বিশেষ লেখা
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর থেকে বিরাট কোনো প্রত্যাশা নেই
চীনের প্রভাব বাংলাদেশে বাড়ুক সেটা কখনোই চায় না ভারত

মো. তৌহিদ হোসেন
মো. তৌহিদ হোসেন
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪ | ০০:৪৭ | আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ | ১০:২৭
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর থেকে বিরাট কোনো প্রত্যাশা নেই। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং ভারতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার গত ১০ বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। আওয়ামী লীগ চতুর্থ মেয়াদে আর বিজেপি তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেছে। দুটি সরকারই বলে আসছে, খুবই ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ফলে এ সম্পর্ক পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা দেখি না।
দুই দেশের সম্পর্ক যেভাবে চলছে, সেভাবেই চলবে। ভারতের পক্ষ থেকে যে উদ্বেগগুলো ছিল, তার সব দূর করেছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে উদ্বেগগুলো ছিল, যেমন তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি বা সীমান্ত হত্যার মতো বিষয়গুলো আগের মতোই রয়েছে।
তবে সীমান্ত হত্যার ক্ষেত্রে একটা পরিবর্তন হয়েছে। আগে সীমান্তে কোনো বাংলাদেশিকে গুলি করে মারা হলে তার প্রতিবাদ হতো। এখন আর সেই প্রতিবাদ হয় না। ভারতের পক্ষ থেকে একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করানো হয়েছে যে, সীমান্তে অপরাধ হচ্ছে বলে অপরাধীরা মারা পড়ছে।
দুই পরম বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে যেভাবে সীমান্ত হত্যা চলছে, তা নেতৃত্ব কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন, জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। পৃথিবীর এমন কোনো সীমান্ত নেই, যেখানে অপরাধ হয় না। আর এমন কোনো সীমান্ত নেই যেখানে এভাবে গুলি করে মানুষ মেরে ফেলা হয়।
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিতে যখন ভারতকে রাজি করানো যাচ্ছে না, তখন বিকল্প ব্যবস্থায় পানি ধরে রাখতে বাংলাদেশ একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করল। এতে চীনের অর্থায়ন খোঁজা হলো।
তবে ভারত এ প্রকল্পে অর্থায়ন করা নিয়ে এক অদ্ভুত প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছে। এতে তিস্তা প্রকল্পটি ঝুলে যাবে। কারণ এ প্রকল্পে যে পরিমাণ অর্থায়ন প্রয়োজন হবে, তার সংস্থান ভারত করতে পারবে বলে মনে হয় না। আর ভারতের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ কিছু করতে পারবে বলেও মনে হয় না।
প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের পরপরই চীনে যাবেন। ফলে তাঁর ভারত সফরে চীন নিয়ে জানতে চাইবে। চীনের প্রভাব বাংলাদেশে বাড়ুক সেটা কখনোই চায় না ভারত। আবার সফরের সময় চীন থেকে আমাদের ঋণ নেওয়ার মতো বিষয় রয়েছে। ফলে বিষয়গুলো শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে।
লেখক : সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত