শেষে গোল খাওয়ার দুঃখ ঘুচবে কবে?

ছবি: বাফুফে
সুমন মেহেদী
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ | ০২:৩৯ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ | ০২:৫০
শুধু জয়-পরাজয়ের হিসেব করলে মাঠের লড়াইয়ের গল্পটা পাওয়া যায় না। ম্যাচের ফলাফল মানে কেবল তথ্য। কিন্তু হার-জিতের একটা গল্প আছে। যা থাকে ভেতরে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের বারুদে লড়াইয়ের ওই গল্পটা তাই শুধু ম্যাচের ফল দিয়ে বোঝা যাবে না। সে হোক ফুটবল কিংবা ক্রিকেট।
কলকাতার যুব ভারতীর ম্যাচ নিয়ে ফুটবলে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা ভারতের মুখোমুখি হয়েছে ২৯বার। এর মধ্যে জয় পেয়েছে মাত্র দুই ম্যাচে। এই দুই জয়ও নিকট অতীতের নয়। প্রথম জয় ১৯৯১ সালে সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন কাপে। দ্বিতীয় জয় ১৯৯৯ সালে একই আসরে। বাকি ম্যাচের ১২টিতে সমতা করে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। ভারতের পক্ষে গেছে অন্য ১৫ ম্যাচের ফল। কিন্তু ২-১ কিংবা ১-০ গোলের হার। অথবা ১-১ গোলে ড্রর কিংবা ড্রর পর টাইব্রেকারে বাংলাদেশের পরাজিত হওয়া ম্যাচগুলোর দারুণ উত্তেজনার গল্প মিশে আছে।
মঙ্গলবারের ম্যাচটা তার সর্বশেষ প্রমাণ। পুরো ম্যাচে এগিয়ে থেকে ৮৮ মিনিটে গোল খেয়ে কলকাতা থেকে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সাদ উদ্দিন-জীবনদের। ভারতের মাটিতে ফুটবলে প্রথম জয় বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ জাতীয় দল। অথচ পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত লড়েছে বাংলাদেশ। ভারতের জালে একাধিক গোল করার সুযোগ মিস করেছে। কিন্তু ম্যাচের ফলে লেখা থাকবে ড্র। এ নিয়ে ভারতের বিপক্ষে টান তিন ম্যাচে ড্র করলো বাংলাদেশ। তিন ম্যাচেই জয়ের প্রান্তে ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু শেষটা হয়েছে হৃদয় ভাঙা ড্রতে।
কলকাতায় বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ঠিক আগের প্রীতি ম্যাচটা বাংলাদেশ-ভারত খেলেছে ২০১৪ সালের ৫ মার্চ। ওই ম্যাচেও নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। জয় যখন সময়ের অপেক্ষা ঠিক তখন ম্যাচের যোগ করা সময়ে (৯২ মিনিটে) সুনীল ছেত্রি গোল করে বাংলাদেশের জয় বঞ্চিত করে। অথচ ম্যাচের ১৪ মিনিটে ওই ছেত্রির গোলে পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছিল লাল-সুবজের প্রতিনিধিরা।
তার আগে ২০১৩ সালে ৩ সেপ্টেম্বর সাফের আসরে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-ভারত। ম্যাচের ফলাফল ১-১ গোলের সমতা। কিন্তু ওই ম্যাচেও জয় দেখছিল বাংলাদেশ। দারুণ উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচ গোল শূন্য সমতার দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু ম্যাচের ৮৫ মিনিটে মিশুর গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। গ্যালারি থেকে টিভি পর্দার সামনে থাকা বাংলাদেশ ভক্তরা মাতেন উচ্ছ্বাসে। জয় তখন সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ৯৫ মিনিটে সুনীল ছেত্রি গোল করে দলকে বাঁচান। হৃদয় ভাঙেন বাংলাদেশ ফুটবলার এবং ভক্তদের।
শেষ সময়ে গোল খেয়ে হৃদয় ভাঙার গল্পটা শুধু বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নয়। বরং যারা বয়সভিত্তিক দল থেকে জাতীয় দলে আসছেন বা আসবেন তারাও ভারতের কাছে শেষে হৃদয় ভাঙার গল্পের সঙ্গে পরিচিত। গত ২৯ সেপ্টেম্বর সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শেষ সময় পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে ১-১ গোলে সমতায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ঠিক ৯০ মিনিটে গোল খেয়ে শিরোপা হারায় বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবারও যেমন অনূর্ধ্ব-১৫ নারী সাফে বাংলাদেশের মেয়েরা থিম্পুতে ভারতের কাছে ১-১ গোলে সমতায় থাকার পর টাইব্রেকারে শিরোপা হারিয়েছে। ভারতের বিপক্ষে এই শেষের ধাঁধাঁ মিনবে কবে বাংলাদেশের?
- বিষয় :
- খেলা
- ফুটবল
- বাংলাদেশ-ভারত
- কলকাতা