শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী
স্মৃতিপদক পাচ্ছেন অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম ও এলকপ

অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম- সংগৃহীত ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪ | ১৯:৩৩
শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক পাচ্ছেন সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী নাগরিক আন্দোলনের পুরোগামী নেতা অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ভূমিকা রাখায় সংগঠন হিসেবে ‘এম্পাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপল (এলকপ)’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রথম এবং একমাত্র নারী ভিপি।
আগামীকাল বুধবার বিকেল তিনটায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এই স্মৃতিপদক তুলে দেওয়া হবে।
আগামীকাল শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি স্মৃতিপদক প্রদানের ছাড়াও বিশেষ স্মরণানুষ্ঠান আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করবেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। নির্মূল কমিটির সভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে থাকছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সংগঠনের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, এলকপের সভাপতি ড. মিজানুর রহমান। সঞ্চালনা করবেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসীফ মুনীর তন্ময়।
এর আগে সকাল ৮টায় জাহানারা ইমামের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন নির্মুল কমিটির নেতৃবৃন্দ। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরও পৃথক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। বুধবার বিকেল ৫টায় সুফিয়া কামাল ও জাহানারা ইমাম স্মরণে জাদুঘর মিলনায়তনে স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বক্তব্য রাখবেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ। অনুষ্ঠানে সুফিয়া কামাল রচিত ‘মোর যাদুদের সমাধি’ পরে কাব্যগ্রন্থের (গ্রন্থিত) কবিতার বৃন্দআবৃত্তি পরিবেশন করবে ‘স্বনন ঢাকা’, জাহানারা ইমাম রচিত বিদায় দে মা ঘুরে আসি (একাত্তরের দিনগুলি’র কিশোর সংস্করণ)-এর শ্রুতি উপস্থাপন করবে ‘মুক্তবাক’, সুফিয়া কামাল ও জাহানারা ইমামের লেখা চিঠি পাঠ করবেন আবৃত্তিশিল্পী অনন্যা লাবনী পুতুল ও তামান্না সারোয়ার নীপা, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করবে ‘ব্রাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজ’।
শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ১৯২৯ সালের ৩ মে অবিভক্ত ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম জুড়ূ। জাহানারা ইমামের বাবা সৈয়দ আবদুল আলী ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্টেট। মা সৈয়দা হামিদা বেগম।
জাহানারা ইমাম ছিলেন ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে তার সন্তান রুমী আর ফেরেননি; স্বামীও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে শহীদ হন। এর পরও তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন, পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। দেশ স্বাধীন হলে রুমীর বন্ধুরা জাহানারা ইমামকে সব মুক্তিযোদ্ধার মা হিসেবে বরণ করে নেন। সারাদেশের সব মুক্তিযোদ্ধার জননী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে জাহানারা ইমামের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। তার নেতৃত্বে ১৯৯২ সালের ২৬ ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গোলাম আযমসহ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের প্রতীকী গণআদালতে ফাসির রায় কার্যকর করা হয়। জাহানারা ইমামের লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দলিল। তিনি স্বাধীনতা পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রোকেয়া পদক, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।
- বিষয় :
- জাহানারা ইমাম
- মৃত্যুবার্ষিকী
- স্মৃতিপদক