জিবিএস হলে যা করবেন

প্রতীকী ছবি
ডা. সাইফুল ইসলাম
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ | ০১:২৭
গুলেইন-বারি সিনড্রোম (জিবিএস) একটি ইমিউন প্রক্রিয়াজাত রোগ, যেখানে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারা আমাদের গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টিনাল ট্রাক্ট বা খাদ্যনালিতে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ হয়। সাধারণত ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার এক থেকে চার সপ্তাহ পর লক্ষণ প্রকাশ পায়। কখনও সার্জারি বা ভ্যাকসিনেশন থেকেও এ লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। যে কোনো লিঙ্গ বা বয়সেই হতে পারে। তবে নারীর তুলনায় পুরুষের এই সমস্যা একটু বেশি হয়ে থাকে।
লক্ষণ
-সমান্তরালভাবে হাত-পায়ের মাংসপেশির দুর্বলতা দেখা যায়।
-পায়ের পাতা থেকে ওপরের দিকে হাতের বা মুখমণ্ডলের দিকে শক্তি কমে যায়। পেশিগুলো অবশ হতে থাকে।
-কথা বলা বা চিবানোর সমস্যা হওয়া।
-লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর দ্রুত বাড়তে থাকে।
-পায়ে ব্যথা, প্রস্রাব-পায়খানা নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
-ব্যথা, বিশেষ করে রাতে গুরুতর হতে পারে।
-রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকা।
-শ্বাস-প্রশ্বাসের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া।
কারণ
-ক্যামপাইলোব্যাক্টার জেজুনি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে।
-সাইটোমেগালো ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে।
-এপসটিনবার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে।
-সার্জারি, ইমিউনাইজেশন, অর্থাৎ ভ্যাকসিন থেকেও হতে পারে।
ডায়াগনসিস
রোগীর হিস্ট্রি ও রোগের লক্ষণ থেকেই অনেকটা রোগ নির্ণয় করা যায়। এ ছাড়া রক্তের পরীক্ষা, সিএসএফ স্টাডি, স্টুল কালচার এবং সেরোলজিক্যাল টেস্ট, এনসিভি, ইএমজি ইত্যাদি করা হয়। অন্য রোগ কিনা, তা আলাদা করতে আরও পরীক্ষার দরকার হতে পারে।
চিকিৎসা
এ রকম লক্ষণ বা সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখাবেন।
ফিজিওথেরাপি
যথাযথ চিকিৎসার পাশাপাশি দরকার প্রথম দিন থেকেই একজন ফিজিওথেরাপিস্ট থেকে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি নেওয়া। এর মধ্যে রয়েছে যথাযথ পজিশনিং, কফ জমলে বিভিন্ন টেকনিক অবলম্বন করে সেগুলো বের করা, ব্রেথিং এক্সারসাইজ করা, স্পাইরোমেট্রি ব্যবহার করা, জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া, প্রতিরোধ করা, মাংসপেশির শক্তি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং শক্তি বাড়ানোর জন্য এক্সারসাইজ করা, ব্যালান্স কো-অর্ডিনেশন ট্রেইনিং দেওয়া ইত্যাদি। প্রথম থেকেই নিয়মিত ফিজিওথেরাপি পেলে অধিকাংশ আক্রান্ত রোগীই তাঁর স্বাভাবিক জীবনযাপন ফিরে পেতে পারবেন এবং রেসপিরেটরি মাংসপেশি প্যারালাইজ হয়ে মৃত্যুঝুঁকি হ্রাস পাবে।
লেখক : ফিজিওথেরাপিস্ট, আশা সমন্বিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মহিপুর, পটুয়াখালী
- বিষয় :
- ভাইরাস