প্রাচীন পেট্রার বিস্ময়

প্রাচীন এই জলাধার পেট্রার বিস্ময়কর স্থাপত্যশলৈীর নিদর্শন
রিফতি-আল-জাবেদ
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০
আরব মরুভূমির উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত প্রাচীন শহর পেট্রা। প্রতি বছর চার ইঞ্চিরও কম বৃষ্টি হয়। তা সত্ত্বেও নাবাতিয়ান রাজ্যের রাজধানী হিসেবে (খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দী থেকে প্রথম খ্রিষ্টাব্দ), শহরটি এই সামান্য বৃষ্টিপাত এবং আশপাশের পাহাড়ের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঝরনা থেকে জল সঞ্চয় করার মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়েছিল। এক অসামান্য স্থাপত্যশৈলীতে তা সম্ভব হয়েছিল।
এই পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক একটি স্মারক ছিল একটি বাগান ও জলাধার। ১৯৯৮ সাল থেকে পেন স্টেট এরির বেহেরেন্ড কলেজের প্রত্নতাত্ত্বিক লেই-আন বেডালের নেতৃত্বে একটি দল খনন করছে। শহরের মাঝখানে একটি খোলা জায়গাকে প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রথমে বাজার বলে মনে করেছিলেন। পরে তারা জলাধারের প্রমাণ পান। এটি দৈর্ঘ্যে ১৫০ ফুট, প্রস্থে ৭৫ ফুট আর গভীরতা ছিল ৮ ফুট। এর মধ্যভাগে একটি ৩৩ ফুট দীর্ঘ ও ৪৬ ফুট মণ্ডপের মতো জায়গা ছিল, যার চারধারে ছিল পানি। এটি আমদানি করা দামি মার্বেল এবং স্টুকো চিত্রশিল্প দিয়ে সাজানো ছিল। স্টুকো হলো একটি নির্মাণসামগ্রী, যেখানে জলছাপের মতো শিল্পকর্ম অঙ্কন করা যায়। সে সময়ে এটি দেয়াল বা ছাদে ভাস্কর্য ও শিল্পের উপাদান বা আলংকারিক আবরণ হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
বেডালের মতে, ওই মণ্ডপটি ভোজ বা গোপন আলোচনার জন্য একটি আদর্শ স্থান। চার দিকেই দরজা ছিল, যাতে সেখানে কেউ প্রবেশ করলে দেখা যায়। জলাশয়ে পানি পড়ার শব্দ এটিকে যেমন প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত করে, তেমনি অতিরিক্ত গোপনীয়তা প্রদান করে। জলাধারটি নাবাতিয়ান রাজা আরেটাস চতুর্থের (রাজত্বকাল খ্রিষ্টপূর্ব ৯ থেকে ৪০ খ্রিষ্টাব্দ) শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল এবং ১০৬ খ্রিষ্টাব্দে রোমানরা পেট্রাকে অধিভুক্ত করার পরও এ স্থাপনার ব্যবহার অব্যাহত ছিল। তবে এক শতাব্দীর মধ্যে রোমানরা এর রক্ষণাবেক্ষণকে অবহেলা করতে শুরু করে। এটি মাটি ও ধ্বংসাবশেষ যেমন মৃৎপাত্র এবং পশুর হাড় দিয়ে ভরাট হতে শুরু করে। কীভাবে মরুভূমিতে প্রাণ জাগিয়েছিলেন তৎকালীন প্রযুক্তিবিদরা– আজও পেট্রার স্থাপত্যশৈলী সম্পর্কে জানলে বিস্মিত ও মুগ্ধ হতে হয় গবেষকদের। v
- বিষয় :
- মরুভূমি
- পেট্রা
- প্রাচীন শহর