এক পশলা বৃষ্টিতে...

আইশা খান
সাদিয়া মুনমুন
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫ | ১০:৩৯
খর রোদ্দুরে এক পশলা বৃষ্টির মতোই অভিনয়ের ভুবনে আইশা খানের আবির্ভাব। যদিও অভিনেত্রী হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে থেকেই আইশা ছিলেন অনেকের পরিচিত মুখ। উপস্থাপনা আর মডেল হিসেবে নজর কেড়েছিলেন। সময়ের পালাবদলে আইশাকে এখন অভিনেত্রী হিসেবে চেনেন দর্শক। কারণ একটাই, স্বল্পসময়ের ব্যবধানে হরেক রকম চরিত্র পর্দায় তুলে ধরার সুযোগ হয়েছে তাঁর। খুব একটা পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না; মাত্র দুই বছরের কাজের তালিকায় চোখ রাখলেই স্পষ্ট হবে অভিনয়ে কতভাবে নিজেকে ভেঙে নতুনরূপে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ‘বুক পকেটের গল্প’, ‘অভিশাপ’, ‘বাকরখানির প্রেমকথা’, ‘তোমাতে হারাই’, ‘সে প্রথম প্রেম আমার’, ‘মায়াফুল’, ‘নেক্সট ডোর নেইবার’, ‘লাভ ইন দি ইয়ার’, ‘স্বপ্নসিঁড়ি’, ‘মায়াডোর’, ‘বাবার ছায়া’, ‘দূরের দেখা’, ‘ভালোবেসে বন্দি’, ‘সাইলেন্ট লাভ’, ‘ফ্রেঞ্জি’, ‘লস্ট ইন লাভ’, ‘নার্ভাস কাপল’, ‘তোমার মায়ায়’, ‘মেঘ রুদ্রর গল্প’, ‘তুই জীবন’, ‘দহন’, ‘নজর’, ‘প্রতিবেশিনী’, ‘নিরুদ্দেশ’সহ আরও বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করে দর্শক মনোযোগ কেড়ে নিয়েছেন তরুণ এই অভিনেত্রী। তার চেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, ছোটপর্দার গণ্ডিতেই নিজেকে বন্দি রাখেননি আইশা। নির্মাতা বিপ্লব হায়দারের ‘ভয়াল’ সিনেমায় অভিনয় করে এই আভাসও দিয়েছেন, অভিনয় জগতে তিনি সুদূরের যাত্রী; যার সুবাদে ‘ভয়াল’-এর কাজ শেষ হতে না হতেই নির্মাতা সোহেল আরমানের ‘সংবাদ’ এবং প্রসূন রহমানের ‘শেকড়’সহ আরও দুটি সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ হয়েছে। যদিও ‘সংবাদ’ সিনেমার কাজ মাঝে স্থগিত হয়ে গেলেও ‘শেকড়’-এর শুটিং শেষ হয়েছে অনেক আগেই। ‘শেকড়’ সিনেমায় আইশা অভিনয় করেছেন ফাল্গুনী নামে এক তরুণীর চরিত্রে। ফাল্গুনী সেই তরুণীদের যার সখ্য গড়ে উঠেছে সংগীতের সঙ্গে। সে উচ্চাঙ্গসংগীত খুব পছন্দ করে, পাশাপাশি রবীন্দ্রসংগীতের তালিমও নেয়। খুব সাধারণ মেয়ে, অল্পতেই খুশি হয় আবার কষ্টও পায়। এই চরিত্রটি নিয়ে আইশা বলেছিলেন, ‘মুখে শুনে হয়তো ফাল্গুনী চরিত্রটি খুব সাদামাটা মনে হবে, তবে পর্দায় অসাধারণ লাগবে। কারণ, গল্পের ঘটনাবহুল অধ্যায়গুলো তাঁকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা সহজেই দর্শকমনে ছাপ ফেলবে।’ ‘শেকড়’ সিনেমায় অভিনয় নিয়ে এও বলেছিলেন, বেশ কয়েকটি কারণে এই সিনেমার অভিনয় করা; যার অন্যতম কারণ ছিল সিনেমার গল্প ও চরিত্র। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে নির্মাতা প্রসূন রহমান নান্দনিক নির্মাণের বিষয়টি তুলে এনেছিলেন। বলেছিলেন, পর্দায় প্রসূন রহমান তাঁর উপস্থাপনের ভঙ্গি অনেকের চেয়ে আলাদা। এ নির্মাতার ‘সুতপার ঠিকানা’ সিনেমাটি দারুণভাবে মনে আঁচড় কেটেছিল। তাই এমন একজন নির্মাতার কাছে ভিন্ন ধাঁচের একটি গল্পে কাজ করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া সহজ ছিল না। তাঁর এই কথা থেকে স্পষ্ট যে, অভিনয়জীবনে সেই কাজটি করতে চান, যা তাঁর কাছে ব্যতিক্রম এবং দর্শকমনে ছাপ ফেলার মতো মনে হয়। এর প্রমাণও মেলে সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর অভিনীত নাটক ও সিরিজে চোখ রাখলে।
আবার অবাক হতে হয় এটা দেখে যে, তাঁর অনেক কাজ দর্শক প্রশংসা পেলেও এখনও তিনি প্রচারবিমুখ। অন্তর্মুখী স্বভাবটা এখনও ধরে রেখেছেন। কোনো কাজের সমাপ্তি না টানা পর্যন্ত তা নিয়ে মুখ খুলতে চান না। তারকাখ্যাতির মোহে যখন অনেকে দিনরাত ছুটে বেড়াচ্ছেন, তখনও সময়ের আলোচিত তারকা হয়েও খানিকটা চুপচাপ আইশা। কারণ একটাই, নীরবে, নিভৃতে ভালো কিছু কাজ করে যাওয়াই তাঁর লক্ষ্য।
- বিষয় :
- অভিনেত্রী