ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের হেনস্তার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের হেনস্তার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সোহেল রানা পলাশ। ছবি: সংগৃহীত

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫ | ১৯:৪৫

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সোহেল রানা পলাশের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে রাস্তার কাজে অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে উপজেলার ঘাসিরপাড়া মন্ডলবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

পরে এ সংক্রান্ত ২ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মুহুর্তেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। এতে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠে। এ ঘটনায় রাত ১২টার দিকে বকশীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আল মুজাহিদ বাবু। তিনি দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার বকশীগঞ্জ উপজেলার প্রতিনিধি। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

জানা যায়, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যায়ে বগারচর ইউনিয়নের ঘাসিরপাড়া মন্ডলবাড়ী থেকে সামাদ হাজির বাড়ি পর্যন্ত সিসি রাস্তার কাজ চলছে। নিম্নমানের ইট খোয়া দিয়ে রাস্তাটির কাজ করছেন চেয়ারম্যান- এমন অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। পরে রাস্তার অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহ করতে যান এমদাদুল হক লালন, আল মোজাহিদ বাবু, আমিনুল ইসলাম, বাঁধন মোল্ল্যা ও ইমরান সরকারসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। 

রাস্তার অনিয়মের ভিডিও ধারণকালে মোটরসাইকেলযোগে দ্রুত সেখানে আসেন ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা পলাশ। এসেই তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ শুরু করেন। ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আমার এই রাস্তার কাজের ক্ষতি হলে সাংবাদিকরা জীবন্ত ফিরতে পারবে না।’

হেনস্তার শিকার সাংবাদিক এমদাদুল হক লালন বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে চেয়ারম্যান বাধা দেন। কোনো কথা না শুনেই তিনি আমাদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মারমুখী আচরণ করেন। ক্যামেরা বন্ধ না করলে ভেঙে ফেলা ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। তার বাজে আচরণে আমরা হতভম্ব হয়ে পড়ি। পরে রাতে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’ 

বাঁধন মোল্ল্যা জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পলাশ মারমুখী ছিলেন। উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, ‘ক্যামেরা বন্ধ না করলে কেউ জীবন্ত ফিরতে পারবে না। তার আচরণে আমরা ভয় পেয়ে যাই।’

বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল লতিফ লায়ন বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জুলাই পরবর্তী সময়ে এমন ঘটনা মেনে নেওয়ার মত না। 

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সোহেল রানা পলাশ বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। এজন্য আমি সাংবাদিকদের কাছে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছি। আসলে আমার এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। 

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহম্মেদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

আরও পড়ুন

×