ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

বিএনপির সর্বোচ্চ মহল থেকে জাপাকে নির্বাচন বর্জনের সুপারিশ করা হয়েছিল: চুন্নু

বিএনপির সর্বোচ্চ মহল থেকে জাপাকে নির্বাচন বর্জনের সুপারিশ করা হয়েছিল: চুন্নু

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২১:১৮ | আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২১:৩১

জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু জানিয়েছেন, বিএনপির সর্বোচ্চ মহল থেকে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন বর্জনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। 

বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল এমন মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, অনেক বুদ্ধিজীবী বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে এসেছে আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে। 

যে বুদ্ধিজীবীরা খারাপ ভাষায় এসব কথা বলেন তাদেরকে উদ্দেশ্য করে চুন্নু বলেন, ‌‘বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দালাল। আমার প্রশ্ন হল বিএনপিতো নির্বাচনের আগে সর্বোচ্চ মহল থেকে আমাকে ও আমার দলের নেতাকে সুপারিশ করেছে নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য। নির্বাচনে না আসলে বিএনপি বলে ভাল। আসলে বলে খারাপ।

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘এই নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন সারা দেশে। আমরাও নির্বাচন করব কি না, সে অবস্থায় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করেছি। এই নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন। বিশেষ করে বিএনপিসহ অনেকগুলো দল নির্বাচনে আসেনি। আবার আওয়ামী লীগ, আমরাসহ অনেক দল নির্বাচনে এসেছিল। নির্বাচনে দেশের মানুষের মধ্যে অনেক কথা। আমাদের অনেকে বলছিলেন নির্বাচনে না আসার জন্য।’

মুজিবুল হক বলেন, ‘নির্বাচনে আসলাম, কী হল, নাইবা বললাম। অভিজ্ঞতাতো হলো। একটা কথা বলতে পারি, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসায় সাংবিধানিক ধারাকে আমরা অক্ষুণ্ন রাখতে পেরেছি। নির্বাচনে এসে মনে হয় আমরা ভুল করিনি।’

চলমান নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান পদ্ধতিতে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আনুপাতিক হারে নির্বাচন করা হলে এটি সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণে সরকারের প্রশংসাসূচক বিষয়গুলো এসেছে। গরিব সাধারণ মানুষ যে মূল্যবৃদ্ধির কারণে অসহনীয় জীবন-যাপন করছে, দুর্নীতি রোধ, টাকা পাচার বন্ধ, অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণ, সুশাসন কায়েম, নির্বাচনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে কী করা যায়, এসব বিষয়ে ভাষণে কিছু দেখা যায়নি।

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ আরও বলেন, দুই বছর আগে এক কেজি আটার দাম ছিল ৬০ টাকা, এখন ৬৫ টাকা। চিনি ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, এখন ১২০–১৩০ টাকা। চাল, ডাল, শাক সবজিসহ সবকিছুর দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। 

সারা দেশে পরিবহনে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে চুন্নু বলেন, ঘাটেঘাটে চাঁদা দিতে হয়, অথচ কৃষক মূল্য পান না। শহরে এসে দাম বেড়ে যায়। দাম পায় মধ্যসত্ত্বভোগী ও চাঁদাবাজরা।

বড় বড় প্রকল্পে বিদেশি ঋণ নেওয়ার কথা তুলে ধরে চুন্নু বলেন, ঋণের টাকায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে কিন্তু কাজে লাগানো যাচ্ছে না। বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডলার সংকট, রেমিট্যান্স সংকট, টাকা পাচার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। এসব কারণে দেশ অর্থনৈতিক সংকটে আছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন না হওয়া গেলে, টাকা পাচার ও ভুয়া ঋণ বন্ধ করা না গেলে, সুশাসন চালু না হলে, শুধু রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজির জন্য বড় বড় প্রকল্প নেওয়া হলে সংকট থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে না।

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, অবৈধভাবে পাচার করা টাকা ৮০ শতাংশ ব্যাংকের মাধ্যমে পাচার হয়। বিএফআইইউ বলেছে, ব্যাংক না চাইলে টাকা পাচার সম্ভব নয়। খেলাপিঋণের বড় অংশই কুঋণে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, পিকে হালদারসহ অনেক ব্যক্তি হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে নিয়েছেন ব্যাংক থেকে। কেউ দেখার নেই।

আরও পড়ুন

×