ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

প্রস্তুতি ম্যাচে নমুনা অপ্রস্তুতের

প্রস্তুতি ম্যাচে নমুনা অপ্রস্তুতের

মোসাদ্দেক হোসেনকে আউট করার চেষ্টায় আফগান উইকেটরক্ষক গুরবাজ। যদিও তাঁর এই চেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি টুইটার

মেলবোর্ন থেকে সেকান্দার আলী

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০

একটা শূন্যতা বিরাজ করছে পুরো দলের মধ্যে। তা হলো রানের শূন্যতা। ব্যাটিংয়ে টি২০-এর ছন্দ নেই। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত চলতে থাকে একই গতিতে। তবে কি তাঁরা ১১ জন ড্রেসিংরুমে ফেরার প্রতিযোগিতা করেন? মনে হতে পারে এটি এক অবান্তর প্রশ্ন। কিন্তু তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মাঠে বসে শেষ পর্যন্ত শ্রীহীন ব্যাটিং দেখার পর এর চেয়ে ভালো চিন্তা পার সমর্থকের পক্ষে করাও কঠিন। এই অবান্তর বিশ্বাসকে মজবুত করে দেবে বাজেভাবে হারের পরও ব্যাটারদের ভ্রুক্ষেপ দেখতে না পেলে। গতকাল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৬২ রানের বড় হারের পরও ড্রেসিংরুমে ক্রিকেটারদের বিকারহীন ঘুরতে দেখা যায় পুরো সময়। এরপর দলীয় প্রতিনিধি হয়ে মোসাদ্দেক হোসেন বলে গেলেন সঠিক পথেই রয়েছে দল। তাঁদের অপেক্ষা শুধু দল হিসেবে পারফর্ম না করার। গা গরমের ম্যাচে যে দলের কাছ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট দেখা যায় না, মূল টুর্নামেন্টে তাদের কাছ থেকে বড় কিছুর আশা করা দিবাস্বপ্নের মতোই।
ক্রিকেট দলীয় খেলা হলেও ফুটবলের মতো নয়। এই খেলায় সমন্বিত পারফরম্যান্স ব্যাটারদের ব্যক্তিগত রান মিলে। সেখানে ৩১ বলে ১৬ রান করা দলের পক্ষে বড় স্কোর করা আদৌ কি সম্ভব? গতকালের গা গরমের ম্যাচে তাই করেছে বাংলাদেশ। ওপেনিং জুটিতে রান নেই। মিডলঅর্ডার বিপর্যস্ত। টেলএন্ড শট খেলতে পারেনি। ফলে আফগানিস্তানের ১৬০ রানের জবাবে দিতে নেমে ৯৮ রানে শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। শ্রীহীন এই ব্যাটিংয়ের সত্যিই কোনো ব্যাখ্যা থাকার কথা নয়। নিয়মের বেড়াজালে আটকা পড়ে মিডিয়ার সামনে আসা মোসাদ্দেককে একটা ব্যাখ্যা দিতে হলো ঠিকই। তাঁর মতে, 'একটা দলের টপঅর্ডার দ্রুত আউট হয়ে গেলে বড় স্কোর করা যায় না। আমরা আজ দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছি। পরের ব্যাটাররাও রান পাননি। এ রকম পরিস্থিতিতে ১৬০ রান তাড়া করা কঠিন হয়ে পড়ে। আফগানদের বিপক্ষে আমরা সেটা পারিনি। তবে আমাদের সবার সম্পর্কটা খুবই ভালো। একটা ক্লিকের অপেক্ষায় রয়েছি। যেদিন দল হিসেবে জ্বলে উঠতে পারব, সেদিন থেকে পুরো দলের চেহারা পাল্টে যাবে।'
বাংলাদেশ টস হেরে বোলিং পায়। অ্যালান বোর্ডার ফিল্ডে বোলাররা ভালো বোলিং করেন। বিশেষ করে পেস বিভাগের সমন্বিত পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। তাসকিন আহমেদের প্রথম ওভারে আগুন ঝরেছে। হাসান মাহমুদ প্রতিদিন প্রমাণ করে যাচ্ছেন অন্য পেসারদের থেকে কেন আলাদা তিনি। চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেছেন কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্যে পা রাখা এ ফাস্ট বোলার। গতি ও নিয়ন্ত্রিত ডেলিভারি দিতে পারদর্শী তাসকিন ৩০ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। বোলিং অ্যাকশন ঠিক করে ম্যাচে ফেরা মুস্তাফিজুর রহমান উইকেট না পেলেও মিতব্যয়ী ছিলেন। তাঁর চার ওভার থেকে ৩০ রান নিতে পেরেছেন নবীরা। বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান ২টি উইকেট পেলেও ছিলেন খরুচে। ৪৬ রান দিয়েছেন তিনি। আফগানিস্তানের ইনিংসে কোনো হাফসেঞ্চুরি না থাকলেও ইমপ্যাক্ট ব্যাটিং দিয়ে শোভন স্কোরে পৌঁছে গেছে। শেষ দিকে নবীর ১৭ বলে করা ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস ব্যবধান গড়ে দেয়। ব্রিসবেনে ছক্কা বৃষ্টি হয়েছে তাঁর ব্যাটে। বাংলাদেশ জবাব দিতে নেমে হোঁচট খায় প্রতি পদে। সাকিবদের কাজ কঠিন করে তোলেন আফগান বোলাররা। যে কারণে ৩৩ বলে করা মোসাদ্দেকের ২৯ রান দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর। এই ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে আরও একবার ব্যর্থ হতে চলেছে কিনা জানতে চাওয়া হলে মোসাদ্দেক বলেছেন, 'আমরা অন্তত দুটি ম্যাচ জেতার আশা করি। সেটা হয়তো সম্ভবও।'

আরও পড়ুন

×