ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

তাজরীন ট্র্যাজেডির আট বছর

শ্রমিকদের ৩ দফা দাবির আন্দোলনে পুলিশি বাধা

শ্রমিকদের ৩ দফা দাবির আন্দোলনে পুলিশি বাধা

গণভবনে যেতে চাইলে পুলিশ আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাধা দেয়- সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২০ | ১০:২২

আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশন নামে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণ করেছেন তাদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার ছিল ওই ট্র্যাজেডির অষ্টম বর্ষ। এ উপলক্ষে সকালে তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা তিন দফা দাবি নিয়ে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে গণভবনে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

তাজরীনের সাবেক শ্রমিকরা এসব দাবি পূরণে দুই মাসের বেশি সময় ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন। তারা সুচিকিৎসা, এককালীন ক্ষতিপূরণ ও বাসস্থানের সুব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছেন। শ্রমিকরা দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গণভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টাকালে পুলিশ বাধা দিলে তারা সেখানে শুয়ে পড়েন। এ সময় শ্রমিকরা দাবি-দাওয়া নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

তাজরীনের আহত শ্রমিক রেহানা আক্তার বলেন, তাজরীনের আগুনে তার পরিবারের চার সদস্য মারা গেছেন। তিনিও সেখানে কাজ করতেন। ভবন থেকে লাফ দিয়ে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। কথা বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জরিনা নামে এক শ্রমিক বলেন, 'আমি আমার দুই সন্তানকে নিয়ে দুই মাসের বেশি সময় ধরে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছি। তাজরীনে আগুন লাগার সময় আমি তিন তলা থেকে লাফ দিই। আশা ছিল, আমি মরে গেলেও আমার পরিবার লাশ খুঁজে পাবে। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলে তো আর কিছু পাবে না। এখন পা ভেঙে পঙ্গু হয়ে বেঁচে আছি।'

এদিন বিভিন্ন সংগঠন নিহতদের কবরে মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। দিনের প্রথম প্রহরে কারখানার ফটকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন নিহতদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নিহতদের কবরগুলো কালো ব্যানার ও ফুল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জুরাইন কবরস্থানে আসেন বিভিন্ন সংগঠন ও পোশাক কারখানার নেতাকর্মীরা।

কিছু সংগঠন মোমবাতি জ্বালিয়ে কারখানার নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেছে। এ সময় অনেক স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিহতদের আত্মার মাগফিরাতে দোয়া করা হয়। ২০১২ সালের এই দিনে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডে ১১৭ জন শ্রমিক নিহত হন। আহত হন দুই শতাধিক। অগ্নিকাণ্ডে দেশের পোশাক শিল্পে এটিই সর্বোচ্চ হতাহতের ঘটনা।

আরও পড়ুন

×