ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

টিএসসি যেন ত্রাণের নগরী

ক্ষণে ক্ষণে টিএসসিতে ত্রাণ নিয়ে আসছে মানুষ

ক্ষণে ক্ষণে টিএসসিতে ত্রাণ নিয়ে আসছে মানুষ

ত্রাণসামগ্রী প্যাকেজিং করে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায়। ছবি সমকাল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক 

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪ | ২২:১৫ | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪ | ২২:১৫

মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, ‘চলাচলের রাস্তায় ভিড় করবেন না, শৃঙ্খলা বজায় রাখুন’। আর কিছুক্ষণ পর পর প্রাইভেট কার, ট্রাক, ঠেলাগাড়ি এসে দাঁড়াচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির প্রধান প্রবেশপথে। গাড়ি থেকে নামানো হচ্ছে ভর্তি বন্যার্তদের জন্য শুকনো খাবার, খেজুর এবং পানি।

প্রবেশপথের পাশে ‘সারা দেশের বন্যায় আক্রান্তদের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে গণ ত্রাণ সংগ্রহ বুথ বসানো হয়েছে। সেখানে তালিকাভুক্ত করে ত্রাণ রাখা হচ্ছে টিএসসির অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া কক্ষে। সেখানে প্যাকেজিং করে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায়। এগুলো পৌঁছানো হবে বন্যা কবলিত এলাকায়। অনেকে নগদ অর্থ সহায়তাও করছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলেছে। আবার শুক্রবার সকাল দশটা থেকে এটি শুরু হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজগুলো করছেন। এর আগে বুধবার রাতে বন্যার্তদের সহযোগিতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণত্রাণ সংগ্রহের ডাক দেয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বুথের স্বেচ্ছাসেবকরা জানিয়েছেন, সারাদিনে নগদ অর্থ সংগ্রহ হয়েছে চৌদ্দ লক্ষ ষাট হাজার একশো তিয়াত্তর টাকা।

এ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগে-হলে শিক্ষার্থীদের নিজ উদ্যোগে বন্যার্ত মানুষের জন্য ফান্ড সংগ্রহ, শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় জামা-কাপড় সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।

এ দিকে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার রাত সোয়া আটটার দিকে জানিয়েছেন, ত্রাণ সহায়তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ফান্ড উত্তোলনের জন্য বিকাশ/রকেট/নগদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট চালু করা হয়েছে। ০১৮৮৬৯৬৯৮৫৯(রকেট লেনদেনের জন্য +৭) নম্বরে অর্থ সহায়তা দেওয়া যাবে।  

সরেজমিন দেখা যায়, শুকনো খাবার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে টিএসসিতে আসছেন লোকজন। মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট, স্যালাইন খেজুরসহ সামর্থ্য অনুযায়ী শুকনা খাবার ত্রাণ জমা দিচ্ছেন তারা। কেউ স্যানিটারি ন্যাপকিন দিচ্ছেন। আবার কেউ নগদ অর্থ দিচ্ছেন। 

টিএসসিতে ত্রাণ সংগ্রহ কেন্দ্রে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বন্যায় দুর্গতদের জন্য প্রথমে উদ্ধার কার্যক্রম করা দরকার। শিক্ষার্থীরা অনভিজ্ঞ। আমি ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ বন্যা-কবলিত জেলার গুলোর ডিসিদের বলতে চাই আপনারা আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন।

হাসনাত বলেন, বাংলাদেশ পুনর্গঠন চলছে, এ মুহূর্তে বাঁধ খুলে দিয়ে ভারত সংকট তৈরি করতে চাচ্ছে। ভারত আপনারা সতর্ক হোন। আমাদের পিঠ দেখানোর দিন শেষ। এখন বুক দেখানোর দিন চলে এসেছে। আমাদের সঙ্গে যে ধরণের আচরণ করবেন আপনাদের সঙ্গেও অনুরূপ আচরণ করা হবে। বর্তমানের আচরণই নির্ধারণ করবে ভবিষ্যৎ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক কেমন হবে।

আরও পড়ুন

×