নিজের সন্তান আইসিইউতে থাকায় অন্যের নবজাতক চুরি করেন নুসরাত

উদ্ধারের পর মায়ের কোলে শিশু আব্দুল্লাহ - সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২:১৪ | আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২:৫৭
রোববার মিন্টোরোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় পুলিশ।
এর আগে চুরির দু'দিন পর শনিবার রাতে শিশুটিকে উদ্ধার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। এ সময় নুসরাতসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অপর তিনজন হলেন– নুসরাতের স্বামী নাজমুল হোসেন তুষার, শাশুড়ি নাহার বেগম ও ননদ নাদিরা ওরফে খুরশিদা।
নুসরাত অসুস্থ থাকায় পুলিশ পাহাড়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। অন্য তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে চুরি হওয়া নবজাতক আব্দুল্লাহকে উদ্ধারের পর তার মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। চুরি হওয়া সন্তানকে ফিরে পেয়েও যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না হিরন মিয়া-শাহিনা আক্তার দম্পতির।
শাহিনার ভাষ্য, ‘চুরি হওয়ার পরের দিনও যখন ছেলেকে পাওয়া যায়নি, তখন হাসপাতালের অনেকেই বলাবলি করছিল চুরি হওয়া সন্তান ফিরে পাওয়া যায় না। এ জন্য সন্তানকে ফিরে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চিত ছিলাম। এখন সন্তান আমার কোলে, এটা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। আমরা সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’
হিরন মিয়া-শাহিনা আক্তারের বাসা রাজধানীর রূপনগর এলাকায়। গত ২৯ আগস্ট ঢামেক হাসপাতালে শাহিনা পুত্রসন্তান প্রসব করেন। তার নাম রাখা হয় আব্দুল্লাহ। জন্মের পর নবজাতক মায়ের বুকের দুধ পাচ্ছিল না।
এর আগে ২৬ আগস্ট কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা নুসরাত একই হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেন। তার সন্তান অসুস্থ হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। নুসরাত ও শাহিনা একই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। নিজের সন্তান আইসিইউতে থাকায় শাহিনার সন্তানকে দুগ্ধদান করাতেন নুসরাত। ৩ দিন ধরে নুসরাত ওই নবজাতককে দুগ্ধদান করিয়ে আসছিলেন।
এরই মধ্যে আইসিইউতে থাকা নিজের শিশু সন্তানের বেঁচে ফেরার নিশ্চয়তা না থাকায় ৩১ আগস্ট হাসপাতাল থেকে শাহিনার সন্তানকে চুরি করে নিয়ে যান নুসরাত। চুরি করার আগেও শিশুটিকে দুগ্ধপান করান তিনি।
পুলিশ জানায়, চুরির পর শিশুটিকে আজিমপুর এলাকায় স্বামী নাজমুল হোসেন তুষারের হাতে তুলে দিয়ে হাসপাতালে ফিরে শুয়ে থাকেন নুসরাত। পরে তুষার শিশুটিকে কামরাঙ্গীরচরের বাসায় নিয়ে যান।
এদিকে সন্তান চুরি হওয়ার পর থেকেই নুসরাতকে সন্দেহ করে আসছিলেন শাহিনা। পুলিশকে তিনি সন্দেহের কথাও জানিয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, চুরির বিষয়টি জানার পর হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাতে দেখা যায়, নুসরাত ওই নবজাতকটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। পরে তাকে জিজ্ঞাবাদে চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি আরও বলেন, নিজের সন্তান জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকায় ওই নারী নবজাতককে চুরি করেন বলে জানিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
- বিষয় :
- শিশু
- নবজাতক
- আইসিইউ
- পুলিশ
- নবজাতক চুরি