ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

বেফাকে আহমদ শফীর পদে মাহমুদুল হাসান

বেফাকে আহমদ শফীর পদে মাহমুদুল হাসান

বেফাকুল মাদ্রাসিল আরাবিয়ার (বেফাক) সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান। পরবর্তী কাউন্সিল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি-ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২০ | ০৮:২৫ | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ | ০৮:৩১

শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে শূন্য বেফাকুল মাদ্রাসিল আরাবিয়ার (বেফাক) সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান। নূর হোসাইন কাসেমী সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং মাওলানা মাহফুজুল হক মহাসচিব মনোনীত হয়েছেন।

শনিবার বেফাকের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম মজলিসে আমেলার বৈঠকে সদস্যদের ভোটে তাদের মনোনীত করা হয়। তারা তিনজনই পরবর্তী কাউন্সিল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। শুধু বেফাক নয় এর মাধ্যমে ছয়টি আঞ্চলিক শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ে গঠিত কওমী মাদ্রাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা 'আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ'র পরবর্তী নেতৃত্বও মনোনীত হয়েছেন।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বেফাক সভাপতি পদাধিকারবলে জামিয়াতিল কওমিয়ার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। হেফাজত ইসলামের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফী আমৃত্যু চেয়ারম্যান ছিলেন। বেফাকে আহমদ শফীর স্থলাভিষিক্ত হওয়া মাহমুদুল হাসান জামিয়াতিল কওমিয়ারও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়েছেন। তিনি গুলশান আজাদ মসজিদের খতিব এবং যাত্রাবাড়ী জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ারও মুহতামিম। মাহমুদুল হাসান সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তবে তিনি সরকার সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদাধিকারবলে জামিয়াতুল কওমিয়ার কো-চেয়ারম্যান হবেন বেফাকের নতুন সিনিয়র সহ-সভাপতি নূর হোসাইন কাসেমী। তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশের সভাপতি। ধর্মভিত্তিক এ দলটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক। তিনি হেফাজতের নায়েবে আমির এবং ঢাকা মহানগর সভাপতি।

বেফাকের নতুন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাহফুজুল হক ইসলামী ঐক্যজোটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত শায়খুল হাদীস আজিজুল হকের ছেলে। তিনি খেলাফত মজলিশের মহাসচিব। দলটি বিএনপিকে ছেড়ে ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের জোটে গিয়েছিল। এখন কোনো জোটে না থাকলেও সরকারের সঙ্গে 'সুসম্পর্ক' রয়েছে বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে। মাহফুজুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার অধ্যক্ষ।

আহমদ শফীর মৃত্যুতে সভাপতি পদ শূন্য হলেও বেফকের মহাসচিব পদ শূন্য হয় আব্দুল কুদ্দুসের পদত্যাগে। তিনি গত ২৩ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন। এর আগে গত ৩০ নভেম্বর মাওলানা আশরাফ আলীর মৃত্যুতে শূন্য হয় সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ। সারাদেশে প্রায় ২০ হাজার কওমী মাদ্রাসার ১৩ হাজারের পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে বেফাক। শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১৮ লাখ। আহমদ শফীর পর কে বেফাককে নেতৃত্ব দেবেন তা নিয়ে জোর আলোচনা ছিল। আলোচনায় ছিলেন নূর হোসেনই কাসেমী ও মাহফুজুল হক। তবে মজলিশে আমেলার সদস্যরা গোপন ভোটে বেছে নেন মাহমুদুল হাসানকে। এরপর নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির প্রস্তাবে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মাওলানা কাসেমীকে মনোনীত হন। মাহফুজুল হক বলেছেন, যে দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়েছে তা সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করবেন। 

বেফাকের অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন পরিচালনা করে তিন সহ-সভাপতির সমন্বয়ে গঠিত কমিশন। তারা হলেন-নূরুল ইসলাম জিহাদী, নূরুল ইসলাম ওলিপুরী এবং জাফর আহমদ। ভোটের আগে মজলিশে আমেলার প্রথম অধিবেশনে আহমদ শফীর রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। বিদায়ী মহাসচিব আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে মজলিশে আমেলার ১৫৭ সদস্যের অধিকাংশ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

×