ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

সাহারা খাতুন আর নেই

সাহারা খাতুন আর নেই

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২০ | ১২:১১ | আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ | ০৪:৫৬

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন আর নেই। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২৫ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন ঢাকা-১৮ আসনের এই এমপি (ইন্নাল্লিাহি------রাজেউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের সহকারী নাজিমউদ্দিন আবির রাতে সমকালকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তার মরদেহ দেশে আনা ও দাফনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পৃথক শোকবার্তায় মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তারা। 

সাহারা খাতুন জ্বর ও অ্যালার্জির সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় অসুস্থ হয়ে গত ২ জুন ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। কিডনি ও শ্বাসতন্ত্রের জটিলতাও ছিল তার। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৯ জুন তাকে প্রথম দফায় আইসিইউতে নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি হলে ২২ জুন তাকে আইসিইউ থেকে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) স্থানান্তর করা হয়। ২৬ জুন সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবারও আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গত সোমবার থাইল্যান্ডে নেওয়া হয় তাকে। পরে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন: অকৃতদার সাহারা খাতুনের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ ঢাকার কুর্মিটোলায়। শিক্ষাজীবনে তিনি বিএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে গত কয়েক মেয়াদ ধরেই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। এর আগে দলের বিভিন্ন পদে ছিলেন। আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক মহিলা আইনজীবী সমিতি ও আন্তর্জাতিক মহিলা জোটের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। 

অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন গত তিন মেয়াদে ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে স্বরাষ্ট্র এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দেশের প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির বিডিআর বিদ্রোহ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

রাজনৈতিক জীবনে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করেছেন। এর মধ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। সেনাসমর্থিত গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও সাহারা খাতুন রাজনৈতিক অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।

আরও শোক: সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে আরও শোক জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি; আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শম রেজাউল করিম, পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন; শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।

আরও পড়ুন

×