ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় অনুসন্ধান-৩

বীরনিবাস বরাদ্দ পেয়েও দুঃখ ঘোচে না মুক্তিযোদ্ধাদের

বীরনিবাস বরাদ্দ পেয়েও দুঃখ ঘোচে না মুক্তিযোদ্ধাদের

কোলাজ

আবু সালেহ রনি

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০১:২৮ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭:৪৩

সুন্দরবন-লাগোয়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা কার্যালয় থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বদিকে নিভৃতপল্লি বড় কুপট। পল্লির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা রাস্তা ধরে একটু এগোতেই দেখা মেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমানের দোচালা ঘর। ৭৫ বছর বয়সী এই বীর মুক্তিযোদ্ধার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে মাসুম বিল্লাহ পল্লির কাছেই নওয়াবেকি বাজারে চা বিক্রি করেন। মাসুমের দুই মেয়ে। একজন স্থানীয় কলেজে অনার্সে পড়েন এবং অন্যজন দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদেরও ঠাঁই দাদার দোচালা ঘরে।

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসে কেমন আছেন– জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সব শ্যাষ হয়ে গেল। ওষুধেই মুক্তিযোদ্ধা ভাতার ১১ হাজার টাকা চইলে যায়। ছেলেটা কিছু করতে পারল না। তার সংসারও আমার ঘরে।’ তিনি জানালেন, ২০২২ সালে সরকার থেকে ঘর পাওয়ার জন্য (বীরনিবাস) আবেদন করেছিলেন। তদন্ত করে তাঁর জমি ঘর নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করা হয়। তালিকায় তাঁর নাম আসে। কিন্তু এখন শুনছেন, তিনি আর ঘরই  পাবেন না। কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই ছেলেকে আলাদা করে দিয়ে তাঁর নিজের নতুন ঘরে আর ওঠা হচ্ছে না।

বীরনিবাস না পেয়ে এমন হতাশা শুধু মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুরের নয়, একই উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ছফেদ আলী গাজীরও। বুড়িগোয়ালিনী বাজার থেকে আড়াই কিলোমিটার এগিয়ে বেড়িবাঁধের দিকে ইটের সলিং রাস্তার ডান পাশে তাঁর দোচালা ঘর। ৭৫ বছর বয়সী এই মুক্তিযোদ্ধা শুধু হতাশ নন, প্রচণ্ড ক্ষুব্ধও। কেন এমন ক্ষোভ– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে ঘর করার জন্য নিজের কোনো জমি-জিরাত ছিল না। জমি থাকলে সরকার ঘর করে দেয়। তাই মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধক রেখে সোনালী ব্যাংক থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১৫ শতক জমি কিনেছি। পরে উপজেলার তালিকায় ঘর করার জন্য নামও ওঠে। সেই ঘর এখনও পাইনি। এখন শুনছি, আর ঘরই পাব না।’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কার্যপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের আবাসনের জন্য ২০২১ সালে ৩০ হাজার বীরনিবাস নির্মাণে প্রকল্প নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ৬ হাজার ৯৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে। কিন্তু গত নভেম্বর পর্যন্ত বীরনিবাস নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ১৩ হাজার ১২৯টি। আরও ৯ হাজার ১০২টি নির্মাণাধীন।

জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ১৪ আগস্ট বীরনিবাস প্রকল্পের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২৬ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, যেসব বীরনিবাসে নির্মাণকাজ চলমান এবং টেন্ডার হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এর সংখ্যা ৯ হাজার ১০২টি। সরকার পরিবর্তনের পর এসব নিবাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের অধিকাংশ লাপাত্তা। কেউ কেউ অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজ বন্ধ রেখেছেন। প্রকল্পের মেয়াদও শেষ পর্যায়ে থাকায় ৭ হাজার ৭২৯টি বীরনিবাসের নির্মাণকাজ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বরাদ্দের তালিকায় থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধারা। উপজেলা প্রশাসন-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো না হলে বীরনিবাস নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সমকালকে বলেন, পরিস্থিতির কারণে সাময়িকভাবে প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। বিশেষ করে যেসব বীরনিবাস নির্মাণের জন্য সরকারের অর্থ ব্যয় হয়েছে অর্থাৎ টেন্ডার হয়েছে এবং নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে চললেও প্রায় আট হাজার বীরনিবাসের নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় এগুলোর ভবিষ্যৎ কী– এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি আমরা দেখব। তালিকাটা যথাযথভাবে হয়েছে কিনা– সেটা দেখা হবে। প্রকৃত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বীরনিবাসের জন্য তালিকাভুক্ত করা না হয়ে থাকলে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে পরিবর্তন করা হবে।

শ্যামনগরে বাড়ির সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ছফেদ আলী গাজী (বায়ে)  শ্যামনগরে বাড়ির সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান (ডানে)	সমকাল

বীরনিবাসের ধরন
বীরনিবাস প্রকল্পের বাড়িগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) তত্ত্বাবধায়নে বরাদ্দ ও নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে বরাদ্দ ১৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। তবে ২০২১ সালে এর জন্য বরাদ্দ ছিল ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এই বাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের জমিতেই নির্মাণ করা হয়। আর যাদের জমি নেই, তাদের ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন থেকে খাসজমিতে বাড়ি নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ৪ ডেসিমাল জমিতে ৭৩২ বর্গফুট আয়তনের একতলা বাড়িতে দুটি বেডরুম, একটি ড্রইং ও একটি ডাইনিং, দুটি বাথরুম এবং একটি বারান্দা রয়েছে। এ ছাড়া একটি উঠান, একটি নলকূপ, গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি পালনের জন্য পৃথক শেড রয়েছে।

বরাদ্দ পেয়েও ভোগান্তি
দেশের ১১টি উপজেলায় গিয়ে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে সমকাল জানতে পেরেছে, উপজেলা প্রশাসন থেকে বীরনিবাসের বাড়ি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার খবরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আবার যারা বাড়ি নির্মাণের পর তা বুঝে পেয়েছেন, তাদেরও অনেকে নানা ধরনের ভোগান্তিতে রয়েছেন। কারণ অনেক ভবনের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে। ফিটিংসের মানও ভালো নয়। আঁকাবাঁকা দেয়াল, ফাটল ধরেছে কোথাও কোথাও। নিম্নমানের ইট এবং প্রয়োজনের চেয়ে কম সিমেন্ট ব্যবহারের বিষয়টি স্পষ্ট। ইট বাঁচাতে গাঁথুনি করা হয়েছে কাত বা লম্বাভাবে। প্রয়োজনীয় গভীরতায় পাইপ না বসানোয় নলকূপে পানি উঠছে না। ঘরের দরজার কাঠ ফেটে প্রায় দুই খণ্ড। অনেক ভবনে নিম্নমানের কাঠ ব্যবহার করায় জানালা খুলে গেছে। ভবন নির্মাণের আগে মাটি পরীক্ষা না করা, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, নতুন মাটি ফেলে ভিত উঁচু করে তার ওপর ভবন করা, ত্রুটিপূর্ণ ডিজাইন ও চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করায় নির্মিত ভবনগুলোতে নানা সমস্যা লেগে থাকে।
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার বাইস সিন্দুর গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা হান্নানুল ইসলাম বাঙ্গালী সমকালকে বলেন, ঠিকাদার দু-তিন বছরেও ঘরের কাজ শেষ করেনি। ফোন দিলে আসে না। শীত নামছে। তাই বাধ্য হয়ে ১০-১৫ দিন আগে নিজের টাকায় কিছু কাজ করে ঘরে উঠেছি। তিনি জানান, বিদ্যুতের ওয়ারিং ও সংযোগ স্থাপন এবং ঘরের দরজা ও জানালা এখনও লাগানো হয়নি। একটি বাথরুমের কাজও অসম্পূর্ণ। পানির জন্য মোটর লাগানো হলেও তাতে পানি আসে না। 

ঠিকাদার লাপাত্তা
উপজেলা প্রশাসন বীরনিবাসের ঘর নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগের পর অনেকেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেননি। আবার ঠিকাদারদের অনেকে সাব-কন্ট্রাকে অন্য কাউকে ঘর নির্মাণের কাজ দিয়েছেন। ফলে অনেক উপজেলায় বীরনিবাস নির্মাণ মানসম্পন্ন হয়নি। আবার গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অনেক ঠিকাদার কাজ শেষ না করে লাপাত্তা। এতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী, চাটখিল, ফরিদপুরের বোয়ালমারীসহ অনেক উপজেলায় বীরনিবাস নির্মাণকাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

সোনাইমুড়ী উপজেলার ভুক্তভোগী ৭৬ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস ছাত্তার সমকালকে বলেন, ‘অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। ৫-৬ মাস আগে ভেতর ও সাইড ওয়াল হয়েছে। কিন্তু ছাদ ঢালাই হয়নি। ঠিকাদার ফোনও ধরেন না। জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রডে জং ধরেছে। বৃষ্টির কারণে দেয়ালগুলো কালো হয়ে গেছে। প্রতি সপ্তাহে উপজেলা অফিসে গেলেও কেউ সমাধান দিচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, এই ইউনিয়নের আরও সাত মুক্তিযোদ্ধার বীরনিবাস নির্মাণকাজ থমকে আছে। ঠিকাদার প্রত্যেকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়েছেন। বিল পেয়ে ফেরত দেওয়ার কথা। তিনি জানান, তাঁর কাছ থেকে ঠিকাদার  ১ লাখ ৫১ হাজার টাকা নিয়েছেন।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ২৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য বীরনিবাস নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। পাঁচজন ঠিকাদারের সবাই লাপাত্তা। কোম্পানীগঞ্জের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নানের ছেলে নজরুল ইসলাম টিপু সমকালকে বলেন, ২০২২ সালে বীরনিবাস নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় ১০ মাস আগে ছাদ ঢালাই দিয়ে ঠিকাদার ঘর ফেলে রেখেছেন। বিদ্যুতের লাইন, পানির লাইন, মোটর স্থাপনসহ অনেক কাজই অসম্পূর্ণ। 

২০২১ সালে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় ৬৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে বীরনিবাস নির্মাণকাজ শুরু হয়। তিন বছরে গুনবহা ও ময়না ইউনিয়নের ১২টি বীরনিবাসের একটিরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। গুনবহা ইউনিয়নের গুনবহা কামার গ্রামের ভুক্তভোগী ৭৬ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নে সাতটি বীরনিবাস নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। ৫-৬ মাস আগে ছাদ ঢালাই দিয়েছেন ঠিকাদার। এর পর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় ঘরের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ইটে লোনা ধরেছে। মেঝের বালুও সরে গেছে। কবে এই ঘর নির্মাণ শেষ হবে, তা ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট কেউ বলতে পারছেন না। তিনি জানান, ঘর নির্মাণ শেষ না হওয়ায় গোয়ালঘরের সঙ্গে একটি ছোট ছাপরায় স্বামী-স্ত্রী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শীতে তাদের কষ্ট আরও তীব্র হবে।

গুরদিয়া গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক মুন্সীর ঘরও বছরের পর বছর ধরে নির্মাণাধীন। ঢাকা সেনানিবাসে কর্মরত তাঁর ছেলে মো. মোস্তাফিজুর রহমান মনির সমকালকে বলেন, বাবা সাড়ে তিন বছর প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় ছিলেন। অনেক দেনা রেখে গেছেন। ঘরের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় মা ও প্রতিবন্ধী এক বোন বাড়িতে কষ্টে আছেন। ঘরের কাজ শেষ করার জন্য ইউএনও অফিসে গেলেও কোনো জবাব মিলছে না।

বরাদ্দের তালিকায় সচ্ছলরাও
রাজশাহী, মাদারীপুর, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেছেন, বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য, চেয়ারম্যান, মেম্বার নানাভাবে বীরনিবাস বরাদ্দের তালিকা প্রণয়নে প্রভাব বিস্তার করতেন। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আগের তালিকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেক উপজেলায় প্রকৃত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে বাদ দিয়ে পছন্দের মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকায় যুক্ত করতেও কেউ কেউ তৎপরতা চালাচ্ছেন। 

সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলীর নামও রয়েছে বীরনিবাস বরাদ্দের তালিকায়। তাঁর নাম ৩৬ নম্বরে। অথচ তাঁর উঠানেই দু্টি একতলা ভবন রয়েছে। আইয়ুর আলীসহ বরাদ্দের জন্য মনোনীত আরও কয়েকজনের বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

জানতে চাইলে আইয়ুব আলী দাবি করেন, তাঁর দুই স্ত্রীর ঘরে তিন ছেলে ও সাত মেয়ে। দুই ছেলে বিয়ের পর পাকা দালান করেছে। তিনি এখনও টিনের ঘরে কষ্টে থাকেন। এ প্রসঙ্গে সীতাকুণ্ডের ইউএনও কে এম রফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, বীরনিবাস বরাদ্দের তালিকাটি কয়েক বছর আগে হয়েছে। তালিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি পর্যালোচনা কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

এ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম সমকালকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু অভিযোগ অমূলক নয়। প্রকৃত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা যাতে বীরনিবাস বরাদ্দ পান, সে লক্ষ্যে তালিকা পর্যালোচনা করে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন

×