নারী পুলিশ বাড়ানোর দাবি
দুদক, বিদেশি দূতাবাসে পুলিশ নিয়োগের প্রস্তাব

পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী- ফোকাস বাংলা
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ | ১০:৩০
বিদেশি দূতাবাস, বিআইডব্লিউটিএ, বিআরটিএ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে পুলিশ নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, নিয়োগ পেলে এসব বিভাগ ও দপ্তরে কাজের সমন্বয় বাড়বে। পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মেলনে এসব দাবি-দাওয়ার প্রস্তাব করা হয়। সংশ্নিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানায়।
সোমবার ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম পুলিশের জনবল বাড়ানোর দাবি জানান। ১৩৩টি নতুন এসপির পদ, ১৮৪টি অতিরিক্ত ডিআইজি, ৭১ জন ডিআইজি, ১৭ অতিরিক্ত আইজিপি ও ৮টি গ্রেড-১ পদ বাড়ানোর কথা বলা হয়। এছাড়া অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের সঙ্গে পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তার সংখ্যা সমন্বয়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি হারুন অর রশিদ নিরাপত্তা ও আইনি সহায়তার জন্য দুদক, বিআইডব্লিউটিএ, দূতাবাসহ বিভিন্ন দপ্তর এবং বিভাগে পুলিশ নিয়োগের দাবি জানান।
খুলনা মেট্রোপলিটন কমিশনার লুৎফুর রহমান কিছু দাবির বিষয় তুলে ধরেন। এর মধ্যে ছিল অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতো সুদমুক্ত গাড়ি কিনতে পুলিশের জন্য ঋণসুবিধা। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, র্যাবপ্রধান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজিসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটপ্রধানের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম পুলিশে ১৫ থেকে ৩০ হাজার নারী সদস্য বাড়ানোর যৌক্তিকতার কথা তুলে ধরেছেন। নারী পুলিশের জন্য আলাদা দুটি ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের দাবি জানান তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টারের ব্যাপারে কথা বলেছেন তিনি।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় পুলিশে গ্রেড-১, গ্রেড-২, গ্রেড-৩, গ্রেড-৪ পদও কম। তাই পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে পদোন্নতি ও পদায়নে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক কাঠামোতে ভারসাম্য আনার দাবি তোলা হলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
প্রশাসনিক ক্যাডার, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, ফরেন সার্ভিস, শুল্ক ও আবগারি এবং কর ক্যাডারের তুলনায়ও পুলিশের উচ্চতর পদে ঘাটতি রয়েছে। পুলিশে গ্রেড-১ পদ ২টি। গ্রেড-২ পদ মাত্র ১৩টি। গ্রেড-৩ (যুগ্ম সচিব) পদ রয়েছে ৬২টি।
অ্যাডমিন ক্যাডারের মতো পুলিশ কর্মকর্তারা সুদমুক্ত গাড়ি কেনার ঋণ চান। গত বছর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী পুলিশ ক্যাডারকে এই সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে উপসচিব থেকে শুরু করে তারও উচ্চপদে গাড়ি কেনার জন্য সরকার এককালীন ৩০ লাখ টাকা করে ঋণ পাওয়ার সুবিধা দিয়ে আসছে। 'বিশেষ অগ্রিম' নামের এই ঋণের বিপরীতে তাদের কোনো সুদ পরিশোধ করতে হবে না। আবার সেই টাকা দিয়ে কেনা গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ, তেলের খরচ ও চালকের বেতন বাবদ সরকার মাসে আরও ৫০ হাজার টাকা করে দিচ্ছে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার ভাষ্য, পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অপারেশনাল কাজে বেশি গাড়ি ব্যবহার করতে হয়।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার ভাষ্য- দীর্ঘদিন পুলিশ অবহেলিত ছিল। তবে বর্তমান সরকারের আমলে জনবল বাড়ানো হয়। এর আগে গত রোববার পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনের পর রাজারবাগে কল্যাণ প্যারেডে বেশ কিছু দাবি-দাওয়ার বিষয় সামনে আসে। গত বছরের প্রতিশ্রুত কিছু দাবি পূরণ না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।