নিজেকে মৃত ঘোষণা করে সৎকার দাবি করোনা রোগীর!

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ০৭:০৫ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ০৭:২৬
করোনাতঙ্কে কেউ আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন, কেউ বাড়ি থেকে দূরে চলে যেতে চেয়েছেন আবার কেউ ঘুমের মধ্যেও যাতে তার মৃত্যু হয় এমনটাও বলেছেন। অবশ্য এর আগে কখনও করোনা রোগীর মুখে নিজেকে মৃত ঘোষণা করে সৎকারের দাবি করেন নি কেউ। কিন্তু এমনটাই করে বসলেন ৬২ বছর বয়সী এক করোনা রোগী।
‘আমি তো করোনায় মারা গেছি। তোমরা এখনও কেন আমার সৎকার করোনি। শিগগির আমার চোখে তুলসীপাতা দাও। পানি দাও। শুইয়ে দাও। সৎকার করো।’
সকাল সকাল ঘরের এদিক ওদিক ছুটতে ছুটতে চিৎকার করে এমন কথা বারবার বলছিলেন দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া যোধপুর পার্কের ওই বৃদ্ধ। হঠাৎ তার এমন ব্যবহারে হতভম্ব তার স্ত্রী ও মেয়ে।
প্রথম ধাক্কা সামলে তারা যতবার বলছেন যে নবীনবাবু আপনি দিব্য বেঁচে আছেন। তার কোনও সমস্যা নেই। ততই চিৎকার বেড়ে যায়। ফের বলতে থাকেন, ‘তোমরা কেন বুঝতে পারছ না? আমি করোনায় মরে গেছি। এটা মৃতদেহ। তোমরা আমার দেহ সৎকার করে উদ্ধার করো। না হলে তোমাদেরও করোনা হবে।’
অবস্থা বেগদিত দেখে তার স্ত্রী ও মেয়ে ওই বৃদ্ধকে নিয়ে হাজির হন ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রিতে। ইনস্টিটিউটের কর্তা ডা. প্রদীপ সাহাকে পেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে তাকেও একই কথা বলতে থাকেন। বৃদ্ধের একই কথা তিনি করোনায় মারা গেছে। তার দ্রুত সৎকার করতে হবে। ডা. প্রদীপ সাহা ধৈর্য ধরে সব শুনে ওষুধ দেন। এখন তিনি অনেকটাই ভালো। করোনা আতঙ্কে এমনই ঝড় বয়ে যায় ওই পরিবারের উপরে।
গত আট মাসে ইনস্টিটিউট অফ সাইক্রিয়াট্রিতে করোনা সম্পর্কে মানসিক ভীতি বা বিপর্যয় নিয়ে আসা বেশ কিছু কেস স্টাডি করেছেন প্রদীপ সাহা ও তাঁর সহকর্মীরা। কিন্তু নিজেকে বারবার মৃত সাব্যস্ত করার ঘটনা আসেনি। তার ভাষ্য, ‘এটাও এক ধরনের মানসিক সমস্যা। মনোবিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ফোবিড সাইকোসিস। অর্থাৎ কোনও একটি বিষয়ে বারবার ভাবলে একটা আতঙ্ক বা ফোবিয়া তৈরি হয়। সেটাই মানসিক সমস্যার আকার নেয়।”
চিকিৎসকের কথায়, ‘করোনা ভাইরাস নিয়ে বারবার ভাবার ফলে ওই বৃদ্ধের মনে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে এইভাবে।’ সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
- বিষয় :
- করোনা রোগী
- সৎকার
- কলকাতা