ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

এখনকার গান তুমি আমিতে ঘুরাপাক খাচ্ছে: শিবলী

এখনকার গান তুমি আমিতে ঘুরাপাক খাচ্ছে: শিবলী

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২২ | ০৪:১৮ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২২ | ০৪:১৮

‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘কেউ সুখী নয়’, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’, ‘নীল বেদনা’, ‘আহা জীবন’, ‘একটা চাকরি হবে চাঁদমামা, ‘জেল থেকে বলছি’, ‘গিটার কাঁদতে জানে’, ‘প্রিয় আকাশী’-এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গীতিকার লতিফুল ইসলাম শিবলী। চার বছর পর তিনি ফিরলেন 'ঘুরে দাঁড়ানোর গান' নিয়ে। সম্প্রতি তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে এটি প্রকাশ পেয়েছে। নতুন এ গান ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে-

কোন ভাবনা থেকে চার বছর পর 'ঘুরে দাঁড়ানোর' গানটি লিখেছেন?

বর্তমানে অস্থির সময় চলছে। খেয়াল করে দেখলাম, কোথাও কোনো সুখবর নেই, চারদিকে শুধু হতাশা! রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক অথবা ব্যক্তিজীবন- সবকিছুতেই নেমে এসেছে বিপর্যয়। মানুষ অধিকারবঞ্চিত হচ্ছে। এসব থেকে বাঁচার জন্য মানুষ নিজেকে নিজেই হত্যা করছে। মানুষকে তো ঘুরে দাঁড়াতে হবে। সেই বোধ থেকেই আবারও গান লেখা এবং প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। বলতে পারেন, গানে সময়কে তুলে ধরেছি। এটি এই সময়ে বিদ্রোহের গান। শিল্পী হিসেবে আমার কাজ হলো সময়কে তুলে ধরা। গানের মাধ্যমে সেটাই করছি।

গানে এই দীর্ঘ বিরতির কারণ কী?

যতদূর মনে পড়ে, চার বছর আগে শেষবার গানের কাজ করেছি। মাঝের এই সময়টায় লেখালেখি নিয়েই ব্যস্ত সময় কেটেছে। বেশ কয়েকটি উপন্যাস লিখেছি।

এখন থেকে কি নিয়মিত গানের ভুবনে পাওয়া যাবে?

হ্যাঁ, সে রকমই কিছু ভাবছি। এখন থেকে লোখালেখির পাশাপাশি গান আবারও করব। নবীন শিল্পীদের নিয়ে প্রতিনিয়তই নতুন গান প্রকাশের পাশাপাশি নিজেরও কিছু গান গাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। গানগুলো নিজের ইউটিউব চ্যানলে প্রকাশ করা হবে। প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীরা ভালো গান করছেন। যেমন ধরুন, ঘুরে দাঁড়ানোর গানটি রাজীব করেছেন। তাঁকে এই সময়ে বেস্ট রকার মনে হয়েছে। রক গানের জন্য তাঁর গলা জুতসই। এ রকম আরও অনেক শিল্পীকে নিয়ে গান করব।

আপনার 'দখল' উপন্যাসটি নিয়ে একটি ওয়েব সিরিজ হওয়ার কথা ছিল...

বেশ কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে কথা হয়েছিল, কিন্তু ব্যাটে বলে মেলেনি। সবাই খুব কম খরচে সবকিছু নির্মাণ করতে চায়। সস্তায় কিছু দিতে চাই না। দেখা যাক কী হয়।

এখনকার গানের কথা শ্রোতার হৃদয়ে দাগ কাটছে না। এ রকম কথা অনেকেই বলছেন। আপনি কী মনে করেন?

এখন দ্রোহের সময়। সামাজিক বৈষম্য, ক্ষতসহ গান লেখার অনেক বিষয় আছে। যাঁরা এখন গান তৈরি করেন তাঁরা এ অসংগতির দিকে তাকাচ্ছেন না। ফলে গান 'তুমি', 'আমি' এর মধ্যে ঘুরাপাক খাচ্ছে। প্রেম আর কত! এত এত প্রেম, লক্ষ লক্ষ প্রেমের মধ্যে কোনো প্রেমকে আলাদা মনে হচ্ছে না। লেখা হচ্ছে এক ধরনের তাড়না। লেখক লিখবেনই। তাঁকে পয়সা দিলেও লিখবেন, না দিলেও লিখবেন। জেলে বন্দি কিংবা বন্দুকের মুখেও তিনি লিখবেন। হতাশার কিছু নেই। সৃষ্টিশীলতা হচ্ছে সিলেকশন অব ন্যাচার। প্রকৃতি ঠিক করবে কে টিকে থাকবে আর কে থাকবে না। সবাই লিখতে থাকুন। দিন শেষে প্রকৃতির নির্বাচনই জয়ী হবে। প্রতিভা অনুযায়ী সে জায়গা করে নেবে। আমি সবকিছুকেই স্বাগত জানাই। কাজ হোক। এর মধ্য থেকেই ভালো জিনিস কালোত্তীর্ণ হয়ে যাবে।

সংস্কৃতির প্রায় সব শাখায় আপনার বিচরণ। কোন পরিচয়ে স্বাচ্ছন্দ্য?

নিজেকে কবি ভাবতেই পছন্দ করি। কাব্যময়তা না থাকলে গান, সুর, গল্প, কবিতা, উপন্যাস- কোনো কিছুই হবে না। আমি মনে করি, যার ভেতরে কবিতা আছে তার ভেতরে সৃজনশীলতার সব শাখাতেই বিচরণ সহজ।

সংগীতের এই সময়কে আপনি কীভাবে দেখছেন?

এখনকার গান জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তবে গুণগতমান নিয়ে গান তৈরি হচ্ছে না। অনেক সস্তা জিনিস জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এগুলো কত দিন টিকে থাকবে, তা আসলে সময়ই বলে দেবে। তবে হতাশার কিছু নেই। কথায় আছে, রাত যত গভীর হবে সকাল তত এগিয়ে আসে।





আরও পড়ুন

×