ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বৈঠক

কর্মবিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত রোববার

কর্মবিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত রোববার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষক নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষ প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪ | ১৮:৫৫ | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪ | ২২:২৫

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক ‘সন্তোষজনক’ হলেও কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেননি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তারা রোববার জরুরি সভা ডেকেছেন। সেতুমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ বছর নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পেনশন কর্মসূচির আওতায় আসবেন আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালে। 

‘প্রত্যয়’ চালুর প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার দাবিতে ১ জুলাই থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন দেশের ৪০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের বৈঠকটি হয় শনিবার। পরে শিক্ষক নেতারা বলেন, বৈঠকে ‘সন্তোষজনক’ আলোচনা হয়েছে। 

এর পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন’ সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তিন দফা দাবিতে চলমান শিক্ষক আন্দোলন মুলতবি করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বরং পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অপরিবর্তিত রয়েছে। রোববার ফেডারেশনের জরুরি সভায় পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’

বৈঠক শেষে অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের দাবি প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তিন দফা দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করব। সেখানে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ 
সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা কেন– এমন প্রশ্নে অধ্যাপক নিজামুল হক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক একজন জাতীয় নেতা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি আমাদের সঙ্গে বসেছেন।’

সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে।  বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। বৈঠকে আরও ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাঁপা। 

বৈঠকে শেষে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে একসঙ্গে পেনশন স্কিমে আসবেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের পরিবর্তে আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালের পহেলা জুলাই থেকে তারা পেনশন স্কিমের আওতায় আসবেন।’ এ সময় চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহারে শিক্ষক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবার জন্য পেনশন কর্মসূচিতে শিক্ষকদের বিষয়টি নিয়ে যে তথ্য গেছে, সেটি একটি মিসটেক (ভুল)। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ সালের পহেলা জুলাই থেকে যোগ দেওয়ার খবর সঠিক নয়। শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তাসহ সবাই ২০২৫ সালের পহেলা জুলাই পেনশন কর্মসূচিতে আসবেন।’

অন্যদিকে, বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির মহাসচিব আব্দুল কাদের (কাজী মনির) বলেছেন, ‘শিক্ষকদের সঙ্গে সরকারের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন। এর পর আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।’ তবে শিক্ষকদের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গেও সরকারকে বসতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল মোতালেব সমকালকে বলেন, ‘আমরা এখনও সরকারের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস পাইনি। সরকার একজনকে সুবিধা দেবে আরেকজনকে দেবে না, এটা হয় না। আমাদের কর্মসূচি চলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের ক্ষেত্রেও ২০২৫ সালে প্রত্যয় স্কিম বাস্তবায়নের কথা বলে, তাহলে আমরা আন্দোলন স্থগিত করতে পারি।’ 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি হলো, ‘প্রত্যয়’ চালুর প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে (জ্যেষ্ঠ সচিবরা যে ধাপে বেতন পান) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তন। 

আরও পড়ুন

×