ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে: রিজভী

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২১:২০

শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পরই সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এখনো বিভিন্ন উপায়ে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি ও পতিত স্বৈরাচারের দোসররা নানাভাবে কাজ করছে। একটির পর একটি ঘটনা সারাদেশের মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে, আতঙ্কিত করছে।

শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ৮৮ এসএসসি ব্যাচ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সচিবালয় চারদিক বেষ্টিত একটি সরকারি দপ্তর। সেখানে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে অনেক ফাইল। তারমধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত দুর্নীতিবাজ সাবেক কেবিনেট সচিব, যার নামে তদন্ত হচ্ছে তার ফাইলও পুড়ে গেছে। এটা তো রহস্যজনক। আজকে সারাদেশের মানুষ সন্দেহ পোষণ করছে। কারণ বুধবার দেখেছি- শেখ হাসিনার নিকটজনদের বেশ কিছু ফাইল তলব করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। এর ফলেই এই ধরনের ঘটনা সচিবালয়ে ঘটেছে। এসব ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।  

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, তারা স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়নি। বিপ্লবী চেতনা নিয়ে, ছাত্র-জনতার আত্মাহুতির স্পিরিটকে লালন করে প্রশাসন সাজানো হয়নি। সেই শেখ হাসিনার দোসর ও আওয়ামী লীগকে যারা লালন পালন করে সহযোগিতা করেছে, মুজিব কোট পরে দায়িত্ব পালন করেছে, তারাই আজকে সচিবালয়ের বিভিন্ন পদে বসে আছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করবে কেন? তারা গণতন্ত্রের বিপ্লবকে ধারণ করবে কেন? তারা নানা কারসাজির মধ্য দিয়ে এই সরকারকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

রিজভী আরও বলেন, যারা গণতন্ত্র রক্ষার জন্য নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিক আন্দোলন করেছে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে একটা প্রতিপক্ষ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার সেটা বুঝে হোক, কিংবা না বুঝে হোক সেই প্রতিপক্ষ হওয়ার দিকে যাচ্ছে। তাদের বয়ান এমন যে যারা রাজনীতি করে, যারা বড় রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে তাদেরকেই তারা প্রতিপক্ষ তৈরি করছে। কেউ কেউ বলছে- শুধু কি নির্বাচনের জন্যই এই আন্দোলন হয়েছে, এত জীবন দিয়েছে?

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন তো গণতন্ত্রের একটা অনুষঙ্গ। আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার ) একটাকে মাইনাস করছেন কেন? সংস্কার চলবে, নির্বাচন চলবে। আপনাদের স্ব স্ব অভিমতগুলো পেশ করবেন। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ যাকে ভোট দিবে, তারা সেই সংস্কার নিয়ে কাজ করবে। সেটা না করে আপনারা প্রতিপক্ষ বানাচ্ছেন। নির্বাচনকে আলাদা করে সংস্কারকে বড় করে দেখা হচ্ছে। এটা দুরভিসন্ধিমূলক মনে হচ্ছে। শুধু সংস্কারের কথা বললে মঈনুদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের কথা মনে পড়ে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আনুপাতিক হারে নির্বাচন এটা কি কোনো হাওয়াই মিঠাই- এমন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এটা (আনুপাতিক হারে নির্বাচন) কি জনগণ জানে? এ জিনিসটা কি। জনগণ জানে ব্যালট পেপারে তার পছন্দের প্রতীককে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ফেলা। আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কথা বুঝতেই তো বহুদিন চলে যাবে। মানুষের এটা নিয়ে কোনো ধারণাই নেই।

তিনি বলেন, হঠাৎ করেই এ প্রসঙ্গগুলো নিয়ে আসা মানে, যারা সরাসরি জনগণের ভোটকে ভয় পায়, যারা প্রত্যক্ষ ভোটের প্রতিযোগিতায় ভয় পায় এবং যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। তারাই আনুপাতিক হারে ভোটের কথা বলছে। নির্বাচনের কথা বলছে। এটা সাধারণ মানুষের কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।
 

আরও পড়ুন

×