প্রতারণা চক্রে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যরা
পুলিশের এসবি পরিচয়ে প্রতারণা চক্রের ৯সদস্য গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৪ | ১৬:৫৯ | আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ | ১৭:৩৮
পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা ও নিরাপত্তা প্রহরী আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় আগারগাঁও কেন্দ্রিক সক্রিয় রয়েছে একটি প্রতারক চক্র। কেউ পাসপোর্ট করতে অফিসে কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর এসব তথ্য চলে যেত চক্রের হাতে। পাসপোর্ট অফিস থেকে সরবরাহ করা তথ্য ধরে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) অফিসার পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে ফোন করতেন। এরপর প্রাথমিক তথ্য যাচাই শেষে ভেরিফিকেশনের কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
এসবি অফিসার পরিচয়ে প্রতারণার চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রথম ধাপে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— কাজী মো. বেলাল হোসেন, জসিম উদ্দিন, আল-আমিন গাজি ও হাসান আহম্মেদ। তাদের এক দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি পাঁচ নাম আসে। পরে গত রোববার সোহাগ আলম, হোসাইন মোল্লা, নুরুজ্জামান মিয়া, মামুনুর রহমান ও রাসেল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (দক্ষিণ)।
এ বিষয়ে সোমবার রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর–রশীদ। এতে উপস্থিত ছিলেন, ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের উপকমিশনার শহিদুল ইসলাম ও অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ।
তিনি বলেন, এ প্রতারক চক্রটি পাসপোর্ট অফিসের অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারীর, পিয়ন ও আনসার সদস্যের যোগসাজশে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে। পরে আবেদন ফরমে দেওয়া মোবাইল নম্বরে এসবি অফিসার পরিচয় দিয়ে আবেদনকারীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে বলেন। পরে প্রতারণার মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল।
হারুন অর–রশীদ বলেন, এ বিষয়ে এসবি’র পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন শাখা সবুজবাগ থানায় করা একটি মামলার তদন্তের সূত্র ধরে চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। তারা ভুয়া নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিমকার্ড সংগ্রহ করে পুলিশের ছবি ও নাম ব্যবহার করে ট্রু–কলারে সেইভ করত। আবেদনকারীকে ফোন দিলে নামসহ পুলিশের পোশাক পরা ছবি দেখাতেন। আবার ভুয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ লোপাট করতেন।
ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ জানান, গ্রেপ্তার বেলালের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা রয়েছে। এছাড়া অন্য আসামিদের নামেও একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের সবুজবাগ থানায় পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাদের পাঁচজনকে পরে রিমান্ডে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।