১৪৪ ধারা ভেঙে ‘দিল্লি চলো’ রোডমার্চ
কৃষকদের ওপর টিয়ারসেল, লাঠিচার্জ, কী চলছে দিল্লিতে?

নয়াদিল্লিতে প্রতিবাদী কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে মঙ্গলবার কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ । ছবি: এপি/ রাজেশ সাচার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১৫:২৩ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১৭:১৮
ফসলের ন্যূনতম দামের নিশ্চয়তা দিতে আইন, কৃষকদের জন্য পেনশন, তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিল ও শস্যবিমার দাবিতে ভারতের হাজার হাজার কৃষক রাস্তায় নেমেছেন। কৃষক আন্দোলন রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে দিল্লি পুলিশ। রোডমার্চ ঠেকাতে রাজধানী দিল্লিকে নিরাপত্তা চাঁদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার থেকে দিল্লিতে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু এলাকায় কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ রোডমার্চ কর্মসূচিতে ড্রোনের সাহায্যে টিয়ার সেল ছুড়েছে পুলিশ। কৃষকরা যাতে ট্রাক্টর, ট্রাক ও ট্রলি নিয়ে সড়কে নামতে না পারে সেজন্য জায়গায় জায়গায় বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। নিষিদ্ধ করা হয়েছে যেকোনো জমায়েত ও সমাবেশ।
তবে এত কিছুর পরেও দমেননি কৃষকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকে আবারও পথে নেমেছেন তারা। তারা বলছেন, অধিকারের বুঝে নিতে এসেছি। আমরা ফসলের ন্যায্য সহায়ক দামের আইনি নিশ্চয়তা, লখিমপুর-খেরিতে মৃত্যু হওয়া ভাইদের ক্ষতিপূরণ এবং ঋণ মকুবের দাবিতে পথে নেমেছি। কৃষকদের পেনশন পাওয়া উচিত। আমরা আমাদের অধিকারের জন্য এসেছি।
ছাড় দেবে না পুলিশ
দিল্লি পুলিশ বলছে, কৃষকদের রোডমার্চ রাজধানীতে প্রবেশের সুযোগই দেওয়া যাবে না। দিল্লি-সোনিপত লাগোয়া সিঙ্ঘু সীমানা পেরিয়ে কৃষকেরা যাতে রাজধানীতে ঢুকতে না পারে সেই দিকে নজর রেখেছে পুলিশ। হরিয়ানা-পাঞ্জাব থেকে কৃষকদের ট্র্যাক্টর দিল্লি ঢোকার আগেই আটকাবে পুলিশ।
বুধবার সকাল থেকেই সিঙ্ঘু সীমানায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গাজিপুর সীমান্তে বহুস্তরীয় ব্যারিকেড তৈরি করেছে পুলিশ। পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘দিল্লি চলো’ রোডমার্চ রুখে দিতে ‘নমনীয় মনোভাব’ দেখানো হবে না। কৃষকেরা যদি আক্রমণাত্মক হয়, তবে তা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
কৃষকদের রুখতে পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানা এবং দিল্লিতে ঢোকার সব প্রবেশপথে ব্যারিকেড ও কাঁটাতার দেওয়া হয়েছে। দিল্লির টিকরি সীমানার দিকে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে যানবাহন চলাচল।
অবরুদ্ধ যান চলাচল
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, দিল্লি-সোনিপত লাগোয়া সিঙ্ঘু ও দিল্লি-বাহাদুরগড় লাগোয়া টিকরি সীমানায় যানবাহন চলাচল অবরুদ্ধ। বহু মানুষ রাস্তাতেয় আটক পড়েছেন।
কৃষকদের রুখতে মরিচগুঁড়ো
কৃষকেরা রণমূর্তি ধারণ করলে তাঁদের আটকাতে মরিচগুঁড়ো ব্যবহার করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। দিল্লি পুলিশের ঘোষণা, কৃষকেরা সীমানা পার করে আসার চেষ্টা করলে আমরা তাদের মোকাবিলা করব। দিল্লির পরিস্থিতি ঠিক রাখতে তাদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হবে।
রেলপথ অবরোধের ডাক
বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবজুড়ে রেল অবরোধের ডাক দিয়েছে কৃষকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান ফার্মার্স ইউনিয়ন (উগ্রাহা)’। দিল্লি যাওয়ার পথে কৃষকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোড়া এবং লাঠিচার্জের প্রতিবাদে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই রেল অবরোধ চলবে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার ‘ভারত বন্ধ’-এর ডাক
কৃষকদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কৃষকদের ‘ভারত বন্ধ’ পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকাইত। তিনি বলেছেন, ‘সরকার কৃষকদের দাবি মেনে না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়া হবে।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, পিটিআই
- বিষয় :
- ভারত
- কৃষক আন্দেলন
- দিল্লি
- লাঠিচার্জ