ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

সালাম দিয়ে ভাব জমিয়ে মারধর-ছিনতাই চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৩২

সালাম দিয়ে ভাব জমিয়ে মারধর-ছিনতাই চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৩২

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ২১:২৯ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ২১:২৯

পথচারীদের কাউকে টার্গেট করে কাছে গিয়ে সালাম দেয় চক্রের এক সদস্য। এরপর তাঁর সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে নানা কথা বলে ভাব জমানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে চক্রের অপর সদস্যরা এসে ওই ব্যক্তির সঙ্গে বিতর্কে জড়ায় ও মারধর শুরু করে। সেই ফাঁকে একজন টাকা-মোবাইল হাতিয়ে নেয়। এমন অভিনব কৌশলে ছিনতাইয়ে জড়িত একটি চক্রের ৩২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৩। রোববার রাজধানীর কোতোয়ালি, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে সোমবার রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চক্রের হোতা মোহাব্বত মিয়া ও মো. মাসুমসহ অপর সদস্যরা অলিগলিতে ওঁত পেতে থাকে। সুযোগ পাওয়ামাত্রই তারা পথচারী, রিকশারোহী, যানজটে থেমে থাকা সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার যাত্রীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র লুট করে। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশন এলাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ছিনতাইয়ে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতেও দ্বিধা করে না। সম্প্র্রতি রাজধানীর কোতোয়ালি, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারী এলাকায় ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় র‌্যাব-৩ অভিযান চালায়। অভিযানে আসামিদের কাছ থেকে সুইচ গিয়ার, চাকু, ক্ষুর, অ্যান্টিকাটার, কাঁচি, ব্লেড, মোবাইল ফোন এবং নগদ অর্থসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়।’

অধিনায়ক জানান, যে কোনো বিশেষ দিবস বা অনুষ্ঠান ঘিরে এদের তৎপরতা বাড়ে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় বিপুল লোকসমাগম হয়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা ছিল তাদের। চক্রটি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেও ছিনতাই করে থাকে। পথচারীদের সঙ্গে কথা বলে মারধর করে ছিনতাই ছাড়াও তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। রিকশা বা অটোরিকশার যাত্রীদের টার্গেট করে তারা পিছু পিছু যায়। এরপর সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছে যাত্রী ও চালককে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার ছিনতাইকারীদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত। লুণ্ঠিত জিনিসপত্র বিক্রির টাকায় তারা মাদক সেবন করে। তাদের অধিকাংশের নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা নেই। বিভিন্ন সময়ে তারা বিভিন্ন বস্তিতে থাকে। তাদের প্রায় সবার বিরুদ্ধে মাদক-ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্ত হয়ে তারা আবারও একই অপরাধে জড়ায়।

অভিযান সংশ্লিষ্টরা জানান, র‌্যাব-৩ গত ছয় মাসে ৭৯টি অভিযান চালিয়ে ২৬৮ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

আরও পড়ুন

×