সিঙ্গাপুরে ভোটগ্রহণ চলছে, সাড়ে ছয় দশক শাসনের পরীক্ষা পিএপির

সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর হাত তুলে অভিবাদন জানান সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং এবং তার স্ত্রী লু জি লুই। ছবি: রয়টার্স
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫ | ২০:০৫
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে অর্থনৈতিক ঝাঁকির মধ্যেই আজ শনিবার সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে সিঙ্গাপুরে। স্বাধীনতার আগে থেকে ক্ষমতায় থাকা পিপল’স অ্যাকশন পার্টি (পিএপি) এবারও নিরঙ্কুশ জয় পাবে বলে ধারণা সবার। তাই আসন নয়, বিশ্লেষকদের নজর ভোটের ব্যবধানের দিকে। দেশটিতে মাত্র ৯ দিনের নির্বাচনী প্রচার অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ভোটের প্রচারে জীবনযাত্রা ব্যয়বৃদ্ধি ও আবাসনের চাহিদাই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। খবর রয়টার্সের
আজ শনিবার ভোটের দিন সকালে ভারি বৃষ্টি হলেও কিছুক্ষণেই মধ্যেই তা থেমে যায়। দুপুরের মধ্যেই প্রায় অর্ধেক ভোটার ভোট দিয়েছেন। সিঙ্গাপুরে মোট ১ হাজার ২৪০টি কেন্দ্রে চলছে ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। সিঙ্গাপুরে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক।
১৯৫৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের প্রতিটি নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে পিএপি। প্রায় প্রতিবারই পার্লামেন্টের ৯০ শতাংশের বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন দলটির প্রার্থীরা। কিন্তু ২০২০ সালের নির্বাচনে সেই ধারায় ছেদ পড়ে। সেবার পিএপির ভোট কমে দাঁড়ায় ৬০ দশমিক ১ শতাংশে, আর বিরোধী ওয়ার্কার্স পার্টি পায় রেকর্ড ১০টি আসন, যা ছিল সিঙ্গাপুরের ইতিহাসে বিরোধীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য, আর পিএপির জন্য সবচেয়ে খারাপ ফলাফল। তাই, এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের প্রথম নির্বাচনে ওয়ং চেষ্টা করছেন সেই ব্যবধান কমাতে।
সিঙ্গাপুরের শাসকদলের বিরুদ্ধে বিরোধী কণ্ঠ দমিয়ে রাখা এবং বিরোধীদলকে নানা কোণঠাসা করে রাখার অভিযোগ রয়েছে। ৫২ বছর বয়সী ওং গত বছর দায়িত্ব নেন দীর্ঘদিনের নেতা লি সিয়েন লুংয়ের কাছ থেকে। এবার তার নেতৃত্বেই ৯৭টি আসনে লড়ছে পিএপি। ওয়ার্কার্স পার্টি লড়ছে মাত্র ২৬ আসনে।
প্রধানমন্ত্রী ওয়ং বোটানিক গার্ডেনসের কাছে একটি কেন্দ্রে দুপুরে ভোট দেন। এর আগে বা পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তিনি।
রয়টার্স লিখেছে, বিশ্বের ব্যয়বহুল শহরগুলোর একটি সিঙ্গাপুরে বর্তমানে ভোটারদের প্রধান উদ্বেগের জায়গা- জীবনযাত্রার ব্যয় ও বাসস্থান সঙ্কট। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের অভিঘাতে বাণিজ্যনির্ভর অর্থনীতিতে অস্থিরতার শঙ্কাও তাদের তাড়া করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পিএপির ভোট কিছুটা কমলেও বড় অঘটনের সম্ভাবনা নেই। তবে তরুণদের মধ্যে বিকল্প কণ্ঠের চাহিদা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ল্যাম পেং ইর বলছেন, পিএপির জনপ্রিয়তায় কিছুটা পতন দেখা যেতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। এবার তা যদি ৫৭ বা ৫৮ শতাংশে নামে, তাতে জনগণ খুব বেশি অবাক হবে না, পিএপিও হবে না।