চলমান 'শুদ্ধি' অভিযানের ১ মাস
ছড়াচ্ছে আতঙ্ক, পরবর্তী টার্গেট নিয়ে ধোঁয়াশা

সাহাদাত হোসেন পরশ ও ইন্দ্রজিৎ সরকার
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ | ১৩:৩৭
ক্যাসিনোবিরোধী ও 'শুদ্ধি' অভিযানের এক মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ। গত ১৮
সেপ্টেম্বর অভিযান শুরু হয়। এক মাসে অনেক রাঘববোয়ালের সাম্রাজ্য তছনছ হয়ে
গেছে। অনেকের ভিত নড়বড়ে। তবে কেউ কেউ এখনও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। কেউ আবার
গ্রেপ্তার এড়াতে দেশে ফিরছেন না। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সবুজ
সংকেত পাওয়ার পর শুরু হয় এই শুদ্ধি অভিযান।
ক্যাসিনো কারবারিদের বিরুদ্ধে এই অভিযান শুরু হলেও তা শেষ পর্যন্ত সেখানে
সীমিত থাকেনি। এরই মধ্যে এই অভিযানে প্রভাবশালী ঠিকাদার, কাউন্সিলর
গ্রেপ্তার হয়েছেন। অভিযান শুরুর পরপরই দুর্নীতিবাজদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে
পড়ে। শঙ্কা এখনও কাটেনি। তবে অভিযানের পরবর্তী টার্গেট নিয়ে সর্বত্র এক
ধরনের ধোঁয়াশা রয়েছে। কোথায় গিয়ে থামবে এই অভিযান তা নিয়ে রয়েছে নানা
গুঞ্জন ও জল্পনা-কল্পনা। এমনকি অভিযানের পরিধি নিয়ে রয়েছে নানা মত। আবার
সম্রাটে এসে অভিযানের ইতি ঘটবে কি-না আছে এমন আলোচনাও।
সমকালের পক্ষ থেকে প্রশাসনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে
আভাস মিলেছে, শুদ্ধি অভিযান চলবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি
দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আরও সক্রিয় হবে।
ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ নেতাদের বাইরেও বিভিন্ন
সরকারি পদে
বসে যারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া
হবে। শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়, ঢাকার বাইরেও যারা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত
তাদেরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত ৭ সেপ্টেম্বর দলের যৌথ
সভায় দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেন। এরপর দলের কেন্দ্রীয়
নির্বাহী কমিটির সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে দেওয়া হয়।
ওই সভায় যুবলীগের দুই নেতার সমালোচনা করা হয়। এর পাঁচ দিনের মাথায় ১৮
সেপ্টেম্বর প্রথম গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক
সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর তাকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়।
পুলিশ ও র্যাব সূত্রে জানা গেছে, অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকাসহ
দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৩০টি ক্লাব ও বারে অভিযান চালানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও
যুবলীগের বেশ কয়েকজনের বাসায় তল্লাশি করা হয়। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর
পর এখন পর্যন্ত যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত
যুবলীগ দক্ষিণের বহিস্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। তবে
গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে ঘিরে নানা নাটকীয় ঘটনাও ঘটে।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অভিযোগের
কারণে আলোচনায় আসে সম্রাটের নাম।
যুবলীগ দক্ষিণের বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া
গ্রেপ্তারের পর কয়েকদিন শত শত নেতাকর্মীকে নিয়ে কাকরাইলের দলীয় কার্যালয়ে
অবস্থান করছিলেন সম্রাট। এরই মধ্যে টানা অভিযানে দাপুটে ঠিকাদার জি কে
শামীম, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ছাড়াও
যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হন।
ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন সম্রাট। বেশ কিছু দিন ধরে বন্ধ ছিল তার তিনটি ফোন
নম্বরও। সম্রাটের বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে সীমান্ত ও বিমানববন্দরে
সতর্কতা জারি করা হয়। সম্রাট গ্রেপ্তার না হওয়ায় নানা গুজব ও গুঞ্জনের
ডালপালা ছড়াতে থাকে। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায় থেকে
বারবার বলা হচ্ছিল সম্রাট তাদের নজরদারিতে রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ১৯ দিনের মাথায় গ্রেপ্তার হন সম্রাট।
চলমান অভিযানে সর্বশেষ গত ১১ অক্টোবর শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩২
নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান। এরপর তার
মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে সাত কোটি টাকার চেক, অস্ত্র ও গুলি
উদ্ধার করা হয়। মিজান গ্রেপ্তারের পর গত এক সপ্তাহে আলোচিত-সমালোচিত কাউকে
গ্রেপ্তার করতে দেখা যায়নি।
২০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় ঠিকাদার জি কে শামীমকে। এ সময় তার সাত
দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিনে গ্রেপ্তার হন কলাবাগান ক্রীড়া
চক্রের সভাপতি ও কৃষক লীগ নেতা সফিকুল আলম ফিরোজ। এ ছাড়া ক্যাসিনোবিরোধী
অভিযানে গ্রেপ্তার হন অনলাইন ক্যাসিনো কারবারি সেলিম প্রধান,
আক্তারুজ্জামান, রোকন মিয়া, ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাইফুল ইসলাম, তুহিন
মুন্সী ও নবীর হোসেন। এ পর্যন্ত র্যাব দেশি-বিদেশি মুদ্রাসহ আট কোটি ৪৫
লাখ টাকা জব্দ করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে ১৬৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার এফডিআর,
১৩২টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও ছয় কোটি ৭৭ লাখ টাকার চেক। আরও জব্দ করা হয়
আট কেজি স্বর্ণ। এখন পর্যন্ত বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে ২৫টি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ইয়াবা, বিদেশি মদ ও অন্যান্য মাদক আটক করা হয়।
খালেদ ও সম্রাটের কার্যালয় থেকে টর্চার সেলে ব্যবহূত বিভিন্ন আলামত পাওয়া
যায়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১১টি ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব।
সংশ্নিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে যে
সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে তা ভেঙে দিতে চান নীতিনির্ধারকরা। জনমনে যাতে বিশ্বাস
তৈরি হয়- দুর্নীতি করলে ছাড় পাওয়া যাবে না। সরকারের বর্তমান ও সাবেক কোনো
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছে কি-না তা নিয়েও তদন্ত
হবে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার অনেকের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা
হয়েছে। এ মামলায় আসামিদের পাশাপাশি তাদের আত্মীয়-স্বজন যারা কোটি কোটি
টাকার মালিক হয়েছেন তাদেরও আইনের আওতায় নেওয়া হবে। উৎস জানাতে ব্যর্থ হলে
সবার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ হবে। সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালিত
হচ্ছে। অভিযানের এক পর্যায়ে টেকনাফে মাদক কারবারিদের সম্পদ ও বাড়ি জব্দ করা
হয়। এবারের শুদ্ধি অভিযানে প্রয়োজনে দুর্নীতিবাজদের বাড়ি-গাড়ি জব্দ হবে।
বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের পরিচয় ব্যবহার করে যারা কোটি কোটি টাকার মালিক
হয়েছেন তাদের ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
যুবলীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযানের পর ক্যাসিনো
সুবিধাভোগী যারা তারা চুপসে গেছেন। যারা দীর্ঘদিন সম্রাটকে আশ্রয়-প্রশ্রয়
দিয়ে আসছিলেন তারা মুখ খুলছেন না। সম্রাটের সেই 'বড় ভাইরা' এখন পরিস্থিতি
পর্যবেক্ষণ করছেন। আবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য
দীর্ঘদিন ধরে ক্যাসিনো থেকে সুবিধা নিয়েছিলেন। চলমান অভিযানের পর তাদের
অনেকে কোণঠাসা। অনেকে আছেন বদলি আতঙ্কে। তবে এই অভিযানে সব সেক্টরের
দুর্নীতিবাজরা ধরা পড়বে কি-না, তা নিয়ে এখনও আছে নানা সংশয়। এমনকি দলের
পরিচয় দিয়ে কয়েকজন সাংসদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কতিপয় নেতা কোটি কোটি টাকার
মালিক হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তাদের পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে দলের মধ্যে আছে
নানা গুঞ্জন।
এদিকে গ্রেপ্তার আতঙ্কের বাইরে যুবলীগে বহিস্কার-ভীতি বিরাজ করছে। বিশেষ
করে এক সময়ের প্রতাপশালী কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর
রহমান সংগঠন থেকে বহিস্কার হওয়ার পর এই আতঙ্ক আরও জোরদার হয়। আনিস দলের
পরিচয় ব্যবহার করে অল্প সময়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হন। অভিযানের কারণে
দুর্নীতিবাজদের নাম সামনে আসায় যুবলীগের আসন্ন সম্মেলনে তারা পদ-পদবি পাবেন
না এটা বিশ্বাস করতে চান অনেকে। এছাড়া আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে
অন্তত দুই ডজনের বেশি দুর্নীতিবাজ কাউন্সিলরের কপাল পুড়ছে।
অভিযানে গ্রেপ্তারদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের
বহিস্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও যুবলীগ নেতা ঠিকাদার জি কে শামীম।
তাদের মধ্যে সম্রাটকে বলা হচ্ছে ক্যাসিনো কারবারের মূল হোতা। ঢাকার সব
ক্লাবের ক্যাসিনো-জুয়া তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন। প্রতি রাতে বখরা পেতেন লাখ
লাখ টাকা। আর জি কে শামীম কোটি কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে সবাইকে ম্যানেজ করে
সরকারের বড় বড় প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে নিতেন। গ্রেপ্তারের পর র্যাব ও ডিবির
জিজ্ঞাসাবাদে এই দু'জন গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য দিয়েছেন। বিশেষ করে ক্যাসিনো
পরিচালনায় যুক্ত, অর্থের বিনিময়ে এই অবৈধ আসরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া
রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ কর্মকর্তা এবং সুবিধাভোগী অনেকের নাম বলেছেন তারা।
এরই মধ্যে যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানের
বিরুদ্ধে রমনা থানায় করা অস্ত্র ও মাদক মামলা র্যাবে স্থানান্তর করা
হয়েছে। গত মঙ্গলবার সম্রাটকে দুই মামলায় মোট ১০ দিন ও আরমানকে পাঁচ দিনের
রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। রিমান্ডের প্রথম দিন বুধবার তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে
ডিবি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের নেওয়া হয় র্যাব হেফাজতে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল
সারওয়ার-বিন-কাশেম সমকালকে বলেন, মামলার অভিযোগের বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ
করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযানে গ্রেপ্তার অপর আসামিদের কাছ থেকে
পাওয়া তথ্যের ব্যাপারেও তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড.
ইফতেখারুজ্জামান সমকালকে বলেন, এ ধরনের অভিযান বা কার্যক্রম মূল্যায়নের
জন্য এক মাস যথেষ্ট সময় নয়। তবে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের সুষ্ঠু
বিচার বা ন্যায়বিচার যেন নিশ্চিত হয়। ক্ষমতাসীন দল থেকেই অভিযান শুরু
হয়েছে- এটা ভালো বিষয়। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে শূন্য সহনশীলতা নীতি ও
কাউকে ছাড় না দেওয়ার কথা বলেছেন। তেমনভাবেই যেন বিষয়টি পরিচালিত হয়। তবে
দুর্নীতির ব্যাপ্তি ও গভীরতা অনেক। এখানে ক্যাসিনোর রমরমা কারবার চলছিল।
এতে রাজনৈতিক দল, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের একাংশের সংশ্নিষ্টতা ছিল বলে
ধরে নিতে হবে। অভিযানে তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেই
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বাস্তব রূপ পাবে। নইলে শুধু রোগের লক্ষণের চিকিৎসা
হবে, রোগ সারানোর জন্য যে গভীরে যাওয়া দরকার তা হবে না।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ফৌজদারি অপরাধের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অবশ্যই ভালো ব্যাপার। এটাকে তো স্বাগত জানাতেই হয়।
তবে সরকারের কাজই হলো জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া। অসামাজিক কাজ বা আইনবিরুদ্ধ
কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। সে ক্ষেত্রে ঠিক কাজটিই করছে সরকার। এটা
চালিয়ে যেতে হবে। অতীতে কখনও এমন কার্যক্রম দেখা যায়নি। তাই এ অভিযানকে এক
মাসে মূল্যায়নের সুযোগ নেই। এক মাসে অভিযানের গতি শ্নথ হয়ে পড়েছে কি-না তা
তুলনা করার কোনো মাপকাঠিও নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া
রহমান সমকালকে বলেন, মর্নিং শ্যোজ দ্য ডে- এ কথা মানলে বলতে হবে, এটি
অবশ্যই সাধুবাদ জানানোর মতো অভিযান। বিশেষ করে যখন তা যুবলীগ-ছাত্রলীগের
মতো ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন থেকে শুরু হয়। এরই মধ্যে
শীর্ষ কয়েক নেতাকে গ্রেপ্তার ও কাউকে কাউকে নিষ্ফ্ক্রিয় করতে দেখা গেছে।
বিষয়টি যেভাবে ছড়িয়ে গেছে, কারও কারও কাছে যে পরিমাণ টাকা দেখা গেল তা
রীতিমতো বিস্ময়কর। এ দেশে আইন নিজের গতিতে চলা মুশকিল। ব্যক্তি সম্পর্ক,
রাজনৈতিক প্রভাবের মতো সনাতন অনেক বিষয় আছে, যা আইনি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত
করে। আর এসব অনিয়মই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে উত্তরণ খুব সহজ নয়।
তবে যেহেতু গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায়, তাই এ কার্যক্রমকে একটি নিয়মিত
প্রক্রিয়ার মধ্যে আনতে হবে। আইনের মাধ্যমে বিষয়টি নির্মূল করতে হবে, যেন তা
টেকসই হয়।
- বিষয় :
- চলমান 'শুদ্ধি' অভিযানের ১ মাস