ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

সুরের ভুবনে সিঁথির পরী

সুরের ভুবনে সিঁথির পরী

সিঁথি সাহা

রাসেল আজাদ বিদ্যুৎ

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৩ | ১৮:০০

জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে কখনও স্রোতে গা ভাসাননি সিঁথি সাহা। অভিনব আয়োজন নিয়েই ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে নন্দিত এ শিল্পীকে। সে কারণেই তিনি হয়ে উঠেছেন তাঁর সময়ের অন্য শিল্পীদের থেকে কিছুটা আলাদা। তাই সিঁথির কাছে শ্রোতার প্রত্যাশাও থাকে ভিন্ন আঙ্গিকের আয়োজনের। সিঁথি নিজেও সেই প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করেন, যার প্রমাণ আবারও পাওয়া গেল হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গে গাওয়া ‘পরী’ গানে।

আগেও এ শিল্পী ও সুরকারের সঙ্গে ‘উড়ে যারে মুনিয়া’ শিরোনামের গান গেয়ে অনেকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তারপরও আলী বাকের জিকোর লেখা ও হাবিবের সুর-সংগীতের ‘পরী’ গানে নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে তুলে ধরার চেষ্টা ছিল এ শিল্পীর। তাই শুরুতেই সিঁথির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, প্রতিনিয়ত নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে গড়ে তোলার এই চেষ্টা কেন? এর জবাবে তিনি বলেন, ‘সৃষ্টির পুনরাবৃত্তি চাই না। তাই প্রতিটি কাজেই নতুনত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি নির্দিষ্ট একটা সময়ের চিহ্ন রেখে দেওয়ার চেষ্টা করি। এতে চেনাজানা এই আমাকেই নতুনভাবে আবিষ্কারের সুযোগ থাকে।’ কিন্তু এভাবে নিরীক্ষায় মেতে উঠলে পরিচিতি বা জনপ্রিয়তা ধরে রাখা কি চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে না?

এর উত্তরে সিঁথি বলেন, “খ্যাতির মোহ নয়, অভিনব সৃষ্টির মধ্য দিয়ে নিজেকে চেনাতে চেয়েছি সবসময়। গুণীজনেরা বলেন, ‘যশ-খ্যাতির মোহে তুমি যদি ছুটে বেড়াও তাহলে দেখবে প্রাপ্তির ঝুলিটা শূন্য থেকে গেছে। তাই সেই কাজই করো, যা শিল্পীসত্তাকে খুশি করবে।’ আমি এ কথা মেনেই পথ চলছি।” তাঁর এ কথায় স্পষ্ট, নান্দনিক উপস্থাপনা প্রাধান্য দেন সবসময়। পেছন ফিরে তাকালে এর প্রমাণ মেলে। দেখতে পাওয়া যায় পাকিস্তানের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী শাফকাত আমানত আলির সঙ্গে ‘রাত জাগা পাখি’ গানটি দিয়ে কীভাবে শ্রোতার হৃদয় স্পর্শ করেছেন। বিস্মিত করেছেন তুরস্কের সংগীতায়োজনে কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ’ কণ্ঠে তুলে নিয়ে।

এ আয়োজনে বড় চমক ছিল গানের শেষাংশে তুরস্কের লোকগান ‘কাটিবিম’-এর দুটি লাইন সংযোজন। রবীন্দ্রসংগীতের জন্য একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া সিঁথি নিজেকে কোনো গণ্ডিতে আটকে রাখতে চাননি। তাই রবীন্দ্রসংগীত সংকলন ‘কিছু বলব বলে’ প্রকাশের পর ভিন্ন ঘরানার গানে কণ্ঠ ছড়িয়ে দিয়েছেন। বাদ পড়েনি লোকগানও। সিঁথির কথায়, “যে গান আমাদের শিকড়কে চেনায়, তা থেকে দূরে সরে থাকার কথা ভাবতে পারিনি বলেই কণ্ঠে তুলে নিয়েছি রাধারমণ দত্তের কালজয়ী গান ‘জলের ঘাটে’।” এসব আয়োজনের আগেও ‘কল্পনা’, ‘গল্প পাতায়’, ‘মন বালিকা’সহ গেয়েছেন আরও বেশ কিছু গান; যার মধ্য দিয়ে শ্রোতারা প্রতিবার নতুনভাবে সিঁথিকে আবিষ্কারের সুযোগ পেয়েছেন।

আরও পড়ুন

×