ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

কোথাও যাওয়ার পথ নেই আফগান শরণার্থীদের

কোথাও যাওয়ার পথ নেই আফগান শরণার্থীদের

ছবি-সংগৃহীত

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫ | ০২:৩৯

তেহরানের উত্তরাঞ্চলে সেলাইয়ের কাজ করছিলেন ৩৪ বছর বয়সী আফগান নারী শামসি। হঠাৎ ইসরায়েলি হামলা শুরু হলে দৌড়ে ঘরে ফিরে আসেন তিনি। দেখেন, তাঁর ছোট দুই মেয়ে টেবিলের নিচে বসে ভয়ে কাঁপছে। শামসি বলেন, ‘তালেবান থেকে পালিয়ে এসেছিলাম, কিন্তু এখানে এসে মাথার ওপর বোমা পড়ছে।’

শামসি ও তাঁর স্বামী যিনি সাবেক আফগান সেনা অস্থায়ী ভিসায় ইরানে এসেছিলেন। কিন্তু ভিসা নবায়ন করতে না পারায় এখন তারা অনিবন্ধিত শরণার্থী। তালেবানের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ফিরে যেতে পারছেন না আফগানিস্তানেও। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কাজের কোনো সুরক্ষা নেই শামসির। নেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা সাহায্যের সুযোগ। তিনি বলেন, ‘কোনো সাহায্য পাইনি, না ইরানিদের কাছ থেকে, না আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থার কাছ থেকে।’

ইরানে আনুমানিক ৩৫ লাখ আফগান শরণার্থী আছেন। এর মধ্যে ২৬ লাখের বেশিই অনিবন্ধিত। শুধু তেহরানেই ১৫ লাখের মতো আফগান শরণার্থী বসবাস করেন। ১২ দিনের যুদ্ধে তারা ছিলেন একেবারেই অসহায়; না ছিল আশ্রয়, না তথ্য, না সহায়তা।

২২ জুন রাতে এক বিস্ফোরণে শামসিদের অ্যাপার্টমেন্টের জানালা ভেঙে যায়। পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় পাশের একটি ভবন। শামসি বলেন, ‘বাচ্চাদের দরকারি জিনিসপত্র নিয়ে একটা ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছি, যদি হঠাৎ কিছু হয়!’

যুদ্ধবিরতি হলেও ইরানে থাকা আফগান শরণার্থীদের সমস্যার শেষ হয়নি। শামসির  মালিক শহর ছেড়ে পালিয়েছেন, বেতনও দেননি। ‘যখন আমি আমার বেতন চাই, সে বলে, তুমি তো আফগান, চলে যাও!’

ইরানে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত তিন আফগান নিহত হয়েছেন। এমন অবস্থায় ইরানে থাকা আফগান শরণার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত। ইরান ঘোষণা দিয়েছে, ২০ লাখ আফগানকে ফেরত পাঠানো হবে। তবে ১২ দিনের যুদ্ধে সীমান্ত পেরিয়ে ফিরে গেছেন অনেকেই। কিন্তু শামসির মতো অনেকের ফেরা সম্ভব নয়। ‘আমরা নিরাপত্তার জন্য এসেছিলাম’ বলেন তিনি। যদি আবার যুদ্ধ শুরু হয়? ‘তবুও এখানেই থাকব। তালেবানের কাছে ফিরতে পারব না।’ খবর আলজাজিরার।

আরও পড়ুন

×