে যায় শাহবাগ এলাকায়। এরপর কৌশলে বাদলকে ডেকে এনে প্রাইভেটকারে ওঠায়। তাঁকে নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকে, সেইসঙ্গে চালানো হয় নির্যাতন। একপর্যায়ে তারা মতিঝিল কালভার্ট-সংলগ্ন নির্জন এলাকায় গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে বাদলকে হত্যা করে। পরে লাশ মতিঝিল টিএন্ডটি কলোনি এলাকায় ফেলে পালিয়ে যায়।
র্যাবের মুখপাত্র জানান, ঘটনার পর রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে বিচার চলাকালে সে জামিনে বেরিয়ে টাঙ্গাইলে গিয়ে আত্মগোপন করে। এ সময় সে গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে এবং কিছুদিন পরপর বাসা বদলায়। মাঝেমধ্যে গোপনে পরিবারের সঙ্গে দেখা করত। এই অবস্থায় সে দিনের বেলা টাঙ্গাইল-রংপুর রুটে বাসের হেলপার হিসেবে কাজ করত। আর রাতে চালাত মাদক কারবার।
/এসআর/
- বিষয় :
- কনস্টেবল বাদল হত্যা
- পুলিশ হত্যা