ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

হা-মীম সমকাল মেধাবৃত্তি

অদম্য মেধাবীদের পাশে

অদম্য মেধাবীদের পাশে

সমকাল সভাকক্ষে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথি ও সুহৃদদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা।

আসাদুজ্জামান

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৩ | ০৬:২৬

শিক্ষাবৃত্তি মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। হয়ে ওঠে নতুন পথের দিশা। সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে মেধার ভিত্তিতে এগিয়ে থাকা এমন অদম্য মেধাবীদের এগিয়ে যাওয়ার গল্প অন্যদের জন্য হয়ে ওঠে অনন্ত অনুপ্রেরণার উৎস। এমন মেধাবী আর্থিক কারণে চোখের সামনে যেন ঝরে না পড়ে, উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে হা-মীম গ্রুপ ও সমকাল শুরু করেছে অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি কার্যক্রম। প্রাথমিকভাবে ছয়জন তরুণ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হলো এ বৃত্তি; যারা সব বাধা পেরিয়ে দেশে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। বৃত্তি পাওয়া ছাত্ররা মানবিক চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে মানুষের প্রয়োজনে ও সেবায় এগিয়ে আসবেন। একইসঙ্গে সেই প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট থাকবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। হা-মীম গ্রুপ ও সমকালের যৌথ এ বৃত্তি কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে সুহৃদ সমাবেশ।

অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর এসএসসি, এইচএসসি ও এর সমমান পরীক্ষায় সাফল্য অর্জনের পর দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের পর উচ্চশিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় অর্থনৈতিক বিষয়টি। তখন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে উচ্চশিক্ষা– এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ কর্মসূচি। অদম্য মেধাবী কিছু শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সন্তানের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বৃত্তিপ্রাপ্তির আবেদন আসে হা-মীম গ্রুপ ও সমকালে। সে আবেদন থেকে যাচাই-বাছাই করে যোগ্য ও প্রাপ্য শিক্ষার্থীদের জন্য অনুমোদন করা হয় মেধাবৃত্তি। প্রাথমিকভাবে মেডিকেলের পাঁচজন ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে এই বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। যারা মাসে ৫ হাজার টাকা করে এক বছর বৃত্তি পাবেন। বছর শেষে শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে চলমান থাকলে পরবর্তী বছরের জন্য অনুমোদন করা হবে। এভাবে আগামী পাঁচ বছর এ বৃত্তি পাবেন তারা। বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন– মেডিকেলের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রহমান শিশির, সাব্বির ইবনে রফিক, মো. অসীম মোল্যা, হাফেজা তাবিয়া জামাল তিথি, লামিসা নাজনীন, প্রিয়া সরকার এবং আইনের শিক্ষার্থী পিনাকি সরকার। এ ছাড়া কয়েক বছর ধরে হা-মীম গ্রুপের বৃত্তি পেয়ে আসছেন এমন শিক্ষার্থীরাও বৃত্তির আওতায় অন্তর্ভুক্ত হবেন।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ ড. গোলাম সোবহানী চৌধুরী (রানা চৌধুরী), হা-মীম গ্রুপের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক জালাল আহমেদ, সমকালের প্রকাশক আবুল কালাম আজাদ ও সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান। সুহৃদ সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় সমকালের সহকারী সম্পাদক হাসান জাকির, সুহৃদ ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ফরিদুল ইসলাম নির্জন, সদস্য মোহম্মদ উমন, ফরিদপুর সুহৃদের সাহিত্য সম্পাদক হারুন অর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গোলাম সোবহানী চৌধুরী (রানা চৌধুরী) বলেন, ‘আমার ছাত্র হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ। তাঁর ব্যবসায়ী পরিচয়ের চেয়ে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের দায়িত্ব পালন (সাবেক সভাপতি) আমার কাছে বেশি গৌরবের। সে গরিব ও মেধাবীদের বৃত্তি দেয়। আজকে যারা বৃত্তি পেল, কর্মজীবনে তারা মানবিক মানুষ হয়ে দেশের সেবা করবে আশা করছি।’

জালাল আহমেদ বলেন, ‘হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্কুল, মাদ্রাসা ও হাসপাতাল করেছেন। ব্যক্তি উদ্যোগে দীর্ঘদিন বৃত্তি দিলেও, এবার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করলেন। এ. কে. আজাদ ট্রাস্ট হয়েছে। এর মাধ্যমে আরও অসংখ্য মানুষ সহায়তা পাবে।’

আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘আমরা সবসময় অদম্য মেধাবীদের পাশে আছি। প্রথম বছরের ফলের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীরা আগামী পাঁচ বছর হা-মীম গ্রুপ-সমকাল শিক্ষাবৃত্তি পাবেন।’

আবু সাঈদ খান বলেন, ‘এ দেশে মেধাবী হারিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় আছে। হা-মীম গ্রুপ-সমকাল ছয় শিক্ষার্থীকে বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। এসব শিক্ষার্থী একদিন চিকিৎসক কিংবা আইন পেশায় গেলে তাদের ওপর সামাজিক দায় থাকবে। আমি চাইব, তাদের চেম্বার থেকে যেন একজন দরিদ্র ব্যক্তিও সেবা ছাড়া ফিরে না যায়।’

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বৃত্তি পাওয়ায় তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রহমান শিশির বলেন, ‘গাছের বেড়ে উঠতে যত্ন লাগে। মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় ছিলাম। শিক্ষাজীবন নির্বিঘ্ন করতে পাশে দাঁড়িয়েছে হা-মীম গ্রুপ ও সমকাল। এ শিক্ষাবৃত্তি সাহস জুগিয়েছে। আমার চেম্বার থেকে কোনো দরিদ্র ও অসহায় রোগী ফেরত যাবে না। সেবার মাধ্যমে সমাজের এ ঋণ শোধের চেষ্টা করব।’ অনুষ্ঠানে জুলাই ও আগস্ট মাসের বৃত্তি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হলেও, সেপ্টেম্বর মাস থেকে তারা নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাবেন। 

বিভাগীয় সম্পাদক সুহৃদ সমাবেশ

আরও পড়ুন

×