মুন্না-আসলামদের ভোলেনি কলকাতা

ক্রীড়া প্রতিবেদক, কলকাতা থেকে
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ | ০১:৩৯
ভারতীয়দের কাছে ফুটবলের তীর্থভূমি সল্টলেক স্টেডিয়াম। ক্রিকেটপাগল এই দেশের একটি অঞ্চল ডুবে থাকে ফুটবল উন্মাদনায়, সেই অঞ্চলটি পশ্চিমবঙ্গ। আরেকটু পরিষ্কার করে বললে কলকাতা। এখানেই ঐতিহ্যবাহী দুটি ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল ও মোহনবাগানের লড়াই নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় পুরো ভারত।
ডার্বির লড়াই মানেই যুবভারতী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে গর্জন। ৬৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার মায়াবী সল্টলেকে ফোটে ফুটবলের ফুল। আর নব্বই দশকে এখানেই ফুল হয়ে ফুটেছিলেন প্রয়াত মোনেম মুন্না, শেখ মোহাম্মদ আসলাম, গোলাম গাউস, রিজভী করিম রুমি, রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, কায়সার আহমেদ, ইমতিয়াজ আহমেদ নকীবরা। সেই সময় এ মাঠে এক লাখের ওপর দর্শক ছিল। ভরা গ্যালারিতে মুন্না-আসলামরা দু'পায়ের জাদু দেখাতেন।
ইস্ট বেঙ্গলকে আসলাম-মুন্নারা ট্রফি জিতিয়েছিলেন। শুধু ইস্ট বেঙ্গলই নয়, সেই সময় কলকাতা মোহামেডানে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ৮-৯ জন ফুটবলার খেলেছিলেন। ১৯৯১ ও ১৯৯৩; দুই মৌসুমে ইস্ট বেঙ্গলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন মুন্না। দু'বারই দলকে লিগ ও ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতিয়েছিলেন। সেই মুন্নাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, 'এই উপমহাদেশে মুন্নার মতো দ্বিতীয়জন আর জন্মাবে না। শুধু বাংলাদেশই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের অনন্য বিজ্ঞাপন ছিলেন মুন্না।'
মোনেম মুন্না-আসলামরা অবসর নেওয়ার পর সেই মানের ফুটবলার আর খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ। একমাত্র মামুনুল ইসলাম ২০১৪ সালে আইএসএলে অ্যাথলেটিকো ডি কলকাতার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন; কিন্তু এক ম্যাচও খেলার সুযোগ হয়নি এ মিডফিল্ডারের। বাংলাদেশ ও ভারত মঙ্গলবার রাতে মাঠে নেমেছিল তখন বাংলাদেশের সাবেক তারকা ফুটবলারদের কথাই অনেকের মনে পড়ে গেল। কলকাতার সাংবাদিকরাও যেন সেই স্মৃতিতে ডুব দিলেন।
প্রায় সবার মুখে বাংলাদেশের আসলাম, মুন্না, গাউস, কায়সার হামিদ, সাব্বির, রুমিদের নাম শোনা যায়। দেখা হলেই জানতে চান, তারা কেমন আছেন? প্রশ্ন করেন, মুন্নাকে তোমার বাঁচাতে পারলে না। আসলাম এখন কী করেন? গাউস কোথায়? রুমি, আসলামদের ফোন নম্বরটা কি পাওয়া যাবে? প্রবীণ সাংবাদিক জাফর আলী খান আসলামদের খেলা নিয়ে কত স্মৃতিই না তুলে আনলেন, 'ওই যে দেখছেন ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের মাঠ, সেটি এখনও স্মৃতি ধরে রাখে। আর এই যে দেখছেন সল্টলেকের মাঠ, এটিও বাংলাদেশের ফুটবলারদের জন্য অনেক স্মৃতিময় মাঠ।'
ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব কিছু দিন আগে শতবর্ষ উদযাপন করল। দেবব্রত সরকার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বছরজুড়েই চলবে শতবর্ষ অনুষ্ঠান। ওই ক্লাবে হল অব ফেম রাখা হয়েছে। যেখানে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের অধিনায়কদের ছবি রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মোনেম মুন্না, গাউস, রুমি, আসলামরা লীগ ট্রফি এনে দিলেও ইস্ট বেঙ্গলের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি। এ নিয়ে কোনো জবাব দিতে রাজি নন ক্লাব কর্তারা। তাদের কথা হচ্ছে সামনে আরও অনুষ্ঠান আছে।
- বিষয় :
- খেলা
- ফুটবল
- বাংলাদেশ-ভারত
- কলকাতা