হানিফ ফ্লাইওভারে বাইককে বাসের ধাক্কা, প্রাণ গেল দু'জনের

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২১ | ০৯:৩৪
রাজধানীর ওয়ারীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহীসহ দু'জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- নারায়ণগঞ্জের ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট আকতার হোসেন বাবু (৩৭) ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্য মফিজুল ইসলাম (৪০)।
শনিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক কিছু সময়ের ব্যবধানে দু'জনকেই মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনায় দায়ী বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ। তবে পালিয়ে গেছেন চালক।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা নেওয়া হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে প্রয়োজনীয় আলামত। ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হচ্ছে। পলাতক বাসচালককে দ্রুতই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে আজিমপুরের বাসায় ফিরছিলেন আকতার হোসেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওয়ারীর জয়কালী মন্দির এলাকায় তার মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় জৈনপুর পরিবহনের একটি বাস। এতে তিনি মোটরসাইকেলসহ ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। এ সময় তার মোটরসাইকেলের আঘাতে মারাত্মক আহত হন সেখানে দায়িত্ব পালনরত কমিউনিটি পুলিশ সদস্য মফিজুল ইসলাম। তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে সোয়া ৫টার দিকে চিকিৎসক আকতারকে মৃত ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর চিকিৎসাধীন মফিজুলও মারা যান।
আকতার ও মফিজুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে কর্মরত কমিউনিটি পুলিশ সদস্য বদরুল ইসলাম জানান, আকতার মোটরসাইকেলসহ গিয়ে মফিজুলের ওপরে পড়েন। দু'জনের আঘাতই ছিল গুরুতর। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
নিহত আকতার হোসেনের মামাশ্বশুর আবদুল আজিজ জানান, আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টারে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন আকতার। তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমীন ঢামেক হাসপাতালের স্টাফ নার্স। ঘটনার সময় আকতার নারায়ণগঞ্জের কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছিলেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে তাকে মৃত অবস্থায় পান স্বজনরা। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলায়। আকতার-ফরিদা দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে।
এদিকে আকতারের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঢামেক হাসপাতালে উপস্থিত হন তার স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা। এ সময় তাদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। নিহতের স্ত্রী ফরিদা কাঁদতে কাঁদতে বারবার অচেতন হয়ে পড়ছিলেন। জ্ঞান ফিরেই তিনি স্বামীকে দেখতে চাচ্ছিলেন। অপর স্বজনরা এ সময় তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য দু'জনের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। নিহত মফিজুল মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতেন। তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।