ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

সুস্থ জাতি গঠনে প্রান্তিক পর্যায়ে পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি

সুস্থ জাতি গঠনে প্রান্তিক পর্যায়ে পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি

ছবি - সাজ্জাদ নয়ন

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪ | ২৩:৩৬ | আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪ | ০০:০৩

বয়স ও সময় বুঝে খাবার নির্ধারণ করতে পারলে সেটি হতে পারে ওষুধের বিকল্প। মেধাভিত্তিক সুস্থ জাতি গঠনে প্রান্তিক পর্যায়ে পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি। গত ১৩ জুন বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘স্থানীয় পর্যায়ে পুষ্টি সুশাসন: সাফল্য, শিখন, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এ বৈঠকের আয়োজন করে সমকাল ও সাসটেইনড অপরচুনিটিজ ফর নিউট্রিশন গভর্ন্যান্স (সঙ্গ) প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কর্ডএইড ও আরডিআরএস বাংলাদেশ

মো. শরিফুল ইসলাম
আমরা যদি একটু পেছনে ফিরে তাকাই কেন এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কেনই বা ৪৪ মিলিয়ন ইউরো ৫ কনসোর্টিয়ামকে দেয়। আসলে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম এলাকায় পুষ্টির অবস্থাটা খুবই নাজুক ছিল। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এটি। ৫৪ শতাংশ শিশু অপুষ্টিজনিত সমস্যার ফলে শারীরিক গঠনগত সমস্যায় জর্জরিত ছিল। এসব সমস্যার মধ্যেই প্রকল্পটি বিবেচনায় নেওয়া হয়। কাজের অঞ্চল যদি বলতে চাই, আমরা একেবারে চরে যাইনি, আবার একদম সমতলেও নয়। সঙ্গ প্রকল্পটি স্থানীয় সরকারের বিদ্যমান কমিউনিটি সার্কেল পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে বটমআপ পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নসহ পুষ্টি খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে ইতিবাচক অবদান রেখে চলেছে। জলবায়ুসহনশীল কৃষিজ প্রযুক্তি প্রবর্তনের মাধ্যমে বছরব্যাপী পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিসহ পরিবার পর্যায়ে পুষ্টিকর খাবার বণ্টনে সাম্যতা নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় সরকারে পুষ্টিসংক্রান্ত তথ্যসমূহ সহজলভ্য করার মাধ্যমে উপকারভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ডুপ্লিকেশন এড়ানো অনেকটাই সম্ভব হয়েছে। সরকারের সকল সেবা আরও কার্যকরভাবে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্য সঙ্গ প্রকল্প কৃষি, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি এবং ওয়াশ উদ্যোক্তা তৈরি করেছে। 

মো. শহীদুল আলম, এনডিসি
সবার জন্য সুষম পুষ্টি নিশ্চিত করতে হলে সঙ্গ প্রকল্পের কার্যক্রমে সর্বসাধারণকে যুক্ত করা প্রয়োজন। বেসরকারি কর্মসূচি শেষ হয়ে যায়; কিন্তু সরকারিভাবে কার্যক্রম চলতে পারে। তাই ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা-জেলা পরিষদের কার্যক্রমে পুষ্টি সচেতনতা যুক্ত করা প্রয়োজন। তাহলে প্রকল্প শেষ হলেও কার্যক্রম চলমান থাকবে। পরিবার পরিকল্পনা অফিস যদি পরিবার পরিকল্পনার পাশাপাশি পুষ্টি নিয়ে কথা বলে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর যদি তরুণদের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলে, তাহলে ভালো হয়। করপোরেট কোম্পানিগুলোকেও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে হবে।

 

 

আবু সাঈদ খান
অবকাঠামো উন্নয়ন দরকার রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও নৈতিকতা উন্নয়নের কথা আমাদের হিসাবে নেই! একটি এলাকায় কত রাস্তা হয়েছে, কত ভবন হয়েছে, তা আমরা দেখি। কিন্তু মানুষের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অবস্থা আমাদের চোখে পড়ে না। উন্নয়নের এই ধারণা পরিবর্তন হওয়া দরকার। এ জন্য কাজ করা দরকার। আজ এখানে যারা আছেন, ১৮টি ইউনিয়নে কাজ করেছেন, সারাদেশের জন্য সেটি মডেল হতে পারে। এসব প্রকল্পে অর্থ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবে অভিজ্ঞতা মূলধন হিসেবে কাজে লাগানো উচিত। এই অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা পথ চলতে চাই। একসময় স্লোগান ছিল ‘সবার জন্য খাদ্য’; এখন স্লোগান হওয়া দরকার ‘সবার জন্য পুষ্টি’। সরকারের প্রতিশ্রুতিতে এটি রয়েছে। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হোক। এটি যেন স্লোগানে সীমাবদ্ধ না থাকে। এ ব্যাপারে মিডিয়া হিসেবে আমরা সরকারের পাশে আছি। সবাই মিলে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। দেশটি তো আমাদেরই। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য একটি মেধাবী ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন রয়েছে।

ডা. ফারজানা রহমান
আমরা যদি পুষ্টি সুশাসনের অবস্থা দেখি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ল্যান্ডস্কেপ অ্যানালাইসিস দেখি, পুষ্টি সুশাসনের শক্তিমত্তা বা কার্যকারিতার গতিপ্রকৃতি ও কর্মপরিকাঠামো দেখি এবং ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে দেখা যায়, দেশে পুষ্টি সুশাসন নিয়ে নীতি-কৌশল বা পরিকল্পনা আছে ১৯৭২ সাল থেকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছেন, জনস্বাস্থ্যের পুষ্টির স্তর এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন করা রাষ্ট্রের প্রাথমিক কর্তব্য হবে। এরই ধারাবাহিকতায় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান হয়েছে ১৯৭৪ সালে। ১৯৭৫ সালে হয় বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পুষ্টি পরিষদের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এর একটাই উদ্দেশ্য, আমাদের জনগোষ্ঠীর পুষ্টির স্তর উন্নয়ন।

 

ড. এ এফ এম ইকবাল কবীর
সঙ্গ প্রকল্পের কর্মপরিধি ছিল পাঁচ বছর। আমার যেটা মনে হয়েছে, কভিড এসে দুই বছর নিয়ে গেল। দ্বিতীয়ত, মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারণা। প্রোগ্রাম আছে বহু আগে থেকেই, কিন্তু বাস্তবায়ন নতুন। তৃতীয়ত, আমার কাছে বিশেষ মনে হয়েছে প্রজেক্টের ডিজাইন। অনেক কিছু এতে যুক্ত করা হয়েছিল।

 

 

মার্গারিটা ক্যাপালবি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের সাতটি প্রকল্প রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন খাতের সরকারি নানাবিধ উদ্যোগে পুষ্টি নিয়ে যেসব কার্যক্রম রয়েছে, তা জনগণের কাছে পৌঁছানো দরকার। বিশেষ করে যারা অনেক দূরের কমিউনিটিতে রয়েছে, তাদের এসব জানানো প্রয়োজন। সরকার এবং সামাজিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে একত্রে এনজিওগুলো কাজ করতে পারে। জাতিসংঘের ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে আসলে সব পর্যায়ের লোকজনকে পুষ্টি সুশাসন নিশ্চিতের এই কাজে যুক্ত করতে হবে। খাদ্য ব্যবস্থার মধ্যে উৎপাদন, ভোক্তা পর্যায়ের বিভিন্ন কার্যক্রম ও বাজারজাতের ক্ষেত্রগুলোতে কাজের প্রয়োজন রয়েছে।

 

মো. মিজানুর রহমান
নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পুষ্টিবিষয়ক কাজকর্ম মূলত জাতীয় পুষ্টি পরিষদ করে থাকে। স্বাস্থ্যসেবা সিস্টেমের মাধ্যমে পুষ্টি নিয়ে কাজ করে থাকে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং জাতীয় পুষ্টিসেবা (এনএনএস)। কিন্তু একেবারে মাঠ পর্যায়ে পুষ্টি নিশ্চিত করার কোনো জনবল নেই। আমরা এখানে যতই কথা বলি বা নীতিনির্ধারণ করি, মাঠে কাজ করতে গিয়ে কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা অথবা কৃষি বিভাগের লোকজনের ওপর নির্ভর করতে হয়। পুষ্টি নিশ্চিতে এককভাবে কাজ করার কেউ নেই। গ্লোবাল ফোরামে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ৬৪ জেলায় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। কিন্তু সেটি এখনও হয়নি। যাতে দ্রুত নিয়োগটা হয়, সেদিকটি দেখা প্রয়োজন। একজন সুনির্দিষ্ট লোক দরকার, কারণ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারা খুব ব্যস্ত থাকেন সাধারণত। পুষ্টিবিষয়ক কার্যক্রমে তাদের সময় দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় নেই একদমই। সরকার এটি কীভাবে করবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা আরও যারা দাতা রয়েছে, তারা এখানে কীভাবে কাজ করবে, সেটি দেখা দরকার।

মো. গোলাম রব্বানী
সরকারের একটি নীতিমালা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, সরকার যেসব ক্ষেত্রে বরাদ্দ দিতে না পারে, যেটির সঙ্গে ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ জড়িত। এটি করার জন্য ২০১৮ সালের আগস্টে এসে সরকার একটি পরিপত্র জারি করে। তাতে বলা হয়, জেলা পর্যায়ে একটি জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি থাকবে। আর উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি থাকবে। আরও নিম্ন পর্যায়ে কীভাবে কানেক্ট করা যেতে পারে, তা কিন্তু এতে বলা নেই। কমিউনিটিতে কীভাবে কানেক্ট করা হবে, সেটি দেখা দরকার। কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপ, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পর্যায় ও জাতীয় পর্যায়ের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন সৃষ্টির চেষ্টা করেছি। ওই ২২টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ নিয়ে প্রতিবছর জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করার কথা নীতিমালায় বলা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ যদি বলি, রংপুরে আটটি উপজেলা আছে, আমরা কাজ করেছি তিনটিতে। এই আট উপজেলায় ইউনিয়ন রয়েছে ৭৬টি, আমরা কাজ করেছি মাত্র ২০টিতে। এই তিনটি উপজেলা দিয়ে আমরা পুরো জেলায় কাজটা কীভাবে ছড়িয়ে দেব। আমার দিক থেকে শক্তভাবে বলতে চাই, পরবর্তী সময়ে আমরা যখন কোনো পরিকল্পনা করতে যাব, আমরা যেন গোটা জেলাভিত্তিক পরিকল্পনা করি। 

গ্লোরিয়াস গ্রেগরি দাস
রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পুষ্টি সুশাসনের বিষয়টি চিন্তা করা যায়। নীতিগত জায়গায় যদি আমরা দেখি, আমাদের ১৭টি মন্ত্রণালয় মিলে একটি কর্মপরিকল্পনা করেছে। জানি না, কীভাবে এতগুলো মন্ত্রণালয় একসঙ্গে হবে কাজ করার ক্ষেত্রে। ২০০টির বেশি কর্মপরিকল্পনা আমাদের রয়েছে, এটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সামাজিক দিকটা দেখলে এই প্রজেক্টে চমৎকার একটি বিষয় আছে। বটমআপ অ্যাপ্রোচ– আমরা শুনেছি। জবাবদিহির একটা প্ল্যাটফর্ম আমরা করতে পেরেছি। আশা করি, অন্য প্রজেক্টে আমরা এই শিক্ষা-অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগাতে পারব। একাডেমিক সিস্টেমে আমাদের বড় একটা কাজের প্রয়োজন রয়ে গেছে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তার কথা বলি, কিন্তু নিরাপদ খাদ্য দিতে পারি না। আমাদের চিকিৎসকরা অনেক সময় বলতে পারেন না যে, ফল কিনে খাও। কারণ ফলে যে পরিমাণ বিষ প্রয়োগ হয়, রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, সরবরাহ ও উৎপাদনের যে চেইন– সেখানে আমরা যদি নিশ্চয়তা দিতে না পারি, তাহলে পুরো জাতি কিন্তু বিপদগ্রস্ত হবো। ১৮০০ যে উৎপাদক গোষ্ঠী রয়েছে, তাদের উৎপাদিত ফল বা ফসল যদি চেইনের মধ্যে কোথাও আটকে নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেটাও বিপজ্জনক। কয়েক দিন আগে একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে দেখলাম, খাদ্য অপচয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ কয়েকটি দেশের মধ্যে আছে। আমরা খাদ্য অপচয় যদি প্রতিরোধ করতে না পারি, তাহলে চলবে না। বাংলাদেশ এখনও অনেক ক্ষেত্রে তেমন অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। এসব জায়গায় আরও কাজ করা প্রয়োজন। যে প্রজেক্টই করি না কেন, এগুলো নিয়ে যেন আমরা কাজ করি। একটা উদাহরণ দিতে পারি, ভারত ও যুক্তরাজ্যের কোনো অনুষ্ঠানে খাবার বেচে গেলে সেটা একটা অ্যাপের মাধ্যমে সংগ্রহ করে তার সঠিক ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হয়। অনেক দেশে মেশিন আছে, খাবারের কতটুকু অংশ নষ্ট হয়েছে, সে অংশটুকু ফেলে দিয়ে বাকিটা খাওয়া হয়।

এনামুল হক
আরডিআরএস ১৯৭২ সাল থেকে কাজ করছে। একসময় ত্রাণ ও পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করত, এখন সামাজিক সুরক্ষামূলক নানা বিষয় নিয়ে কাজ করে এবং বেশ কিছু গবেষণার কাজও করে থাকে। শুরু থেকে অনেক কাজ করতে করতে আরডিআরএস মনে করে, সবকিছু যদি আমরা করি, তাহলে পরবর্তী দায়িত্বটা কে নেবে? একটা সময় এসে ফেডারেশনের ধারণা আসে। ১৯৮৭ সাল থেকে শুরু হয় ফেডারেশনের কাজ। ২০২২ সাল পর্যন্ত ৪০৬টি ফেডারেশন দাঁড় করানো হয়ে যায়, যার মধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তি ঢুকে গেছেন। কিন্তু আরডিআরএস যখন ফেডারেশন নিয়ে কাজ শুরু করে, প্রথমেই ধরে নেওয়া হয় যারা কাজ করবেন, তারা অরাজনৈতিক হবেন। কোনো রাজনৈতিক ইস্যু এখানে আনা যাবে না। কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠী থাকবে না। ভূমিহীন আসতে পারে, নারী আসতে পারে বা দরিদ্র যে কোনো মানুষ আসতে পারে এখানে।
৪০৬টি ফেডারেশনের মধ্যে এই ‘সঙ্গ’ প্রজেক্টে ১৮টি ফেডারেশন কাজ করে। এর মধ্যে সাতটি কুড়িগ্রামে আর বাকি ১১টি গাইবান্ধায়। কুড়িগ্রাম ও রংপুরে আরডিআরএস ১৯৭২ সাল থেকে কাজ করে আসছে; পরে গাইবান্ধায় এসেছে। ৪০৬টির মধ্যে ২৭টি নিজেদের সক্ষমতা অর্জন করেছে, বিভিন্ন এজেন্সি ও সরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে 
কাজ করছে– এসব জায়গা থেকে তহবিল নিয়ে নিজেরাই কাজ করছে।

টনি মাইকেল গোমেজ
আমাদের দেশে দেখা যায়, বাজেট থাকলে প্রতিশ্রুতি থাকে, বাজেট বরাদ্দ না থাকলে কোনো প্রতিশ্রুতি থাকে না। এ জন্য বাজেট বরাদ্দ এবং বরাদ্দকৃত বাজেট কতটা ব্যয় হলো, তা গুরুত্বপূর্ণ। জুনে এসে আমরা বাজেট বরাদ্দ নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। স্বাস্থ্য ও কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোতে বরাদ্দ যেমন কম, বরাদ্দকৃত বাজেট ব্যয়ের পরিমাণও বেশ কম। সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে বরাদ্দকৃত বাজেট ব্যয়ে কতটা যৌথতা রেখে কাজ করা হয়, সেটি দেখার বিষয়। করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা সংস্থা, এনজিও ও সরকারের লোকদের মধ্যে সমন্বয়টা আরও বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের কাজ করা জরুরি বলে মনে করি। আমরা যখনই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কথা বলি, আমরা ১ থেকে ১৬ নম্বর দফা নিয়ে বেশি বেশি কথা বলি; কিন্তু ১৭ নম্বর ‘অংশীদারিত্বের ক্ষমতা’র কথা ভুলে যাই। দাতাদের দিকে আমরা আর কত দিন চেয়ে থাকব। দাতারা সব নির্ধারণ করবেন, থোক বরাদ্দ দেবেন এবং সেটা দিয়ে কাজ হবে। এভাবে অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। আবার দেখা যায়, কভিডে দুই বছর নিয়ে যায়, অন্য আরেক সমস্যা আরও সময় নিয়ে যায়।
দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, জনগণ কতটা সাড়া দেয় বা তাদের কতটা আমরা সাড়া দেওয়ার মতো অবস্থায় নিতে পারি। নব্বইয়ের দশকে আমরা দেশ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে একটি বড় কাজ করে দেখাতে পেরেছিলাম, মানুষজনের কাছ থেকে সাড়াও পড়েছিল ব্যাপক। সেটি হচ্ছে ওরস্যালাইনের ক্যাম্পেইন। দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে দেখানো হয়েছে, কীভাবে এটি তৈরি করতে হয়। গণমাধ্যমের ব্যাপক ভূমিকা ছিল এই কাজে, এটি বলতেই হবে। অতএব, পুষ্টি সুশাসনের ক্ষেত্রেও আমরা গণমাধ্যমকে সেই পর্যায়ে পাশে পেতে পারি কিনা, গণমাধ্যমগুলোকে আমরা পুষ্টির বিষয়টা গুরুত্ব দিতে বলতে পারি কিনা।
দেশের বিরাট অংশ এখন অনলাইনে যুক্ত, গুগলে নিউট্রিশন বা ডায়েট লিখে সার্চ দিলে ওজন কমানোর নানা উপায়সংবলিত কনটেন্ট বা ভিডিও আসতে থাকে। এ জন্য অনলাইনে সঠিক বার্তাটা যাতে মেলে, সে জন্য আমাদের কাজ করা জরুরি। 

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান
কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যারা নীতিনির্ধারণী ও কর্মসূচি প্রণয়নে কাজ করেন, তাদের সঙ্গে আমরা যারা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন পর্যায়ে যুক্ত, আমরা কিছু সমস্যা দেখতে পাই। একজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বা একজন উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তার চিন্তা-চেতনার যদি পরিবর্তন না হয়, সেখানে আমাদের কাজ করার ক্ষেত্রে কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়। একটা প্রোগ্রাম শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়, একজন ইউপি চেয়ারম্যানের একটা দৃষ্টিভঙ্গি থাকে। দৃষ্টিভঙ্গিটা চেঞ্জ করতে গেলে চেয়ারম্যানকে নিয়ে আগে কাজ করতে হয়। একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছে একজন এনজিওকর্মী হিসেবে যখন যাই, তাঁর ধারণাটা যদি হয়– সবচেয়ে খারাপ স্টুডেন্ট আসে এনজিওতে কাজ করতে অথবা সবচেয়ে কম জানা মানুষটি হয়তো এনজিওতে কাজ করে। এই জায়গাগুলোতে আমাদের বড় পরিবর্তন দরকার। 
আরেকটি বিষয়, আমরা যেহেতু ছোট ছোট এলাকাভিত্তিক কাজ করি, বাংলাদেশজুড়ে কাজের সুযোগ এখনও হয়নি। এ জন্য একটা সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। আমরা হয়তো কাজের শুরুতে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে নিলাম। কিন্তু তিনি বদলি হয়ে ছয় মাস পর অন্য জায়গায় চলে গেলেন, তাঁর জায়গায় অন্য কেউ এলেন। তাঁকে আবার ভালো-মন্দ বোঝানোর কাজটা নতুন করে করতে হয়। এ ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে যদি একটি চিঠি দিয়ে তাঁকে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের জন্য সহায়ক হয়।

শাহেদ রহমান
পুষ্টি সুশাসনের ক্ষেত্রে আমরা দাবি করতে পারি, বিশ্বের মধ্যে আমাদের কাঠামোগত অবস্থান বেশ ভালো। আমাদের পরিকল্পনাও রয়েছে; কিন্তু ফাংশনালিটির জায়গায় একটি বড় প্রশ্ন রয়ে গেছে– আন্তঃমন্ত্রণালয় ও আন্তঃবিভাগ যোগাযোগটি বড় চ্যালেঞ্জ। আবার যদি স্থানীয় পর্যায়ে যাই– ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত সাত বছরে সাতটি প্রজেক্ট করছে খাদ্য ও পুষ্টি খাতে। এগুলোতে জাতীয় পর্যায়ের চেয়ে আমাদের স্থানীয় পর্যায়ের পুষ্টি সুশাসনের অভিজ্ঞতা অনেক ভালো। আমরা অনেক ভালো কাজ করেছি। কারণ সরকার কাঠামোটা অনুমোদন দিয়েছে। পরিচালনার জায়গায় যে দক্ষতা-সক্ষমতার ব্যাপার, সেটি আমরা করতে পেরেছি। গত সাত বছরে আমরা যে কাজগুলো করলাম, যে সক্ষমতা অর্জন হয়েছে, সে অভিজ্ঞতা নেওয়া দরকার। কারণ প্রজেক্টগুলো চলবে দাতাপক্ষের তহবিল থেকে, আর সরকার তো চলে নিজস্ব গতিতে। তাহলে পরবর্তী সময়ে কীভাবে কী হবে? তাহলে স্বনির্ধারিত একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। কোনো জায়গায় সরকার ও এনজিও পার্টনারশিপে আসতে পারে। একটি প্রশ্ন রাখতে চাই, সামাজিক সুরক্ষাটা কেন জরুরি।
বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগের বড় অংশ যদিও পেনশনসহ নানাবিধ স্কিমে চলে যায়। দেখানো হয়, জিডিপির ২ থেকে ৩ শতাংশ আমরা ব্যয় করছি। দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা অনেক বেশি করছি, আসলে ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। এখানে ব্যয় বাড়াতে গেলে তো আমাদের দেশজ আয় আরও বাড়তে হবে। দাতা সংস্থাগুলো একটা কথা বলে থাকে, তারা বাংলাদেশের সামাজিক সুরক্ষা খাতকে ডিজিটাইজেশন করতে বলে। এই জায়গাটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনেক ভালো কাজ করছে। কিন্তু সেখানে এনজিওর রোলটাকে স্বীকৃতি দেওয়া দরকার। আর মাঠ পর্যায়ে সমস্যা হলো, যার পাওয়ার কথা সে পায় না, যার পাওয়ার কথা নয় সে পায়। এ কারণেই ডিজিটাইজেশন পদ্ধতিতে গেছি আমরা। যাতে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন এবং সেটি সে পেতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের একটা বড় ভূমিকা আছে। একই সঙ্গে সুবিধাভোগী চিহ্নিতকরণে এনজিওর একটা বড় রোল আছে। সরকারের কাছে আমাদের যে প্রস্তাবনাগুলো যাবে, সেখানে আমাদের চিন্তা করতে হবে। কাঠামোগত জায়গায় সরকারের কতটুকু জবাবদিহি বা নেতৃত্ব থাকবে, সেটা সরকার নির্ধারণ করবে। কিন্তু এনজিওর ভূমিকাটা উচ্চকিত করে তুলে ধরা হলে পরবর্তী সময়ে আমরা খুশিমনে কাজ করতে পারব।  

মো. রফিকুল ইসলাম ফারুকী
প্রকল্পটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করে কাজ করেছে বলে জানতে পারলাম, অনেকেই বলেছেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে এই কার্যক্রমের প্রভাব কীভাবে পড়ে, তা যদি জানা যেত ভালো হতো। ১৮টি ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রকল্পটি কাজ করেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিলপ্রাপ্ত অংশীজন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করেছে। বাংলাদেশের আরও যেসব ইউনিয়ন বাকি রয়েছে, সেগুলোতে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে কিনা, জানতে চাই।

 

 

তানিয়া শারমিন
সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পুষ্টিবিষয়ক কার্যক্রম রয়েছে। কিন্তু ক্ষুদ্র কৃষক পর্যায়ে আমরা তেমন পৌঁছাতে পারছি না। এই জায়গাটিতে অনেক কাজ করার বাকি রয়ে গেছে। আমাদের ছেলেশিশু ও মেয়েশিশুদের যে খাদ্যাভ্যাস, সেখানে অনেক গ্যাপ রয়ে গেছে। একই সঙ্গে দেখতে হবে, মায়েরা ঠিকমতো খাচ্ছেন কিনা এবং বয়ঃসন্ধিকালীন মেয়েদের পুষ্টির চাহিদাটা মিটছে কিনা। মূলত নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে না পারলে শুধু খাদ্যের সহজলভ্যতা দিয়ে সব হয়ে যাবে না। 

 

 

মো. আবুল কালাম আজাদ
পুষ্টি সুশাসন নিশ্চিতে আমাদের আসলে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার ইউনিয়ন পরিষদকে কীভাবে আরও এর সঙ্গে যুক্ত করা যায়, সেটি নিয়ে ভাবতে হবে। বিশেষ করে ইউনিয়নভিত্তিক যে কমিটিগুলো আছে, তারা যেন এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে– এটা খুব জরুরি। আমার মনে হয়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করতে হলে সরকারের কার্যক্রমের সঙ্গে প্রাইভেট সেক্টরকেও যুক্ত করতে হবে। এ জন্য পুষ্টি সুশাসন কমিটিতে প্রাইভেট সেক্টরকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। আমি আশা করব, সঙ্গ প্রকল্পটি হয়তো শেষ হলো; কিন্তু জনমানুষের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করার কার্যক্রম সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আরও বেগবান হবে। কেননা সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠনে সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। আজকের অনুষ্ঠানে যারা এসেছেন, আলোচনায় অংশ নিয়ে এ আয়োজনটিকে ফলপ্রসূ করে তুলেছেন– সকলকে কর্ডএইড এবং সঙ্গ প্রকল্পের পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

শেখ রোকন
সুস্থ জাতি গড়তে হলে পুষ্টি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। এ জন্য দেশের একেবারে প্রান্তিক পর্যায় থেকে কাজ শুরু করতে হবে। এ আলোচনায় পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু সুপারিশ উঠে এসেছে। আশা করি, সংশ্লিষ্টরা এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন।

 

 

 

একনজরে সঙ্গ প্রকল্প 

সঙ্গ প্রকল্প গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার ৬টি উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে ১ লাখ ১২ হাজার পরিবারের সঙ্গে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে কাজ করছে, যা ৩০ জুন ২০২৪-এ শেষ হচ্ছে। প্রকল্পটির সরাসরি উপকারভোগীর মধ্যে ৯৫ হাজার প্রজননক্ষম নারী, ৯০ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, ৮০ হাজার কিশোর-কিশোরী, ৫ বছরের কমবয়সী ৫৫ হাজার শিশু রয়েছে। মা ও শিশুর পুষ্টি অবস্থার উন্নয়নে প্রকল্পটি মূলত ৪টি উপায় অবলম্বন করছে, সেগুলো হলো– (১) স্থানীয় পর্যায়ে পুষ্টি সুশাসন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া শক্তিশালীকরণ, (২) মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সম্পর্কিত স্বাস্থ্যাভ্যাসসমূহের অনুশীলন, (৩) পরিবার ও পরিবেশগত স্যানিটেশন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যাভ্যাসসমূহের অনুশীলন এবং (৪) বসতবাড়ির জায়গার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বছরব্যাপী পুষ্টিকর খাবারের সহজলভ্যতা বাড়ানো। উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহের মধ্যে দুটি জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি (ডিএনসিসি) ও ১৬টি উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটি (ইউএিনসিসি) এবং ১৮টি ইউনিয়ন উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে সকল পর্যায়ে পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং পদ্ধতি চালুকরণ, পুষ্টি সম্পর্কিত তথ্যসমূহ ইউনিয়ন পরিষদে সহজলভ্য করা এবং বিভিন্ন প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচনে তা ব্যবহার করা, প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে (১৬২ জন) নারী উদ্যোক্তা (পুষ্টি আপা) তৈরির মাধ্যমে কমিউনিটির সকলকে স্বাস্থ্য, পুষ্টিসেবা ও পণ্যসমূহ দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে উন্নত কৃষিজ সেবা ও উপকরণ প্রাপ্তির জন্য প্রতি ইউনিয়নে দুইজন করে (৩৬ জন) ফার্ম বিজনেস  অ্যাডভাইজর (এফবিএ) তৈরি, প্রতি ইউনিয়নে তিনজন করে (৫৪ জন) ওয়াশ উদ্যোক্তা তৈরি এবং ওয়াশ মানচিত্রের মাধ্যমে কমিউনিটি থেকে ওয়াশ পণ্যেও চাহিদা সংগ্রহ এবং ৪৫ হাজার অতিদরিদ্র ও দরিদ্র উৎপাদনকারী নিয়ে ১৮টি ইউনিয়নভিত্তিক জনসংগঠন (ফেডারেশন) তৈরি ও শক্তিশালীকরণ, যাতে করে তারা সরকারের সঙ্গে অ্যাডভোকেসি ও লবি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে।

সভাপতি

আবু সাঈদ খান
উপদেষ্টা সম্পাদক, সমকাল

আলোচক

মো. শহীদুল আলম, এনডিসি
মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব)
খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের (এফপিএমইউ), খাদ্য মন্ত্রণালয়

ডা. ফারজানা রহমান
উপপরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ

ড. এ এফ এম ইকবাল কবীর
পুষ্টি সুশাসন বিশেষজ্ঞ

মার্গারিটা ক্যাপালবি
প্রোগ্রাম ম্যানেজার, কৃষি, প্রান্তিক উন্নয়ন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিভাগ
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ

মো. মিজানুর রহমান
সিনিয়র টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার
স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও ওয়াশ, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

মো. গোলাম রব্বানী
ব্যবস্থাপক, মাল্টিসেক্টরাল গভর্ন্যান্স
‘জানো’ প্রকল্প, কেয়ার বাংলাদেশ

ড. গ্লোরিয়াস গ্রেগরি দাস
কান্ট্রি ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড কনসার্ন বাংলাদেশ 

এনামুল হক
প্রধান, কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগ
আরডিআরএস বাংলাদেশ

টনি মাইকেল গোমেজ
ডিরেক্টর, স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড কমিউনিকেশন
কেয়ার বাংলাদেশ

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান
উপজেলা সমন্বয়ক, ‘সঙ্গ’ প্রকল্প
আরডিআরএস বাংলাদেশ

ড. শাহেদ রহমান
উন্নয়ন পেশাজীবী ও ‘সূচনা’ কর্মসূচির সাবেক প্রধান, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ

মো. রফিকুল ইসলাম ফারুকী
প্রকল্প সমন্বয়ক, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভ নিউট্রিশন (জিএআইএন)

তানিয়া শারমিন
ডিরেক্টর, ফুড অ্যান্ড লাইভলিহুড
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ

মো. আবুল কালাম আজাদ
প্রোগ্রাম ম্যানেজার, সঙ্গ প্রকল্প, কর্ডএইড

মূল প্রবন্ধ

মো. শরিফুল ইসলাম
লিড, প্ল্যানিং, মনিটরিং, ইভ্যালুয়েশন অ্যান্ড লার্নিং, ‘সঙ্গ’ প্রকল্প, কর্ডএইড

সঞ্চালনা

শেখ রোকন
সহযোগী সম্পাদক, সমকাল

অনুলিখন

ইয়াসির আরাফাত
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল

সমন্বয়

হাসান জাকির
হেড অব ইভেন্টস, সমকাল

সিনা হাসান
কমিউনিকেশন কনসালট্যান্ট, কর্ডএইড

আরও পড়ুন

×