স্মরণসভায় বক্তারা
'মুহিত ভাই' ছিলেন সবার ভালোবাসার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণসভায় বক্তারা- সমকাল
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ মে ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ২৩ মে ২০২২ | ০১:৪৯
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছিলেন একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। সব সময় চেয়েছেন সাধারণ মানুষের উন্নতি। চেয়েছেন এক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একজন মন্ত্রী, একজন রাজনীতিবিদ, সর্বোপরি একজন মানুষ হিসেবে সাবেক এ অর্থমন্ত্রীর যে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা ছিল, সেটি অন্য কারও মধ্যে নেই। তিনি ছিলেন সবার ভালোবাসার 'মুহিত ভাই'।
গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন এ স্মরণসভার আয়োজন করে।
প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট বোন জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মফিদুল হক প্রমুখ।
মফিদুল হক বলেন, দেশের জন্য যেখানে ইতিবাচক কিছু হয়েছে, মুহিত ভাই সেখানে ছিলেন। মুহিত ভাইয়ের যেটি না বললেই নয়, মুক্তিযুদ্ধে তার যে অবদান, সেটি কখনও জাহির করেননি। অনেকজনের কথা তিনি বলেছেন, তবে নিজেকে নিয়ে খুব কমই বলেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি দিনরাত এক করে কাজ করেছেন।
সাবেক এই অর্থমন্ত্রীকে মাহফুজ আনাম চিত্রিত করেছেন একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হিসেবে। তিনি বলেন, উনি বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন; সত্যিকারে ভালোবাসতেন। যখন তিনি নীতিনির্ধারক ছিলেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে বৈষম্যের যে একটি ধারা, সেটি কমাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। উনি সব সময় চেয়েছেন সাধারণ মানুষের উন্নতি। তিনি চেয়েছেন বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। পরিবেশের জন্য বরাদ্দ বাড়িয়েছেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের জন্য বাড়িয়েছেন। অনেক সময় রাজনীতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে পারেননি, তবে সব সময় তার প্রাণ ছিল সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গভর্নর হিসেবে আমি তিনজন অর্থমন্ত্রীকে পেয়েছি। মুহিত ভাই কখনও বলেননি এটা করো না, ওটা করো না। আমার কাজে তাঁর ছিল নো ইন্টারভেনশন, নো ইন্টারফেয়ার। তবে পরামর্শ দিতেন। তিনি সম্পূর্ণ একজন মানুষ, পরিপূর্ণ মানুষ।
বিনায়ক সেন বলেন, তার বিশেষ ভিন্নতা ছিল, তিনি উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে চেয়েছেন; তিনি এ নিয়ে বইও লিখেছেন। উপজেলা পর্যায়কে শক্তিশালী করতে আশির দশক থেকে বলে এসেছেন। আমাদের দেশে গত তিন দশকে তিনজন অর্থমন্ত্রী পেয়েছি। তারা অসম্ভব দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়েছেন। তাদের মধ্যে মুহিত সাহেবের একটি ভিন্নতা ছিল, তিনি সব সময় ভাবতেন বাংলাদেশ হবে একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র।
ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করে শায়লা খাতুন বলেন, ছোটবেলা থেকে তিনি আত্মনির্ভরশীলতা পছন্দ করতেন। দেশের মানুষকে শেখাতে চেয়েছেন, আয় করতে হবে। স্বাবলম্বী হতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতেন; সম্মান পেয়েছেন। সবসময় চাইতেন যার যে পেশা, সে সেটি করুক। কখনও অবৈধ কাজ করেননি। বই জমানো ছিল তার ভীষণ পছন্দ। বই পড়তেন, পছন্দ করতেন।