ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন

৩২ দেশের বৈঠক, আলোচনায় শুধু ট্রাম্প

৩২ দেশের বৈঠক, আলোচনায় শুধু ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫ | ২১:৪০

নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে আগামী মঙ্গলবার শুরু হতে যাচ্ছে দু’দিনব্যাপী ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন। বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ নিরাপত্তা জোটে ৩২ দেশ থাকলেও আলোচনায় কেবল একমাত্র ব্যক্তি– মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

বিবিসির বিশ্লেষণী প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩২টি সদস্য দেশের নেতা ও ডজনখানেক সহযোগী রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন এ সম্মেলনে। কিন্তু সম্মেলনের সময় কমিয়ে করা হয়েছে মাত্র তিন ঘণ্টা। বিবৃতি সংক্ষিপ্ত করে আনা হয়েছে পাঁচ প্যারাগ্রাফে। লক্ষ্য একটাই– মতবিরোধ আড়াল করে ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট রাখা। 

ট্রাম্পের দাবি মেনে ইউরোপীয় মিত্ররাও প্রতিরক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্য ব্যয় বৃদ্ধির ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। জোটের প্রতিটি সম্মেলনে প্রধান লক্ষ্য কিছুটা ‘পূর্বনির্ধারিত’– সংঘবদ্ধতার বার্তা দেওয়া। তবে এবার মূল আলোচনার সূচি অনেকটা নির্ধারণ করেছেন ট্রাম্প নিজেই। তাঁর চাপে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়িয়ে জিডিপির ৫ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার করছে। যদিও জোটের নতুন মহাসচিব মার্ক রুটে আপাতত ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সরাসরি প্রতিরক্ষা এবং ১ দশমিক ৫ শতাংশ পরোক্ষ ব্যয় মিলে মোট ৫ শতাংশের প্রস্তাব দিয়েছেন। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের উপস্থিতি ন্যাটোর ঐক্যের ছবি অনেকাংশে ঢেকে দিচ্ছে। যদিও প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো নিয়ে তাঁর চাপ ইউরোপকে বাস্তব কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বাধ্য করছে। তবে এই ব্যয় বৃদ্ধি আদতে কার্যকর কোনো প্রস্তুতি কিনা, নাকি কেবল মার্কিন চাপের কাছে মাথানত– সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। 

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত কার্ট ভলকার স্বীকার করেছেন, ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন নীতিতে বিভেদ তৈরি হয়েছে। ইউরোপ ইউক্রেনকে নিরাপত্তার মূল অংশ মনে করলেও, ট্রাম্প প্রশাসনের দৃষ্টিতে সেটি গুরুত্বহীন। 

এদিকে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে আয়োজিত এবারের ন্যাটো সম্মেলনকে ঘিরে ডাচ নিরাপত্তা বাহিনী ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করেছে। সম্মেলনের ব্যয় প্রায় ১৮ কোটি ৩৪ লাখ ইউরো। ন্যাটোর ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সম্মেলন এটি। 

নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে শহরটি এখন কার্যত একটি দুর্গে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলায় শহরটির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ‘অরেঞ্জ শিল্ড’ নামক এই বিশাল নিরাপত্তা অভিযানের অংশ হিসেবে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড ও নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। ফলে অনেক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং জনসাধারণের চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। এমনকি, শহরের আকাশেও বিমান চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। 

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় ২৭ হাজার পুলিশ সদস্য এবং ১০ হাজারের বেশি সামরিক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ উত্তর সাগরে টহল দেবে এবং আকাশে টহল দেবে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার। বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল সম্মেলন স্থল এবং আশপাশের এলাকা নিয়মিতভাবে তল্লাশি চালাবে।

আরও পড়ুন

×