চলমান ঋণের সীমাতিরিক্ত পরিশোধ ছাড়া নবায়ন নয়
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার

.
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫ | ২৩:৪৯
চলমান ঋণের সীমাতিরিক্ত অংশ সমন্বয় না করে নবায়ন করছে ব্যাংক। অনেক সময় বাড়তি অংশ পরিশোধ না করে আলাদা ঋণ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে চলমান ঋণের এক টাকাও পরিশোধ না করে খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ পাচ্ছে গ্রাহক। গতকাল এক সার্কুলারের মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে চলমান ঋণের সীমাতিরিক্ত অংশ পরিশোধ না করে অন্য কোনো
উপায়ে নবায়ন করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, চলমান ঋণ পরিশোধ না করে নিয়মিত থাকার সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, কোনো
একটি ব্যবসায়ী গ্রুপ হয়তো ১ হাজার কোটি টাকার ঋণসীমা নিয়েছে। মূলত ব্যবসায়ী প্রয়োজনে নির্ধারিত সীমার মধ্যে তিনি পরিশোধ করবেন, ঋণ নেবেন– এটা নিয়ম। বছর শেষে পুরো ঋণ সমন্বয় করবেন
কিংবা নির্ধারিত সীমার আলোকে পরিশোধ করবেন। তবে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী তা না করে বছর শেষে হয়তো সুদসহ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। তখন বর্ধিত অংশ আলাদা একটি ঋণে রূপান্তর করে পুরোটা নবায়ন করে নিচ্ছে। কিংবা ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার নতুন সীমা অনুমোদন করিয়ে নিচ্ছে। এর ফলে এক টাকা না দিয়ে তার ঋণ নিয়মিত থাকল।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলমান ঋণ বিদ্যমান মেয়াদের মধ্যে নবায়ন করতে হবে। তবে ঋণের সীমাতিরিক্ত অংশ সমন্বয় ছাড়া নবায়ন করা যাবে না। চলমান ঋণের সীমাতিরিক্ত অংশ মূল ঋণ থেকে আলাদা করে নতুন ঋণ সৃষ্টি বা অন্য কোনো ঋণ হিসাবে স্থানান্তর করা যাবে না। সীমাতিরিক্ত অংশ পরিশোধ করতে হবে।
বিগত সরকারের সময়ে ঋণ শ্রেণীকরণ নীতিমালায় শিথিলতা ছিল। গত আগস্টের পর কঠোরতা আরোপ করা হয়। চলতি বছরের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। এর মানে, গত ১৫ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে প্রায় ৩ গুণ হয়েছে। নতুন নীতিমালার ফলে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে বলে মনে
করেন সংশ্লিষ্টরা।
- বিষয় :
- বাংলাদেশ ব্যাংক