ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

মা-মেয়ের শেষ দেখা হলো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে

মা-মেয়ের শেষ দেখা হলো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে

কলকাতা সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২২ | ১০:০২ | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২২ | ১০:০২

সীমান্তের কাঁটাতারে ভাই-বোনের মধ্যে অনেক আগেই তৈরি হয়েছে ভৌগোলিক দূরত্ব। সেই দূরত্বেই আটকা পরেছেন তাদের মা। দুই বোন থাকেন বাংলাদেশে। তাদের মা থাকেন ভাইয়ের কাছে ভারতে। গত ৩ এপ্রিল ভিনদেশে থেকেই মারা যান সুকুর মন্ডলের মা রোহতন বিবি।

সুকুর মন্ডল পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মাটিয়ারির বাসিন্দা। কিন্তু ভৌগোলিক দূরত্বের কারণে মায়ের সাথে দুই মেয়ের শেষ দেখাটুকুও না হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মানবিকতায় মায়ের সঙ্গে দুই মেয়ের শেষ দেখা হলো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে।

সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনাটি সামনে আনে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোববার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মাটিয়ারির বাসিন্দা সুকুর মন্ডলের মা রোহতন বিবি মারা যান। কিন্তু সুকুরের দুই বোন থাকেন বাংলাদেশে। দুই বোনের কাছে মায়ের মৃত্যুর খবর পৌঁছালেও বাংলাদেশের বাসিন্দা হওয়ায় তারা ভারতে আসতে পারছিলেন না।

এরপরই স্থানীয় বানপুর এলাকায় বিএসএফ’র ৫৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের চৌকি কোম্পানি কমান্ডারকে বিষয়টি জানান সুকুর মন্ডল। এসময় তিনি মায়ের সঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত দুই বোনের শেষ দেখা করিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সদ্য মা-হারা সুকুরের এই অনুরোধ ফিরিয়ে দিতে পারেনি বিএসএফ।

সুকুরের অনুরোধের বিষয়টিকে মানবিকভাবে দেখার আবেদন জানিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর কাছে আবেদন জানায় বিএসএফ। এমন বার্তায় দ্রুততার সঙ্গে সাড়া দেয় বিজিবি। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহতন বিবির দুই মেয়েকে নিয়ে সীমান্তে হাজির হয় বিজিবি সদস্যরা।

এরপর রোহতন বিবির দুই মেয়েকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে নিয়ে যায় বিজিবি। আর তাতে জিরো লাইনেই প্রয়াত মাকে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ পায় ওই দুই বোন। এসময় সীমান্তবর্তী এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের প্রতি তাদের মানবিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে রোহতন বিবির ছেলে-মেয়েরা।

এ প্রসঙ্গে বিএসএফ’র দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগ কর্মকর্তা সুরজিৎ সিং গুলেরিয়া জানান, ‘আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সীমান্তবাসীর মানসিক ও সামাজিক মূল্যবোধের কথা মাথায় রেখে বিএসএফ তাদের দায়িত্ব পালন করে।’

আরও পড়ুন

×