ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

‘যারা মাদক বেচে-খায় তাগো লাইগা আমগো ক্ষতি হইসে’

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উচ্ছেদ অভিযান

‘যারা মাদক বেচে-খায় তাগো লাইগা আমগো ক্ষতি হইসে’

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও টিএসসিতে গড়ে ওঠা অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকানপাটসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে গুড়িয়ে দিচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশন। ছবি: সমকাল

হাসানুর আরিফীন

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫ | ১৭:৩৫ | আপডেট: ১৫ মে ২০২৫ | ১৭:৩৬

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও টিএসসিতে গড়ে ওঠা অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকানপাটসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে গুড়িয়ে দিচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিলাল টিম। ইতোমধ্যে কয়েকশো দোকানপাট-স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান এখনো চলছে।

হঠাৎ উচ্ছেদের শিকার হয়ে বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার দোকানীরা। সাংবাদিকদের পেয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানান। উচ্ছেদ অভিযানে দোকান হারানো হাবিব নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমকালকে বলেন, ‘যারা মাদক বেচে, মাদক খায় তাগো লইগা আমগো ক্ষতি হইসে। ৫ আগস্টের পর শুধু সেনাবাহিনী একবার মাদকসেবীদের ধরসে, পুলিশ কিচ্ছু করে নাই। এহন যা হইল এতে আমগো ক্ষতি।’
 
জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে এই উচ্ছেদ অভিযান। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক এলাকা দিয়ে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।

অভিযান শুরুর সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এস্টেট ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) ফাতেমা বিনতে মুস্তাফা উপস্থিত ছিলেন। উচ্ছেদ অভিযানের পর তা কতদিন স্থায়ী থাকবে জানতে চাইলে সমকালকে এস্টেট ম্যানেজার বলেন, ‘এতদিন নানান সময় উদ্যোগ নিলেও সবার সহযোগিতা পাইনি। এখন সবার সহযোগিতা পাচ্ছি। সরকারের সহযোগিতা আছে, মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা আছে, শিক্ষার্থীসহ সকলের সহযোগিতা নিয়ে পরিবেশ ঠিক রাখা হবে। আপনারাও দেখবেন।’

প্রসঙ্গত গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য নিহত হন। এই ঘটনার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচনার মুখে উদ্যানের নিরাপত্তা জোরদারের উদ্যোগ হিসেবে আজ সকাল থেকে উদ্যানে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

আজ সরেজমিন দেখা যায়, উদ্যানে থাকা অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকানপাটসহ স্থাপনা চারটি বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হচ্ছে এবং সিটি কর্পোরেশনের একাধিক ট্রাকে সেগুলো উঠানো হচ্ছে। উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য সহযোগিতা করছেন।

উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নেতৃত্বে গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ থানার পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছি। এটি একটি জাতীয় উদ্যান। নারী-পুরুষনির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে, নিরাপদে চলাফেরা করতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যেই আমাদের এই অভিযান। এখানে যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে, আমরা উচ্ছেদ করে দিয়েছি।’

আরও পড়ুন

×