ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

অসীমে শূন্যের ভেতর উড়ে গেলেন কবি দাউদ হায়দার

অসীমে শূন্যের ভেতর উড়ে গেলেন কবি দাউদ হায়দার

কবি দাউদ হায়দার

 সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ০০:৫৬

নির্বাসিত জীবন। ফেরার আকাঙ্ক্ষা ছিল। তা আর হলো না। বিদেশের মাটিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। অসীমে শূন্যের ভেতর উড়ে চলে গেলেন কবি দাউদ হায়দার। স্থানীয় সময় গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় জার্মানির রাজধানী বার্লিনের এক প্রবীণ নিরাময়কেন্দ্রে তাঁর মৃত্যু হয়। কবির অনুজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলার অধ্যাপক আরিফ হায়দার সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দাউদের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, পাবনায়। সত্তর দশকের শুরুতে তাঁর কাব্যপ্রতিভার উন্মেষ। ১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক সংবাদে তাঁর দীর্ঘ কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ প্রকাশিত হয়। এরপর তিনি ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি ও সংগঠনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন।

ঢাকার এক কলেজ শিক্ষকের মামলায় ১১ মার্চ গ্রেপ্তার হন কবি। কিছু দিন পর মুক্ত হন। ১৯৭৪ সালের ২১ মে তাঁকে উড়োজাহাজে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের সহায়তায় পরে জার্মানিতে বসবাস শুরু করেন। দেশভ্রমণে পাসপোর্টের পরিবর্তে জাতিসংঘের বিশেষ ট্র্যাভেল পাস ব্যবহার করতেন। ১৯৮৯ সাল থেকে জার্মানিতে সাংবাদিকতা করতেন। শেষ বয়সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত কবিতা রচনায় ছেদ পড়েনি। সমকালে ‘ইউরোপের চিঠি’ নামে নিয়মিত কলাম লিখতেন।
তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলা ভাষাভাষীরা শোক জানিয়েছেন। আরেক কবি ফরিদ কবির সমকালকে বলেন, ‘ভাবা যায়, কবিতার একটা পঙ্‌ক্তির জন্য তাঁকে মাত্র ২২ বছর বয়সে দেশছাড়া হতে হয়েছিল! বাকি প্রায় ৫১ বছর কাটাতে হয়েছে প্রবাসে নিঃসঙ্গ!’

তাঁর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’, ‘সম্পন্ন মানুষ নই’, ‘যে দেশে সবাই অন্ধ’, ‘সংস অব ডেস্পায়ার’, ‘সমস্ত স্তরে ক্ষতচিহ্ন’ উল্লেখযোগ্য।
কবির অনুজ অধ্যাপক আরিফ হায়দার জানান, রাষ্ট্রীয় প্রতিবন্ধকতার কারণে তাঁর মরদেহ এ দেশে আনা সম্ভব না। বার্লিনে সমাহিত করার আইনি প্রক্রিয়া চলছে। সেটা সম্পন্ন হতে দু-একদিন লাগতে পারে।

আরও পড়ুন

×