টিপস
ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে যা করতে হবে

লাইজু আক্তার
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৩ | ১৮:০০
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে সবচেয়ে বিরক্তিকর ও বিব্রতকর সমস্যা হলো শরীর থেকে তৈরি হওয়া ঘামের দুর্গন্ধ। অনেক সময় ঘামের দুর্গন্ধ এত বেশি হয় যে অন্যের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করতে বিরক্ত লাগে। অথচ প্রচণ্ড গরমে ঘাম হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু ঘামের সঙ্গে শরীরে তৈরি হওয়া ব্যাকটেরিয়া মিশে এক অসহ্যকর গন্ধের সৃষ্টি করে, যা থেকে পরিত্রাণ সবাই চায়।
২. নিয়মিত গোসল করতে হবে। গোসলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কিছু সাবানে ট্রাইক্লোসানের মতো সম্ভাব্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সে ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি সাবান এবং বডি ওয়াশগুলো ব্যবহার করা শ্রেয়।
৩. গরমে তুলা, সিল্ক বা উলের তৈরি পোশাক বেশ আরামদায়ক। সেই সঙ্গে এ রকম পোশাক ত্বককে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও সহায়তা করে। ফলে শরীরে উৎপন্ন ঘাম দ্রুত বাষ্পায়িত হতে পারে। তাই দুর্গন্ধ কম হয়। তবে অবশ্যই প্রতিবার পোশাক পরার পর ধুয়ে ফেলা উত্তম। যাঁরা ব্যায়াম করেন, তাঁরা পলিয়েস্টার বা নাইলনের মতো কাপড় পরতে পারেন। এ ধরনের কাপড় শরীরকে আর্দ্র রাখে।
৪. গরমের সময় নিয়মিত আর্ম পিট বা বগলের লোম শেভ করতে হবে। আর্ম পিট বা বগলে অ্যাপোক্রাইন গ্ল্যান্ড অনেক বেশি থাকে। ফলে ঘামের উৎপত্তি অনেক বেশি হয়। বগলের লোম জমে থাকা ঘামকে বাষ্পীভূত হতে দেয় না। ফলে ব্যাকটেরিয়া অনেক সময় ধরে দুর্গন্ধ তৈরি করে। তাই নিয়মিত আর্ম পিট শেভ করতে হবে।
৫. ভাজা খাবার এবং অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার অনেক সময় ঘামের গন্ধের কারণ হয়। তাই এ ধরনের খাবার পরিহার করতে হবে। সেই সঙ্গে যেসব খাবারে সালফার থাকে, যেমন– ব্রকলি, ফুলকপি এবং বাঁধাকপি, পেঁয়াজ এবং রসুন এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এগুলো ঘামের দুর্গন্ধকে প্রভাবিত করে। তবে ক্লোরোফিলসমৃদ্ধ শাকসবজি খাওয়া যেতে পারে। কারণ ক্লোরোফিল শরীরে দুর্গন্ধ হয় এমন পদার্থ কম তৈরি করে।
৬. গরমে অনেকের পা ঘেমে যায়। ফলে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে চামড়া বা ফিতাওয়ালা জুতা ব্যবহার করতে পারেন। তবে জুতার সঙ্গে মোজা ব্যবহার করলে প্রতিদিন মোজা ধুতে হবে। এতে দুর্গন্ধ অনেকাংশে কম হবে।
৭. যাঁদের শরীর অতিরিক্ত ঘামে, তাঁরা গরম পানির সঙ্গে নিমপাতা দিয়ে নিয়মতি গোসল করতে পারেন। কারণ, নিমপাতা দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ব্যাহত করে।
৮. গরমে অন্তর্বাস ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। কোনোমতেই ভেজা, আধা শুকনা এমনকি অপরিষ্কার অন্তর্বাস পরা যাবে না। এ রকম অন্তর্বাস দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন করে। তাই প্রতিদিন পরিষ্কার শুকনা অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে। তবে ঢিলাঢালা অন্তর্বাস নির্বাচন করলে ভালো হয়। এতে ত্বকে জমে থাকা ঘাম দ্রুত বাষ্পীভূত হতে পারে।
৯. শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে ডিওডোরেন্ট বা পারফিউম ব্যবহার করুন। বাজারে ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে বিভিন্ন ধরনের পারফিউম আছে; যা পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবেন। তবে পারফিউম ব্যবহারের আগে অবশ্যই শরীর শুকনা আছে কিনা তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
১০. অনেকের শরীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে অতিরিক্ত ঘাম হয়ে থাকে, সেই সঙ্গে দুর্গন্ধও। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্যও দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই মঙ্গলজনক।
- বিষয় :
- ঘাম
- দুর্গন্ধ
- ঘামের দুর্গন্ধ