ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

প্রয়োজনীয় পরামর্শ

মেডিকেলে ভর্তি

মেডিকেলে ভর্তি

কোলাজ

 সায়মা আহমেদ স্বর্ণা, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪ | ০০:০৯

শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে অনেকের মনেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ বাসা বাঁধে। একজন চিকিৎসকের পক্ষে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাধ্যমতো  সেবা করা যতটা সম্ভব, অন্য পেশায় ততটা সম্ভব নয়। ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা। প্রতিবছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী। সেরাদের সেরা হয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পায় মাত্র কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। সাদা অ্যাপ্রন আর স্টেথস্কোপের স্বপ্ন যারা দেখে, যারা নিজের জীবন উৎসর্গ করতে চায় মানবসেবায়, তাদের জন্য দিকনির্দেশনামূলক কিছু কথা–
পরীক্ষার প্রস্তুতি যেমনটা হওয়া দরকার
lবেসিক অর্থাৎ মৌলিক ধারণাটা ঠিক থাকলে পড়া বেশি দিন মনে রাখতে সুবিধা হয়। প্রশ্ন একটু ঘুরিয়ে এলেও উত্তর করতে সমস্যা হয় না। 
l মূল বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। মূল বইটি ভালোভাবে শেষ করতে হবে এবং বারবার রিভিশন দিতে হবে। বায়োলজি বিষয়ের প্রশ্নগুলোয় অনেক সময় হুবহু মূল বইয়ের লাইন তুলে দেওয়া হয়। তাই খুব ভালো করে আত্মস্থ করতে হবে প্রতিটি বই। রসায়ন প্রশ্নের উত্তর দিতে একটু কৌশলী হতে হবে। ধ্রুবকের মানগুলো খুব ভালো করে মুখস্থ করতে হবে এবং ছোট ছোট ম্যাথ করতে হবে। বড় ম্যাথ খুব একটা আসে না। ছোট ম্যাথ যেগুলো এক মিনিটেই করা যায়, সেসব প্র্যাকটিস করবে। কিছু অঙ্ক একদম মূল বই থেকেই হুবহু তুলে দেওয়া হয়। পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মান এবং জ্ঞানমূলক তথ্যগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে ছোট ম্যাথ করবে। প্রতি চ্যাপ্টারের শেষে যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা দেওয়া থাকে, সেগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মূল বইয়ের অবজেকটিভ প্রশ্নগুলো সমাধান করতে হবে অবশ্যই।
l  হয়তো বায়োলজির একটা অধ্যায় পড়া হয়েছে। তারপর প্রশ্নব্যাংক থেকে শেষ ১০ বছরের প্রশ্ন সলভ করবে। দেখবে বেশির ভাগই পারছ। প্রশ্ন কিন্তু অত কঠিন হয় না। কঠিন লাগে কেন তাহলে? এর কারণ হলো, একসঙ্গে সব বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হয়, তা-ও আবার আলাদা থাকে প্রশ্ন।  এর জন্য চাই অনুশীলন আর সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা। 
lমেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে রসায়ন অংশে নম্বর তোলাটাই বেশ কঠিন। প্রতিটি অধ্যায়ের পেছনের MCQ এবং বোর্ড প্রশ্নগুলো বারবার পড়তে হবে। এ ক্ষেত্রেও শর্ট সিলেবাসকে প্রাধান্য দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 
l সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে বিসিএস, আগের বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো সমাধান করবে। মুক্তিযুদ্ধের অংশটুকুতে বেশি জোর দেবে।
l ইংরেজির ১৫ মার্কের ক্ষেত্রে ২-৩ মার্ক ধরেই নিতে পারো একটু কঠিন হবে। প্রতিবছর এমনটাই দেখা যায়। কিন্তু যা সহজ হবে বা যা তোমার প্রিপারেশন থেকে আসবে, তা কিন্তু ভুল করা যাবে না। ইংরেজির জন্য মেডিকেল ভর্তির বিশ্লেষণ 
(Most Important To Least Important):
Correction, parts of speech identification. 
Translation, Appropriate Preposition
Synonym Antonym (BCS, MAT, VARSITY, JOBS), Tense, Spelling, Group Verb, Phrase and Idioms, Clause, Right Form of verbs, Verbs, Noun, Gerund, Verbals, Number, Voice, Narration, Adverb, Adjective, Pronoun
lসাধারণ জ্ঞানের মতো এখানেও আগের বিসিএসসহ মেডিকেল-বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করতে হবে। সাধারণ জ্ঞানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, সাম্প্রতিক বিষয়াবলি। যদি আগে থেকে সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতি না নেওয়া হয়, তাহলে এই অল্প সময়ে পড়ে শেষ করা যায় না। তাদের জন্য উপদেশ থাকবে শুধু গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো পড়া । 
lমূল বই ও অতিরিক্ত বইয়ের অনুশীলনীতে আমাদের শতভাগ দক্ষতা রাখতে হবে। কেননা প্রতিবছরই রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞানের ৮০-৯০ ভাগ প্রশ্ন বিভিন্ন বইয়ের অনুশীলনী থেকে চলে আসছে। সেজন্য অধ্যায়ের ভেতরে পড়ার পাশাপাশি অধ্যায় শেষের সারসংক্ষেপ ও 
বহুনির্বাচনী সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।
lমনে রাখবে, প্রশ্নপত্রে প্রশ্নও তোমার সামনে, উত্তরও তোমার চোখের সামনেই রাখা থাকবে। তোমাকে শুধু খুঁজে বের করতে হবে সঠিক উত্তরটি। কিন্তু কাজটি যতটা সহজ বলে মনে হয়, ততটা সহজ নয়। কারণ লড়াইটা সেরাদের সঙ্গে। তাই তোমাকে হতে হবে সতর্ক। অনেক সময় প্রশ্ন দেখতে সহজ মনে হয়, কিন্তু উত্তর খুঁজতে গিয়ে অনেকে কনফিউজড হয়ে যায়। তাই যা পড়বে, খুব ভালোভাবে পড়বে, যেন কনফিউশন না থাকে।
lপ্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা (মক টেস্ট) দেওয়ার মাধ্যমেই আমরা ভুলত্রুটিগুলো বুঝতে পারি। কোন বিষয়ে অথবা কোন অধ্যায়ের কোথায় ঘাটতি আছে, জানতে পারি। সে জন্য শুরু 
থেকে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা দেওয়ার অভ্যাস করতে হবে। পরীক্ষায় হওয়া ভুল ফেলে রাখলে চলবে না। বরং ভুলগুলো ভালো করে দাগিয়ে রাখতে হবে, সেটা ব্যাখ্যাসহ সমাধান করতে হবে। পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে সময় সম্পর্কেও একটা ভালো ধারণা হয়।
 

আরও পড়ুন

×