ঈদবাজার
জুতার দোকানে ভিড়

কেনাকাটার শেষ মুহূর্তে জুতার দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। মঙ্গলবার রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে তোলা মাহবুব হোসেন নবীন
সাজিদা ইসলাম পারুল
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৩ | ১৮:০০
ঈদুল ফিতরের আর বেশি দিন বাকি নেই। ইতোমধ্যে অনেকেরই পোশাক কেনা শেষ। এখন পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে জুতা কিনতে ভিড় বেড়েছে দোকানে। শেষ মুহূর্তে রং আর ডিজাইন অনুযায়ী পছন্দের জুতা কিনছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিভিন্ন উপাদানের দাম বৃদ্ধির কারণে এবার জুতার দামও বেড়েছে। নিজেদের মুনাফা রেখেই বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রথমদিকে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকলেও এখন বিক্রি ভালো হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিপাহীবাগ এলাকা থেকে মৌচাক মার্কেটে মা ও স্ত্রীর জন্য জুতা কিনতে আসেন জিয়াউল ইসলাম। তিনি জানান, পোশাক কেনা শেষ। তাই পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে জুতা কিনতে এসেছেন।
দুই সন্তানকে নিয়ে একই মার্কেটে জুতা কিনতে আসেন রিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, দেড় বছর বয়সী সন্তানের জুতার জন্য গুনতে হয়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকা। আর আরেক সন্তানের জুতার দাম ৭০০ টাকা। নিজেদের জন্য কেনার শখ থাকলেও দামে কুলাচ্ছে না। তিনি বলেন, এবার জিনিসপত্রের দাম এত বেড়েছে, যা ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। ঈদের আনন্দ এখন আর মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে নেই। রাজধানীর ঈদবাজার ঘুরে দেখা যায়, পোশাক দোকানের পাশাপাশি জুতার দোকানেও ক্রেতার ভিড়। প্রতিটি দোকানে খুদে ক্রেতাই বেশি। মা-বাবার হাত ধরে পছন্দের জুতা কিনে নিচ্ছে তারা। বাটা, বে, জেনিস, গ্যালারি এপেক্স, লিবার্টি, ওরিয়ন, লা মোডসহ নামিদামি ব্র্যান্ড ছাড়াও এই গরমে জুতার সবচেয়ে বড় মার্কেট এলিফ্যান্ট রোডে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
অনিক শুজের বিক্রয়কর্মী সজীব মিয়া বলেন, এখানে সব ধরনের জুতা পাওয়া যায়। এবার লোফার ভালো চলছে। হিল, স্লিপার, শু-ও ভালো বিক্রি হচ্ছে। এসব জুতা ৬০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
ফরচুন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, এবার নারীরা হিল, স্লিপার, শু, স্নিকার্সের পাশাপাশি নতুন ডিজাইনের ফ্ল্যাট হিল কিনছেন। পুরুষদের জন্য রয়েছে হাফ শু, ফ্রাঙ্কো, স্যান্ডেল, লোফারসহ নানা ডিজাইন। এবার ডিজাইনাররাও মেয়েদের জন্য আলাদা করে নকশা করছেন বাহারি সব লোফার। মেয়েদের লোফারের মূল বৈশিষ্ট্য নানা রঙের মিশ্রণ।
এ ছাড়া নিউমার্কেট, চৌরঙ্গী মার্কেট, পল্টন, বায়তুল মোকাররম, মালিবাগ, ফার্মগেট, মিরপুর ও উত্তরার বিভিন্ন শপিংমলের জুতার দোকানেও ভিড় দেখা গেছে। স্থান অনুযায়ী বিভিন্ন জুতার দাম ৩৫০ থেকে ১২ হাজার টাকা। নন-ব্র্যান্ডের জুতা দামাদামি করে কিনছেন ক্রেতারা।
রামপুরা বোলিং-এর দোকানের দায়িত্বে থাকা কাউসার আহমেদ জানান, পুরো রোজার মাসে যা বিক্রি হয়েছে, এখন শেষ সপ্তাহে বিক্রি তার চেয়ে কয়েক গুণ। তাঁদের দোকান থেকে পছন্দমতো জুতা কিনছেন ক্রেতারা।
পাদুকা শিল্পের নগরী ভৈরব
ঈদ উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের ভৈরবসহ পার্শ্ববর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন জুতা তৈরির কারখানায় দিনরাত কাজ করছেন লক্ষাধিক কারিগর। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, করোনাকালীন শ্রমিক কমে যাওয়ার কারণে হিমশিম খেলেও শেষ সময়ে জুতা বিক্রি ভালো হয়েছে বলে জানান এখানকার ব্যবসায়ী ডায়মন্ড পিউ ফুটওয়্যারের কর্ণধার বাহারুল আলম বাচ্চু। তিনি বলেন, তাঁদের কারখানা থেকে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার জোড়া জুতা বিক্রি হয়েছে। প্রতি জোড়ার দাম ২৫০ থেকে ৩৮০ টাকা।
অন্য কারখানার মালিকরা বলছেন, এ বছর পাদুকা শিল্পের সবচেয়ে বড় সমস্যা কাঁচামালের দামের ঊর্ধ্বগতি। পাদুকা তৈরির কাঁচামাল আমদানি করতে হয় চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। ফলে জুতার দামও বেড়েছে। বিক্রি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও টার্গেটের কাছাকাছি বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে।
- বিষয় :
- ঈদুল ফিতর
- ঈদ বাজার
- জুতার দোকান