ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

ছয় বছর পর ফেরা, ভয় কেটেছে আইশার

ছয় বছর পর ফেরা, ভয় কেটেছে আইশার

আইশা খান। ছবি: ফেসবুক

এমদাদুল হক মিলটন

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | ১৬:২২

অভিনেত্রী ও মডেল আইশা খানের প্রথম সিনেমা ছিল ‘আহত ফুলের গল্প’। এটি মুক্তি পায় ২০১৭ সালে।  ছয় বছর পর ‘ভয়াল’ সিনেমা দিয়ে বড়পর্দার বিরতি ভেঙেছেন তিনি।

আইশা বলেন, ‘বেশ বিরতির পর অসাধারণ গল্পের সিনেমা দিয়ে ফিরতে পেরে ভালোই লাগছে। আমিও চাইছিলাম এমন একটি সিনেমা দিয়ে আমার বিরতি ভাঙ্গুক। সাধারণত দেখা যায়, বাণিজ্যিক ছবিতে নারীকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না, এ ছবিতে শুধু আমাকেই নয়,যত নারী চরিত্র আছে, সবারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। ছবির বিশেষ দিক সম্পর্কে বললেন আইশা।

তাঁর ভাষ্য, ‘মুক্তির আগেই বাংলাদেশের সিনেমার ইতিহাসে বিপ্লব হায়দারের সিনেমাটি জায়গা করে নিয়েছে। পুরোনো সেন্সর বোর্ড ভেঙে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই বোর্ডের দেখা প্রথম ছবি এটি। তারা ‘এ’ গ্রেডে ছাড়পত্র দিয়েছে ছবিটিকে। অর্থাৎ এটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। সেই হিসেবে দাপ্তরিকভাবে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রথম সিনেমা এটি।

ফিরে দেখা
শ্রীমঙ্গলের আজমপুরের একেবারে ভেতরে একটি খাসিয়াপল্লিতে শুটিং হয়েছে ‘ভয়াল’ সিনেমার। নেটওয়ার্কের বাইরে ছিল ওই পল্লি। এ কারণে শুটিংয়ে নানা নানা অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে আইশা খানকে। প্রায় দুই সপ্তাহ নেটওয়ার্কবিহীন জীবন কাটিয়েছেন ইউনিটের সবাই।

আইশা খান বলেন, ‘‘নেটওয়ার্কবিহীন জীবন কাটানোর অভিজ্ঞতা প্রথম ‘ভয়াল’ সিনেমার শুটিংয়ে হয়েছে। নিজের পরিবারের লোকদের সঙ্গেও ঠিকঠাক যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। এলাকাটি ছিল দুর্গম। একদম পাহাড়ের উঁচুতে উঠলে মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া যেত। মাঝে দুই দিন বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকায় একদমই যোগাযোগ রাখতে পারিনি। শুটিংয়ে বেশ কষ্ট করেছি। দর্শকদের সিনেমাটা ভালো লাগলে সব কষ্ট সার্থক হবে।’’ 

দর্শকের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি
‘ভয়াল’ সিনেমার মুক্তির তারিখ অনেক দিন আগ থেকেই নির্ধারিত ছিল। সিনেমা মুক্তির দুই সপ্তাহ আগে থেকে প্রচারণার জন্য দিকে দিকে ছুটছিলেন আইশা খান। ‘ভয়াল’ টিমের সঙ্গে কখনও কখনও টেলিভিশন চ্যানেল, কখনও পত্রিকা অফিসে। প্রচারণার মধ্যে দীর্ঘ বিরতির পর ছবি মুক্তি, নিজেকে আবারও বড়পর্দায় দেখা, দর্শক কীভাবে গ্রহণ করবেন– এসব ভাবনায় ডুবে ছিলেন আইশা। শুক্রবার রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সে বিকেল ৪টায় তিনি ‘ভয়াল’ সিনেমাটি দেখেছেন। হলভর্তি দর্শক দেখে, তাদের মুখে নিজের অভিনয়ের প্রশংসা শুনে রোমাঞ্চিত এ অভিনেত্রী। সিনেমা মুক্তির পর ভয়, শঙ্কা অনেকটা কেটে গেছে তাঁর।

আইশা খান বলেন, ‘কোনো কোনো দৃশ্যে দর্শক যখন করতালি দিচ্ছেন, অবাক হচ্ছি। নিজের কাছে শান্তি শান্তি লাগছে। সিনেমা দেখে বেরিয়ে আসছি যখন, দর্শকেরা ঘিরে ধরে আমাদের সঙ্গে ছবি তুলছেন। এরপর তাদের কাছে যখন জানতে চাইছি কেমন লেগেছে? উত্তরে সবাই একসঙ্গে চিৎকার করে বলছেন, ভালো ভালো। 

তখন কী যে খুশি লেগেছিল তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। দর্শকদের প্রতিক্রিয়া কী? জানতে চাইলে আইশা বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন, আমি ন্যাচারাল অভিনয় করতে পেরেছি।’ আর নিজের কাছে? এবার তিনি বলেন, ‘দেখার পর মনে হয়েছে আরও ভালো করতে পারতাম। বুঝতে পারছি, চেষ্টাটা আরও বাড়াতে হবে।’ 

হাতে থাকা সিনেমা 
কয়েক মাস আগে প্রসূণ রহমানের ‘শেকড়’ সিনেমার কাজ শেষ করেছেন তিনি। পাশাপাশি সোহেল আরমানের ‘সংবাদ’ সিনেমার কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্মাণ স্থগিত হয়ে আছে। কবে আবার কাজ শুরু হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তিনি। ‘শেকড়’ সিনেমা নিয়ে আইশা বলেন, আলাদা কিছু যেমন করতে চেয়েছি, তেমনি এও চেয়েছি নিজের যা ভালো লাগবে সেটিকে প্রাধান্য দিতে। ‘শেকড়’ সিনেমায় অভিনয়ের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ আছে। প্রথম কারণ, এ সিনেমায় গল্প ও ফাগ্লুনী চরিত্রটি ভালো লেগেছে। সবকিছু মিলিয়ে কাজটি দর্শকের ভালো লাগবে–এ আশা করাই যায়। 

উপস্থাপনার জগৎ
একসময় উপস্থাপনায় বেশ দেখা যেত আইশা খানকে। ইদানীং উপস্থাপনায় অনিয়মিত তিনি। অভিনয় ব্যস্ততায় উপস্থাপক আইশা হারিয়ে যাচ্ছে বলে কী কখনও মনে হয়? এমন প্রশ্ন ছিল আইশা খানের কাছে। তাঁর ভ্যাষ্য, ‘আমি কখনোই পর্দার নিয়মিত মুখ হতে চাইনি। এ জন্যই উপস্থাপনাটা নিয়মিত করছি না। তবে মাঝে মধ্যে উপস্থাপক আইশার দেখা পাবেন– এটুকু আশ্বাস দিতে পারি।’

আরও পড়ুন

×