ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

বন্যা ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত করতে হবে স্থানীয় জনগণ ও তরুণদের

বন্যা ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত করতে হবে  স্থানীয় জনগণ ও তরুণদের

ছবি : সাজ্জাদ নয়ন

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ | ২৩:৩০ | আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ | ২৩:৩৫

এবার দেশের পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যা নতুন করে অনেক কিছু শিখিয়েছে। এই অভিজ্ঞতার আলোকে স্থানীয় জনগণ ও তরুণদের সম্পৃক্ত করে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বন্যার বহুমুখী প্রভাব মোকাবিলায় সহযোগিতা কাঠামোতেও পরিবর্তন দরকার। পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণে বাজেট বৃদ্ধি, সুষম বণ্টন, সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা প্রদান, বীমা চালু, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আবহাওয়ার তথ্য আদান-প্রদান, জলযানের ব্যবস্থা, সঠিক তথ্যভান্ডার তৈরি, বাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধি ও  বন্যাসংক্রান্ত পূর্বাভাস সহজবোধ্য করতে হবে। 
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের বন্যা: জীবন, জীবিকা ও অর্থনীতিতে প্রভাব এবং করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই অভিমত তুলে ধরেন। যৌথভাবে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) ও  সমকাল।

নাজমুল আহসান
বাংলাদেশে মূলত দুই রকমের বন্যা হয়। একটা মৌসুমি বন্যা। আরেকটি উপকূলীয় বন্যা, যেটি ঘূর্ণিঝড়সহ নানা কারণে হয়। তবে এবার পূর্বাঞ্চল ও ময়মনসিংহ বিভাগে হয়েছে ফ্ল্যাশ ফ্লাড। বন্যার পরপরই আমরা সরেজমিনে উপদেষ্টাসহ ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা ঘুরে দেখেছি। নোয়াখালীতে মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে গেছে। আমরা সাময়িকভাবে রেগুলেটরটি ঠিক করার কাজ করছি। দীর্ঘ মেয়াদে মুছাপুর রেগুলেটর পুনর্নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাঁধ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করেছি। মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ শক্তিশালী করার বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এবারের বন্যা আমাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। যে বাড়িতে আগে কখনোই পানি ওঠেনি, এবার সেই বাড়ি তলিয়ে গেছে। এবারের বন্যাকে মাথায় রেখেই আমরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করছি। বন্যার সতর্কবার্তা দিয়ে থাকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। কিন্তু এখানে আমাদের জনবল খুবই কম। আমরা আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা এবং দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের (স্পারসো) কাছ থেকে বৃষ্টির তথ্য নিয়ে থাকি। ভারত থেকে আটটি নদীর ১৪ পয়েন্টের তথ্য পাচ্ছি। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তিও আছে। এ ছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী নেপাল থেকেও আমরা তথ্য পেয়ে থাকি। চীনের কাছ থেকেও তিনটি পয়েন্টের তথ্য পাচ্ছি। আকস্মিক বন্যার ক্ষেত্রে অনেক সময় সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। কিন্তু আবহাওয়া পূর্বাভাস যে ভাষায় দেওয়া হয় তা এখনও জনবান্ধব হয়ে ওঠেনি। অনেকেই এটি বুঝতে পারেন না। আমরা বন্যা পূর্বাভাস পদ্ধতি আরও সহজ করার পদক্ষেপ নেব। আমরা গুগল নোটিফিকেশনের বিষয়েও চিন্তা করছি। এসএমএস সিস্টেমের মাধ্যমে সতর্কীকরণ বার্তা মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছি। এখন বিভাগ অনুযায়ী বার্তা দিচ্ছি। 
আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, পানি নিষ্কাশনের পথগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বাড়িঘরসহ নানা অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বন্যার পানি নামার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ রকম আরও ভয়াবহ বন্যা হতে পারে। এ জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। 
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ব্যবস্থাপনাও যুগোপযোগী করার চেষ্টা করছি। নদীর নাব্য রক্ষায় নিয়মিত ড্রেজিং হচ্ছে। পানিপ্রবাহের জায়গাটি যেন নষ্ট না হয় তার জন্য নিয়মিত কিছু কাজ করতে হবে। টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট বা জোয়ারাধার) পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর। আমরা এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেসব অঞ্চল টিআরএমের উপযোগী সেগুলোয় আমরা টিআরএম পদ্ধতিতে যাব। সম্প্রতি যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে টিআরএম চালু হয়েছে।

ড. ফাহমিদা খাতুন
বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ-সংক্রান্ত বিপর্যয়গুলো এখন বেশি ঘন ঘন হচ্ছে। এটি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। ফলে বিশেষ করে জীবনের ওপর ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা কমানো গেছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দুর্যোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। যেহেতু বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ এবং মানুষের আয় তেমন বেশি নয়, সে জন্য বাংলাদেশ অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথম যখন বন্যার ঢেউ আসে তখন জীবন ও ঘরবাড়ির ওপর প্রভাব পড়ে। তারপর মানুষের জীবিকা বিনষ্ট হয়। 
এ বছরই বন্যা হয়েছে কয়েকবার। সর্বশেষ পূর্বাঞ্চলে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আমরা একটা গবেষণা করেছি। বিভিন্ন সংস্থা থেকে তথ্য নিয়ে আমরা দেখেছি, পূর্বাঞ্চলে আগস্টের বন্যায় ক্ষতি ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকা। বাস্তবে ক্ষতি আরও বেশি হতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশে ঘন ঘন বন্যা হচ্ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোসহ বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বন্যার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক বড়। যেমন ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালে যেসব বন্যা হয়েছে তাতে ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতি হয়েছে এক লাখ এক হাজার ১০০ কোটি টাকা। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বন্যাজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ২৩.৩৭ শতাংশ ছিল। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আরও বেড়ে বন্যাজনিত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৫৬.৪ শতাংশ। অর্থাৎ অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ কমছে না, বরং বেড়েই চলছে। এ ছাড়া মানুষ যারা মারা গেছেন, তাদের জীবন তো মূল্য দিয়ে বিবেচনা করা যাবে না। এ ছাড়া স্কুল থেকে ঝরেপড়া শিশুর জীবনের ক্ষতির পরিমাণও টাকার অঙ্কে হিসাব করা যাবে না। দীর্ঘমেয়াদি যেসব প্রভাব পড়ে তা ক্ষতির হিসাবে আসেনি। বন্যার বহুমুখী প্রভাব আছে। শুধু অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়েই আমরা গবেষণা করেছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সবাই সমানভাবে ত্রাণ পাননি। সমন্বয়ের অভাব ছিল। কোথাও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সহায়তা বেশি পেয়েছে, কোথাও একেবারেই পায়নি। জিনিসপত্র ও অর্থ দুটিই বন্যার্তদের জন্য প্রয়োজন। বিশেষ করে জীবিকার জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। পূর্বাঞ্চলে বন্যার সতর্কীকরণ আগে থেকে হয়নি। ফলে আগে থেকে পূর্বাভাস দিতে হবে। জীবিকার জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া যেতে পারে। কারণ জীবিকার সন্ধানের পুরুষরা অন্যত্র চলে যায়। তখন নারী ও শিশুদের ওপর বড় প্রভাব পড়ে। 
আন্তর্জাতিকভাবে উন্নত দেশগুলোর দায়িত্ব আছে আমাদের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি। কারণ উন্নত দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণেই দরিদ্র দেশগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত আসছে। 

কে এম আলী রেজা
এবারের বন্যা থেকে আমরা অনেক কিছু নতুন করে শিখেছি। প্রচুর ত্রাণ থাকলেও নৌকার অভাবে দুর্গম এলাকায় তাৎক্ষণিক ত্রাণ দেওয়া যায়নি। ফলে আমরা হেলিকপ্টারে ত্রাণ বিতরণ করেছি। সামনে আমাদের পরিকল্পনায় জেলায় জেলায় নৌকা সংযুক্ত করা হবে। বন্যা মোকাবিলায় তরুণদের সম্পৃক্ত করে সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে। বন্যার ঝুঁকি মোকাবিলায় বীমা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। আমরা ডিজাস্টার রিস্ক ফিন্যান্সিং স্টাডি করেছি, সেখানে বীমার বিষয়টি আছে। কিন্তু এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় লিখিতভাবে আপত্তি জানিয়ে বলেছে, কৃষকের ওপর বীমার নামে যেন আমরা কোনো কিছু চাপিয়ে না দিই। আমরা ডব্লিউএফপি ও ব্র্যাকের দিকে তাকিয়ে আছি। তারা যদি মাঠে কোনো মডেল চালু করে, তখন আমরা এ বিষয়টি নেব। আমরা চাচ্ছি, প্রান্ত থেকেই চাহিদা তৈরি হোক। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ও বিধি নিয়েও আমাদের কাজ করতে হবে। দুর্যোগের পূর্বাভাস ও সতর্কবার্তা জনবান্ধব করা দরকার। আমরা নতুন করে যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো করছি, তাতে নারী-শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। সবকিছু করে ফেলেছি, সবকিছু হয়ে গেছে– এমন আত্মতৃপ্তিতে ভোগা যাবে না। পূর্বাঞ্চলের বন্যা দেখে আমার সেটাই মনে হয়েছে। একটা বন্যা কিংবা দুর্যোগের কারণে একজন মানুষও কষ্ট পাক, সেটি আমরা চাই না। আমাদের চেষ্টা থাকবে মানুষের কষ্ট লাগব করা। আজকের আলোচনায় যে সুপারিশগুলো উঠে এসেছে, তা আমরা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব।

গওহার নঈম ওয়ারা
বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় তরুণরা এবার এগিয়ে এসেছে। কিন্তু তরুণদের গাইড করার মতো কেউ ছিল না। ফলে সহায়তা কেউ পেয়েছেন, কেউ পাননি। সিভিল সোসাইটি যতটা টেলিভিশনে সোচ্চার ছিল, ততটা মাঠে ছিল না। যারা বলছিলেন জাতীয় সরকার গঠন করবেন, তারা একটা জাতীয় রিলিফ কমিটি গঠন করতে পারেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও ত্রাণ পড়ে আছে, তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার কেউ ছিল না। বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি অনেক ভালো হয়েছে বলা হলেও, আসলে এটি বইয়ের কথা। প্রস্তুতি ভালো হলে ৫৩ বছর আগের সতর্কীকরণ বার্তা দিয়ে এখনও চলতে হতো না। মানুষ জানে না পানি এলে তার বাড়ি কতটা উঁচুতে থাকতে হবে। আমাদের টাকা আছে; কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই। যেমন যার জমি আছে, তাকে কৃষিঋণ দেওয়া হচ্ছে; অথচ বন্যায় তার কোনো ক্ষতিই হয়নি। ক্ষতি হয়েছে তাঁর, যিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অন্যের জমি চাষ করেছেন। কিন্তু তাঁর কাছে সরকারি টাকা পৌঁছবে না। কারণ তাঁর নাম কোনো তালিকায় নেই। পিকেএসএফের মাধ্যমে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে। গৃহনির্মাণে বাংলাদেশ ব্যাংকেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কর্মসূচি আছে, সেটিকে বন্যাদুর্গত এলাকায় নিয়ে যেতে হবে।
বন্যার সময় যেসব অসুস্থ মানুষ নিয়মিত ওষুধ খান, তাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সেই ওষুধ নেই। যেমন উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়াবেটিসের ওষুধ সহায়তা দেওয়া হয় না। 
দুর্যোগের পর রিলিফ কার্যক্রম সঠিক হয়েছে কিনা– তা দেখার চারটি উপায় আছে। এক. সব ছাত্রছাত্রী স্কুলে ফেরত গেছে কিনা, দুই, কোনো বাল্যবিয়ে হয়েছে কিনা, তিন. কোনো শিশু শ্রমে জড়িত হয়েছে কিনা, চার. কোনো শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে কিনা। সামনে ইটভাটা চালু হলে হাজার হাজার শিশু ইটভাটায় চলে যাবে। তারা যখন চার মাস পর ফেরত আসবে, তখন তাদের আর কোনো স্কুল নেবে না। বন্যা এলাকায় অনেক স্কুল এখনও চালু হয়নি, অনেক স্কুলে বই নেই। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কোনো সভা হয় কিনা, তারও কোনো তদারকি নেই। ওই সভার সিদ্ধান্তগুলোও কেন্দ্র থেকে চাওয়া হয় না। কোনো জবাবদিহি নেই। যে দেশে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা যত শক্তিশালী, সেই দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তত শক্তিশালী। ফলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। এ কার্যক্রমে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। 

ড. মাহবুবা নাসরীন
দুর্যোগ মোকাবিলায় জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। এর সঙ্গে বহুধা বিভক্ত সমাজের সকল মানুষের জন্য ভাবতে হবে যাকে আমরা বলছি ইন্টারসেকশনালিটি। দুর্যোগ মোকাবিলায় জেন্ডার সমতা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, শিশু, প্রবীণ ব্যক্তি এরকম সব ধরনের মানুষের কথাই চিন্তা করতে হবে। একজন ব্যক্তিকে শুধু তার এক পরিচয়ে নয়, বরং তার সব পরিচয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। সমন্বয়হীনতার কারণে এ দেশে অনেক কাজ সঠিকভাবে হয় না। এ ক্ষেত্রে তাই সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। দেশের ভৌগোলিক অবস্থান বন্যার জন্য নাজুক। তিনটা বড় নদীর উৎস বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখার বাইরে, কিন্তু এ নদীগুলো দেশের ভেতরে এসে মিলিত হয়েছে। উচ্চ অববাহিকায় কোনো দুর্যোগ হলে এর প্রভাব আমাদের দেশে এসে পড়ে কারণ নিম্ন অববাহিকায় আমাদের অবস্থান। এ ক্ষেত্রে আমাদের যেসব দেশের সঙ্গে নদী সংযোগ রয়েছে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে, তথ্য আদান-প্রদান করতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্যক্তি খাতগুলো সেভাবে আসছে না। এ বিষয়টিও দেখা দরকার।
 
ড. খুরশিদ আলম
পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রথম প্রয়োজনভিত্তিক বাজেট সিস্টেম আমরা করেছিলাম। এই বাজেটে এক টাকা বেশিও থাকবে না, আবার কমও থাকবে না। এখন এই সিস্টেমটা কিছু আছে, কিছু নেই। এই বাজেটটা আবার চালু করা যেতে পারে। এটি হলে দেখা যাবে, বন্যার বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করতে প্রকৃত বাজেট করা সহজ হবে। এই অর্থবছরে প্রায় ৪৩ হাজার কোটি টাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন করতে হবে। এটি করা গেলে বাজেটের নামে লুটপাট বন্ধ হবে। নিয়মিত বাজেটের সঙ্গে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার ইমার্জেন্সি বাজেটও রাখতে হবে। আমাদের অনেকের ধারণা, বাংলাদেশে সবসময় বন্যা হয় না। এটি একটি ভুল ধারণা। বাংলাদেশ কখনও বন্যামুক্ত না। কখনও স্বল্প পরিসরে, কখনও বড় পরিসরে বন্যা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ বন্যাই হয়। এ জন্য বাজেটে ইমার্জেন্সি বাজেট রাখতে হবে। চাহিদা অনুযায়ী সেখান থেকে খরচ করা যাবে।

 

ড. মো. লিয়াকত আলী 
পূর্বাঞ্চলের বন্যা হয়েছে– এ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে। আমরা একে অন্যকে দোষারোপ করেছি। ভারত থেকে পানি এসেছে, এটি সত্য। কিন্তু এবার ওই অঞ্চলে যে পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আবার ত্রিপুরায়ও ৫০০ মিলিমিটারের ওপর বৃষ্টিপাত হয়েছে। সুতরাং ওই পানির ঢল এবং আমাদের পানির ঢল মিলে এই বন্যা হয়েছে। অন্যদিকে, সুনামগঞ্জের যে ফ্লাশফ্লাডটা হয়েছে তা ১২২ বছরের মধ্যে হয়নি। এ ধরনের ঘটনা কমবে না। বরং বাড়তে থাকবে। বন্যা ব্যবস্থাপনায় আমাদের অনেক সুনাম ছিল। কিন্তু সুনামগঞ্জের বন্যা এবং এবারের বন্যার পর আমাদের এখন চিন্তা করতে হচ্ছে যে, এভাবে আর হবে না। এর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টা যোগ করতে হবে। ‘ফ্লাড ফোরকাস্টিং ওয়ার্নিং সেন্টার’ পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে পৃথিবীতে সেরা। এর মাধ্যমে ১৫ দিন আগে বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। কিন্তু ফ্লাশফ্লাডের ক্ষেত্রে হয়তো বৃষ্টিপাতের তথ্য দেওয়া গেলেও পানির উচ্চতার বিষয়ে তথ্য দেওয়া সম্ভব হয়। এ ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সুনামগঞ্জে পরীক্ষা চালিয়েছিলাম। কিন্তু 
কুমিল্লা কিংবা ফেনীর জন্য এমন কিছু ছিল না। সুতরাং আমাদের দুই দেশের মধ্যে এমন কোনো বন্দোবস্ত করতে হবে, যাতে করে আমরা আগাম তথ্য পাবো। এ বছর বন্যাসহ পাঁচটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমরা মোকাবিলা করেছি। সামনের দিকে এমন হতে থাকলে আমাদের পুনর্বাসনের বিষয়ে চিন্তায় পরিবর্তন আনতে হবে।

ড. মোহন কুমার দাশ
বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সাধারণত আমরা কোনো বৈজ্ঞানিক পরিসংখ্যান পাই না। সেটি করবে কারা? বৃষ্টিপাতের বিষয়ে আবহাওয়া অধিপ্তর কাজ করতে পারে। রিমোট সেন্সিং জোনিং করবে স্পারসো। বন্যার পূর্বাভাসের বিষয়ে কাজ করবে এসএফডব্লিউএসি। আমাদের অন্যতম সমস্যা কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। এটা তো শুধু বাংলাদেশ আর ভারতের সমস্যা না। আন্তঃদেশীয় নদী তো সারা পৃথিবীতে রয়েছে। গবেষণার ক্ষেত্রে যে তথ্য প্রয়োজন, তা তো সহজেই পাওয়া যায়। তবে এসব তথ্য কোথা থেকে পাওয়া যায়, এ সম্পর্কে ধারণা রাখা ব্যক্তিকে আমরা সঠিক জায়গায় বসিয়েছি কিনা– সেটি দেখা জরুরি। দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশ নিয়ে যে সংগঠন ছিল, সেটিকে সক্রিয় করলে তো কোনো তথ্যের ঘাটতি থাকার কথা নয়। বরং আরও বেশি তথ্য থাকার কথা ছিল। আটটি দেশের বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে কাজ করতে পারতেন। সেটি হয়নি। এটি চালু করার সুযোগ আছে।

 

ড. ইসতিয়াক সোবহান 
বন্যার সংজ্ঞা একেক জায়গায় একেক রকম। বন্যাকে সংজ্ঞায়িত করাও অনেক জরুরি। কেননা বন্যা ছাড়া তো এ দেশ হতো না। এই বদ্বীপ পুরোটাই বন্যার দ্বারা তৈরি। এখন আমরা বন্যা ব্যবস্থাপনা কীভাবে করছি, সেটি দেখার বিষয়। আমরা সাধারণত প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে বন্যা মোকাবিলার চেষ্টা করি। কেন ফেনীতে বন্যা হলো? ফেনী তো সমুদ্রের পাড়েই। আমরা প্লাবন ভূমি নষ্ট করে দিচ্ছি। বন্যার সঙ্গে তো শুধু পানি আসে না। এর সঙ্গে লাখ লাখ টন পলিও আসে। আমরা এই পলি ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দিই না।  কুশিয়ারা, বোরাক, সুরমা, সোনাই, মনু থেকে শুরু করে গোমতী পর্যন্ত যত নদীই আছে, এগুলোতে আমরা এমনভাবে বাঁধ দিয়েছি যাতে এসব নদীর পানির সঙ্গে আসা পলি প্লাবন ভূমিতে না গিয়ে নদীর তলায় জমা হয়। আমরা একটা ‘ফলস সেন্স অব সিকিউরিটি’র মধ্যে আছি। এর ফলে আমাদের এ  সব নদীয় অববাহিকায় বিনিয়োগ বাড়ছে, ফলে যখন বন্যা আসে তখন ক্ষয়ক্ষতিও বেশি হচ্ছে। আমরা বলছি, খুলনা-বাগেরহাট অঞ্চলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ মিলিমিটার বাড়ছে। আমরা পানির তলায় চলে যাচ্ছি; কিন্তু আমরা পলি ব্যবস্থাপনা করছি না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিলে আমরা আরও ভালো অবস্থায় থাকতে পারতাম।

এফএম আনোয়ার হোসেন
এ দেশে সব ক্ষেত্রেই কমিউনিটি অংশগ্রহণের বিষয়টিকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। উচ্চতর গবেষণায় শুধু তাদের মতামত নেওয়া হয়। কোনো ঘটনার বাস্তবতা খুব একটা ফলোআপ করা হয় না। সেচ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে মাটির নিচের স্তর থেকে পানি উঠানো হচ্ছে। সমতলের পানি ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে না। অন্যদিকে, প্রভাবশালীরা নদীতে বাঁধ দিয়ে কম্পার্টমেন্ট তৈরি করে মাছ চাষ করছে। ফলে অনেক জায়গায় দেখা যায়, নদীগুলোর পাশ দিয়ে পানি বেরিয়ে যাওয়া পথগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। 
এ বিষয়ে পদক্ষেপ জরুরি। নদীর অববাহিকায় বসবাসরত জনগণ ও নদীর অধিকারের বিষয়টা একসঙ্গে তুলে ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে সব পর্যায় থেকে আওয়াজ তুলতে হবে। প্রতিটি নদীর বিষয়ে সবাইকে সোচ্চার করে তুলতে হবে। নদীসংক্রান্ত পরিবেশগত সচেতনতার বিষয়টি গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। ক্ষতির প্রভাবটা আমরা দেখি। কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ প্রান্তিক জনগণ পরিমাপ করতে পারে না। তারা হয়তো আরও গরিব হচ্ছে, ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। স্থিতিস্থাপকতা এবং অভিযোজ্যতা আসলে ফাঁকি দেওয়ার মতো একটা অবস্থা। মানুষকে বোঝানো হয় যে, এ পরিস্থিতিকে আমরা গ্রহণ করেই চলব। এটা হতে পারে না। ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, বন্যার পানি বাঁধের বিপৎসীমার ওপর দিয়ে উপচে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাঁধটা তো ইচ্ছা করেই দেওয়া হয়েছে। বিপৎসীমার ওপরে উঠলে তো পানি পার হবেই। এটি কোনো অজুহাত হতে পারে না। 
সুতরাং আমাদের এই বিষয়ে কাজ করতে হবে। এই বিষয়ে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে দরকষাকষির সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বন্যার অন্যতম কারণ অতিমাত্রায় প্লাস্টিকের ব্যবহার। প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। 

রিফাত জাবীন খান
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বন্যার সঙ্গে ডেঙ্গুর একটা সম্পর্ক রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকের ড্যাশবোর্ডে দেখা গেছে, ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বন্যাকবলিত এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। একই সঙ্গে সেখানে মৃত্যুহার বেশি। বন্যা শুধু আমাদের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলছে, তা নয়। বরং আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়েছে। তরুণদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বন্যা মোকাবিলা তরুণদের সম্পৃক্ত করার প্রস্তাবনা এসেছে। এটি স্থানীয় সরকার প্রশাসনের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে যাবে। কতজন তরুণ রয়েছে এবং তাদের কীভাবে কাজে লাগানো যাবে, সে বিষয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে। বন্যা মোকাবিলায় তরুণদের কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তার করণীয় ঠিক করতে হবে। ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পানি সম্মেলন নিয়ে এখন অনেক আলোচনা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশে আমাদের নদী যোগাযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ১৯৯৭ সালের সম্মেলনকে বিবেচনা করা উচিত কিনা– এ বিষয়ে ভাবা যেতে পারে।

শেখ রোকন
বন্যা এ দেশের জন্য বার্ষিক একটা বিষয়। শত শত বছর ধরে আমরা বন্যার সঙ্গে বাস করে আসছি। বন্যা প্রসঙ্গে ইংরেজ লেখক টনি মরিসন বলেন, ‘বন্যা হচ্ছে নদীর স্মৃতি।’ নদীমাতৃক বাংলাদেশে বন্যা আমাদের জীবন, সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য স্মৃতি। এ বছর দেশের তিনদিকে তিনটি বন্যা হয়েছে। গত ২০ বছর ধরে আমি নদী, পানি ও বন্যা পর্যবেক্ষণ করছি। তবে এবারের মতো কোনো বন্যার রাজনীতিকরণ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এই বন্যা নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে। এতে আন্তঃসীমান্ত নদীর প্রসঙ্গ নানাভাবে এসেছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় নাগরিক সংগঠনগুলো বন্যা নিয়ে অনেক সক্রিয় ছিল। প্রশাসন, বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা, সাহায্য সংস্থা, আইএনজিওর বাইরে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন।

 

সুপারিশ

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় মানুষকে সব ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করা
বন্যা ব্যবস্থাপনার সব কমিটিতে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা
পানি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সঙ্গে পলি ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনভিত্তিক বাজেট করতে হবে। এর সঙ্গে জরুরি বাজেটও রাখতে হবে
বন্যা মোকাবিলায় সব মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে বছর শেষে তাদের বন্যা সম্পর্কিত কাজের মূল্যায়ন করতে হবে
ত্রাণ বিতরণে বাজেট বাড়াতে হবে
সুষম বণ্টনের জন্য সঠিক তথ্যভান্ডার তৈরি করতে হবে
ক্ষতিগ্রস্তদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা প্রদান করতে হবে
ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বীমা চালু করতে হবে
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আবহাওয়ার তথ্য আদান-প্রদানের পথ উন্মুক্ত করতে হবে
দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পাঠাতে বন্যা ব্যবস্থাপনায় জলযান যুক্ত করতে হবে
বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে হবে 
বন্যাসংক্রান্ত পূর্বাভাস সহজবোধ্য করতে হবে


প্রধান অতিথি

নাজমুল আহসান
সচিব, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়

সভাপতি

ড. ফাহমিদা খাতুন
নির্বাহী পরিচালক
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)

বিশেষ অতিথি

কে এম আলী রেজা
অতিরিক্ত সচিব
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়

আলোচক

গওহার নঈম ওয়ারা
আহ্বায়ক, দুর্যোগ ফোরাম

ড. মাহবুবা নাসরীন
অধ্যাপক, ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ড. খুরশিদ আলম
চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল রিসার্চ (বিআইএসআর) ট্রাস্ট

ড. মো. লিয়াকত আলী 
পরিচালক
জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি, ব্র্যাক

ড. মোহন কুমার দাশ
নির্বাহী পরিচালক
সমুদ্রবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (নোয়ামি)

ড. ইসতিয়াক সোবহান 
সিনিয়র এনভায়রনমেন্টাল স্পেশালিস্ট, বিশ্বব্যাংক

এফএম আনোয়ার হোসেন
সদস্য, রিভারাইন পিপলের ট্রাস্টি বোর্ড

রিফাত জাবীন খান
ফেলো, গ্লোবসাইট

সঞ্চালনা

শেখ রোকন
সহযোগী সম্পাদক 
সম্পাদকীয় বিভাগের প্রধান, সমকাল

অনুলিখন

জাহিদুর রহমান 
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, সমকাল

মাজহারুল ইসলাম রবিন
প্রতিবেদক, সমকাল

সমন্বয়

হাসান জাকির
হেড অব ইভেন্টস, সমকাল

আরও পড়ুন

×