ক্রেতা টানতে ছাড়, বিক্রি বেশি শিশুদের পোশাক

পছন্দসই ঈদের পোশাক কিনতে মার্কেটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতার ভিড়। শুক্রবার রাজধানীর নিউমার্কেট থেকে তোলা সমকাল
মাজহারুল ইসলাম রবিন
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪ | ০০:২১
কোরবানির ঈদের বাকি আর মাত্র দু’দিন। ঈদ উৎসবে একে অন্যের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবে সবাই। ঈদে নতুন পোশাকের চাহিদা থাকে সবারই। রাজধানীর বসুন্ধরা শপিংমল এবং নিউমার্কেটে পোশাকসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ভিড় করছেন উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার। তবে এবার পোশাক কেনাকাটায় মানুষের আগ্রহ কম দেখা গেছে। নিউমার্কেটে শিশুদের কাপড়ের দোকানে ভিড় বেশি দেখা গেছে। আর বসুন্ধরা শপিংমলে ক্রেতাদের টানতে কাপড়ের ব্র্যান্ডের শোরুমগুলো আকর্ষণীয় ছাড় দিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটের দক্ষিণ ভবনে দেখা যায়, ক্রেতা উপস্থিতি খুবই কম। দোকানের সামনে দিয়ে কোনো ক্রেতা হেঁটে গেলে ডেকে পণ্য দেখানোর চেষ্টা করছেন বিক্রেতারা। পাঞ্জাবি ও শার্ট-প্যান্টের দোকানে ভিড় দেখা গেছে, তবে আগের ঈদের মতো নয়।
মার্কেটের ইউনিক পাঞ্জাবি হাউসের সেলসম্যান মো. সাদাফ বলেন, রোজার ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদে বেচাকেনা কম হয়। তবে গত কোরবানির ঈদের চেয়ে এবার কম হচ্ছে। শুক্রবার ছুটির দিন ক্রেতা কিছু বাড়লেও বৃহস্পতিবার ক্রেতা আরও কম ছিল।
মার্কেটের ফ্যাশন ফেব্রিকস, তিশা ফ্যাশন, মেহেদী ফ্যাশন, এলিগেন্ট পাঞ্জাবি, পারফেক্ট ফ্যাশন, দিদার ফ্যাশন, অবাক গার্মেন্ট, ভি ওয়্যার, রাজু গার্মেন্ট, সুরমা গার্মেন্ট, হাজী মহসীন গার্মেন্ট, আজিজ প্যান্ট হাউসসহ বেশ কয়েকটি দোকানের বিক্রেতার মুখে একই কথা।
তবে শিশুদের পোশাকের দোকানে ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। মার্কেটের তাসীন ফ্যাশনে ঢুকতেই চোখে পড়ে এক ক্রেতার সঙ্গে দামাদামি করছেন তাসীন ফ্যাশনের মালিক নবাব আলী খান। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন একেবারেই ক্রেতা ছিল না। গতকাল জুমার নামাজের পর কিছু ক্রেতা এসেছেন।
নিজের সন্তানের জন্য জামা কিনতে আসা আজিমপুরের বাসিন্দা ইমাম হাসান বলেন, এবারের ঈদে নিজের জন্য জামাকাপড় কিনছি না। কারণ, এবার গরুর দাম গতবারের চেয়ে বেড়েছে। ফলে নিজেদের পোশাকের বাজেটে টান পড়েছে। আমি আর স্ত্রী নতুন কাপড় না নিলাম, কিন্তু ছোট বাচ্চাটার জন্য তো নতুন জামা কিনতে হবে।
চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলোতে তেমন ক্রেতা নেই। বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন। দু-একজন ক্রেতা দেখলেই ডাকাডাকি করছেন তারা। মার্কেটের মাহি ফ্যাশন, সানজিদ ফ্যাশন, বিসমিল্লাহ গার্মেন্ট, স্টার পাঞ্জাবি, ভাই ভাই প্যান্ট হাউস, জিন্স মার্টসহ অন্য দোকানগুলোতেও একই চিত্র দেখা যায়। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যায় নূরজাহান মার্কেটে। টি-শার্ট, শার্ট ও গ্যাবাডিন প্যান্টের দোকানে ক্রেতা সমাগম ছিল। মার্কেটের নিচতলায় রয়েছে নারী ও শিশুদের কাপড়ের দোকান। সেখানে শিশুদের জামাকাপড়ের দোকানে ভিড় বেশি ছিল।
সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে গিয়েও ক্রেতা সমাগম কম দেখা যায়। কাপড়ের বড় ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোতে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্রেতাদের উপস্থিতি খুবই কম। ঈদ উপলক্ষে যেমন বেচাকেনা হওয়ার কথা ছিল, তেমনটা হচ্ছে না। দেশী দশের শোরুমে অবস্থিত বাংলার মেলা আউটলেটের ম্যানেজার শহীদুল ইসলাম বলেন, গত বছরের কোরবানির ঈদের চেয়ে এবার বেচাকেনা অর্ধেক।
কাপড়ের ব্র্যান্ড অ্যামব্রেলা নির্দিষ্ট পণ্যে ৩০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। ইয়েলোতে কার্ডে পেমেন্টে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। জেন্টেল পার্কে পাঞ্জাবি, শার্ট ও প্যান্টে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড়। এ ছাড়া স্মার্টেক্স, রিচম্যান, আর্টিসান, ভারগো, জারা, এক্সট্যাসি, মিলান ও ওয়েস্টিনে ছাড়ে পণ্য মিলছে। তবে কোনো ছাড় না দিলেও আড়ং ও ইল্লিয়িনের শোরুমে ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে।
- বিষয় :
- ঈদ বাজার