ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির জবাবে ‘সম্মানের’ আহ্বান ইউরোপীয় ইউনিয়নের

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির জবাবে ‘সম্মানের’ আহ্বান ইউরোপীয় ইউনিয়নের

ইইউর বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকভিস

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫ | ১২:৩৫ | আপডেট: ২৪ মে ২০২৫ | ১৩:০৭

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক সম্পর্ক ও আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য চুক্তি চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইইউ।

ইইউর বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকভিস জানান, ইইউ পুরোপুরি আলোচনায় নিয়োজিত। ইইউ এমন একটি চুক্তি করতে চায় যা উভয় পক্ষের জন্যই কার্যকর হবে। ইউরোপ-আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক অনন্য। এই সম্পর্ককে হুমকি নয়, বরং পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত।

এর আগে শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চলমান আলোচনা আশানুরূপ না হওয়ায় ১ জুন থেকে উচ্চ হারে শুল্ক কার্যকর করা হবে।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, আমাদের আলোচনা এগোচ্ছে না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউরোপীয় কোনো কোম্পানি বড় বিনিয়োগ করলে, শুল্ক আরোপে কিছুটা নমনীয়তা দেখাতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করেছে এবং আমেরিকা থেকে কিনেছে ৩৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।

ট্রাম্পের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় দেশগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেন, এই পথে আমাদের যেতে হবে না। আলোচনাই একমাত্র টেকসই পথ।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা উত্তেজনা কমাতে চাই, তবে প্রয়োজনে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত।

জার্মানির অর্থমন্ত্রী ক্যাথেরিনা ঘাইচা বলেন, আমরা যা কিছু সম্ভব তা করব যাতে ইউরোপীয় কমিশন একটি আলোচনাভিত্তিক সমাধানে পৌঁছাতে পারে।

নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ বলেন, আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য কৌশলের পক্ষে এবং আগেও দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় শুল্ক কমবেশি হতে পারে।

উল্লেখ্য, এপ্রিলের শুরুতে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিকাংশ পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেন। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি সেটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন (৮ জুলাই পর্যন্ত) এবং আপাতত ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রাখেন।

ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্যহীন—ইইউ আমেরিকার চেয়ে অনেক বেশি পণ্য রপ্তানি করে। তিনি গাড়ি ও কৃষিপণ্যের বাণিজ্যনীতি নিয়ে বিশেষভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এছাড়াও, আমেরিকায় তৈরি না হলে অ্যাপলের আইফোনের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প। পরে তিনি বলেন, এই শুল্ক যেকোনো স্মার্টফোনে প্রযোজ্য হতে পারে।

ট্রাম্পের সর্বশেষ হুমকির পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৭ শতাংশ কমে যায়, আর জার্মানির ডিএএক্স ও ফ্রান্সের ক্যাক ৪০ সূচক ১.৫ শতাংশ এরও বেশি পড়ে।

আরও পড়ুন

×