ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে

ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫ | ০০:৫১
পোশাক ক্রেতাদের সঙ্গে সরকার নিবিড় যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। তিনি বলেন, শীর্ষ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে প্রতি মাসে বৈঠক হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে ‘এলডিসি উত্তরণ: কৃষি খাতে প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইআরএফ ও বাংলাদেশ এগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএএমএ) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি দৌলত আকতার মালা। সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও বক্তব্য দেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ এগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএমএ) সভাপতি কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, খুবই লজ্জাজনক বিষয় যে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থায় (আইএলও) কনভেনশনে সই করার পরও শ্রম পরিবেশ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড থেকে অনেক নিচে। এ বিষয়ে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। এটি এমন একটি পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, সমাধান না হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। এ মামলা সমাধানের জন্যও কাজ করছে সরকার, যাতে আন্তর্জাতিক শ্রম মান বজায় রেখেই পোশাক শিল্প এগিয়ে যেতে পারে।
অর্ডারসহ নানা ইস্যুতে পোশাক খাতের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা পোশাক ক্রেতাদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি। শীর্ষ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে প্রতি মাসে বৈঠক হচ্ছে। এর আগে সরাসরি ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক হতো না। এ ধরনের উদ্যোগের ফলে দেশের পোশাক রপ্তানি আয় বেড়েছে।’
সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে প্রতিযোগিতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘সন্দ্বীপের ফেরি উদ্বোধনেও সিন্ডিকেটের প্রভাব দেখা গেছে। আমরা চাই, এ ধরনের সিন্ডিকেটতন্ত্র থেকে মুক্তি পাওয়া। এটি অর্থনৈতিক সংস্কারেরই অংশ এবং সে লক্ষ্যেই কাজ হচ্ছে। বিনিয়োগ পরিবেশ সহজ করতে আগামী মাসের মধ্যেই ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ চালু করা হবে। তিনি আরও বলেন, বাজার অর্থনীতিকে কার্যকর করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও গতিশীল করা জরুরি। সরকারি প্রশাসনের মধ্যেই ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এক মন্ত্রণালয় থেকে অন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালির মাধ্যমে কাজ দীর্ঘায়িত না হয়।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন আমাদের জন্য সময়সাপেক্ষ বিষয় নয়, বরং এটি একটি অনিবার্য প্রক্রিয়া। আমাদের এখন ওয়ান বাংলাদেশ ধারণা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। সরকার, ব্যবসায়ী ও সমাজের সব স্তরের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করে প্রকৃত উন্নয়নের দিকে এগোতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা শুধু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের বৈঠকই নয়, বরং চীনের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গেও বিশেষভাবে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, ড. ইউনূস চান বাংলাদেশকে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত করতে। কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য তিনি কাজ করছেন। কিছু বাধা রয়েছে, সেগুলো কীভাবে দূর করা যায়, সেই পরিকল্পনাও চলছে।
- বিষয় :
- পোশাক খাত