ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

খোলা বাজারে কেনা যাবে গ্যাসের প্রিইপেইড মিটার

খোলা বাজারে কেনা যাবে গ্যাসের প্রিইপেইড মিটার

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ | ০৭:৩১ | আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ | ১০:৩১

এখন থেকে আবাসিক গ্রাহক নিজেই গ্যাস ব্যবহারের প্রিপেইড মিটার কিনতে ও স্থাপন করতে পারবেন। এ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করেছে জ্বালানি বিভাগ।  এর মাধ্যমে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের দায়িত্ব গ্রাহকের কাঁধে চাপল। যদিও এখনও বাজারে গ্যাসের কোনো প্রিপেইড মিটার পাওয়া যায় না। 

সারাদেশে গৃহস্থালিতে গ্যাস সংযোগের সংখ্যা ৪৩ লাখ। গত ১৪ বছরে দু'টি বিতরণ কোম্পানি দুই লাখ ৭৫ হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপন করেছে। বিতরণ কোম্পানির এই ব্যর্থতার মধ্যেই খোলাবাজার থেকে প্রিপেইড মিটার ক্রয় এবং সংযুক্ত করার নতুন নীতিমালা জারি হয়েছে৷

সোমবার বিকেলে হাইড্রোকার্বন ইউনিট রাজধানীর কাওরান বাজারে পেট্রো সেন্টারে গ্যাসে প্রিপেইড মিটার স্থাপন নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে। ওই সেমিনারে বলা হয়, উদ্যোক্তরা মিটার আমদানি করে বা তৈরি করে খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। আগে শুধু বিতরণ কোম্পানিগুলোই গ্যাসের প্রিপেইড মিটার স্থাপন করতে পারত। 

শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত ইভিসি মিটারও ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে আমদানি করে বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে লাগাতে পারবেন৷ সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার যেহেতু নতুন করে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে তাই আবাসিকে নতুন প্রিপেইড মিটারের চাহিদা ৪০ লাখের মধ্যেই সীমিত থাকবে। এই পরিস্থিতিতে কোনো উদ্যোক্তা দেশে গ্যাসের প্রিপেইড মিটার তৈরির কারখানা স্থাপনে সম্মত হবে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমদানির মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণ হতে পারে৷

সোমবারের সেমিনারে বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, প্রিপেইড মিটার তৈরির কারখানায় কেবল গ্যাসের প্রিপেইড মিটার তৈরি হয় না। সেখানে আরো নানা ধরনের মিটার তৈরি করা যেতে পারে। 

তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা- যাতে প্রিপেইড মিটার স্থাপনে গতি আসে। এর মাধ্যমে শুধু গ্রাহক ব্যবহার অনুযায়ী বিল পরিশোধ করবে না, বরং গ্যাসের ব্যবহার নিরাপদ হবে। 

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, অনেক বাসায় গ্যাসের রাইজার থেকে চুলা পর্যন্ত লাইনে ছিদ্র রয়েছে। গ্রাহকের নিজ দায়িত্বে এসব ঠিক করে নেওয়া উচিত।

একজন গ্রাহক সাধারণত ৪০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করলেও তার বিল হিসাব করা হয় ৮৮ ঘনমিটার ব্যবহার ধরে। এক্ষেত্রে কোনো গ্রাহক বেশি গ্যাস ব্যবহার করে কম বিল দেয় আবার কোনো গ্রাহক কম গ্যাস ব্যবহার করে বেশি বিল দেয়। দুই চুলার একজন গ্রাহক প্রতিমাসে এখন ৯৭৫ টাকা বিল দিয়ে থাকে। কিন্তু এর বিপরীতে প্রিপেইড মিটার যারা স্থাপন করেছেন তাদের বেশির ভাগের বিল আসছে সর্বোচ্চ ৪৫০ টাকা। ফলে গ্রাহক প্রতিমাসে ৪৭৫ টাকা প্রিপেইড মিটারে সাশ্রয় করতে পারেন।

সেমিনারে  জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমরা উদ্যোক্তাদের প্রিপেইড মিটার আমদানি বা তৈরির জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। তারা আমদানি করবেন এবং দামও তারাই ঠিক করবেন। গ্রাহক বাজার থেকে মিটার কিনে আমাদের ল্যাবে পরীক্ষা করে সংযুক্ত করবেন। সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানির স্বীকার না হয়, এজন্য নীতিমালাতে একটি সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। 

সেমিনারে নীতিমালাটি উপস্থাপন করেন- জ্বালানি বিভাগের যুগ্ম সচিব সানাউল হক। তিনি বলেন, নীতিমালায় প্রিপেইড মিটারের মান উল্লেখ করা হয়েছে। আমদানিকারক সেই মানের মিটার আমদানি করবেন। মিটার আমদানির আগে পেট্রো বাংলার কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। গ্রাহক বাজার থেকে মিটার কেনার পর তা বিতরণ কোম্পানির ল্যাবে পরীক্ষা করে সংযোজন করবেন।

 সেমিনারে হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক এ এস এম মঞ্জুরুল কাদির বক্তব্য রাখেন। এ সময় পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

×