তিনি প্রকৌশলী, তিনিই চিকিৎসক!

প্রতারণার অভিযোগে বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ - সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২২ | ০৯:৩৭ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২২ | ০৯:৩৭
একটি পরিচয়পত্রে লেখা- প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহরিয়ার, সহকারী প্রকৌশলী, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তবে তার আরেক পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি চিকিৎসক! শুধু কি তাই? তিনি একাধারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টারের (আরআইসি) কর্মকর্তা। সেইসঙ্গে একটি পত্রিকার স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক। ভুয়া পরিচয়ের মতো তার নামও অনেক। এসব নাম-পরিচয়ে তিনি নানারকম প্রতারণা করে আসছিলেন। অবশেষে বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আশরাফউল্লাহ সমকালকে বলেন, গ্রেপ্তার যুবক নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিদেশগামীদের ভুয়া মেডিকেল রিপোর্ট তৈরি করে দিতেন। তিনি নিজেকে হাফিজুল ইসলাম সরদার ওরফে ডা. শফিক শাহরিয়ার ওরফে মো. শফিক ওরফে মো. মামুন বলে পরিচয় দেন। বিভিন্ন প্রতারণার প্রয়োজনে তিনি আলাদা নাম-পরিচয় ব্যবহার করেন। কখনও নিজেকে সাংবাদিক হিসেবেও পরিচয় দেন। বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা হয়েছে।
ডিবির এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার যুবকের কাছ থেকে ডাক্তার পরিচয়ের ১২টি ভিজিটিং কার্ড, পিপলস ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড কনসালটেশনের ল্যাব রিপোর্ট লেখার প্যাডের ৪৫টি খালি পাতা ও ৮০টি খাম, দুদকের লোগো ও জলছাপ দেওয়া লিগ্যাল নোটিশের খালি প্যাডের পাঁচটি পাতা, বিআরটিএ’র অস্থায়ী অনুমতিপত্রের ১০টি ফরম, বিভিন্ন টেলিভিশনের ১৩১টি স্টিকার, বিআরটিএ’র বিভিন্ন দপ্তরের তিনটি নকল সিল, দুদক, রাজউক, বিআরটিএ, আরআইসি কর্মকর্তা পরিচয়ের পাঁচটি কার্ড, তারিখ পরিবর্তনযোগ্য সিল ইত্যাদি পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তার যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি জানায়, ডেমরার কোনাপাড়ায় জনৈক শফিকের কম্পিউটারের দোকান এবং দৈনিক বাংলা মোড় এলাকার বিভিন্ন প্রেস থেকে তিনি ভুয়া পরিচয়পত্র ও প্যাড তৈরি করে নেন। এরপর প্রতারণা ও জালিয়াতিতে এসব ব্যবহার করেন। নানা কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই তার মূল উদ্দেশ্য। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য তিনি বেশ কয়েকটি পত্রিকা ও টিভির পরিচয় ব্যবহার করেন। যানবাহনে ব্যবহারের জন্য তিনি তৈরি করে নিয়েছেন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের বিপুল পরিমাণ স্টিকার। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তার প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
- বিষয় :
- প্রতারক
- প্রতারণা
- ভুয়া চিকিৎসক
- ভুয়া সাংবাদিক